গত কিছুদিন আগে বাংলাদেশকে প্রবলভাবে নাড়িয়ে দেয়া, সবচেয়ে কম বয়েসী ছাত্রদের দ্বারা সংঘটিত ঐতিহাসিক সড়ক নিরাপত্তা আন্দোলনে সরকার সহসা ভড়কে যায়। কোনোভাবেই যখন তা নিয়ন্ত্রণে আসছিল না, তখন কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চরম প্রতিক্রিয়াশীল বক্তব্য ও গুজব ছড়াতে থাকে। অন্যদিকে এটাকে ব্যবহার করে বিএনপি-জামাত ‘সরকার পতনে’ মরণকামড় বসাতে সর্বাত্মক চেষ্টা করে। দেশি-বিদেশি সবধরনের মাধ্যম ব্যবহার করে তারা তৎপরতা চালায়।
এতসব বিশৃঙ্খলার ভেতরে যখন আন্তর্জাকিভাবে পরিচিত বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তিত্ব বিদেশি কোনো মিডিয়ায় সমস্যার গভীরতা বিশ্লেষণ না করে, সমাধানের আন্তরিকতা না দেখিয়ে প্রচলিত প্রতিহিংসামূলক রাজনৈতিক দলগুলোর মতোই উসকানিমূলক বক্তব্য ও সাক্ষাৎকার দেয়, তখন সরকারের পক্ষে ধৈর্য ধরা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। তেমনি ঘটনা ঘটেছে দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা ও আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের ক্ষেত্রে।
ফেসবুক লাইভ ও বিদেশি গণমাধ্যমে দেয়া শহিদুল আলমের বক্তব্য যে সহিংস, উসকানিমূলক, তা বিশেষ কোনো বিশ্লেষণে না গিয়েও বোঝা যায় বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই। তারা বলছেন, বিএনপি-জামাতের বক্তব্যের সঙ্গে এর কোনো পার্থক্য নেই। কিন্তু তবুও দেশের বিশাল একটা শ্রেণির প্রশ্ন, একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অরাজনৈতিক ব্যক্তি ও শিল্পীর সঙ্গে সরকার এমন আচরণ করতে পারে কি না। তা নিয়ে দেশ দর্শন প্রতিবেদক দীর্ঘ অনুসন্ধান করে যা বের করে আনলেন, তা রীতিমতো উদ্বেগজনক!
সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তারা কথা বলতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এবং কোনো দায়ভার না নিয়ে আনঅফিসিয়ালী তারা এ প্রতিবেদককে জানান, শহীদুল আলমের ব্যাপারে আগে থেকেই সরকার সতর্ক ছিল। একাধিক অভিযোগও ছিল তার বিরুদ্ধে। তারা বলছেন, একটা সময় তিনি হয়তোবা সরাসরি কোনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন না। কিন্তু বিশেষ ব্যক্তি-গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থে অহরহই তাকে ব্যবহার করেন। তার পরিচিতি ও গ্রহণযোগ্যতাকে কাজে লাগাতে চেষ্টা করে। একপর্যায়ে তিনি তাদের ফাঁদে পা দিয়েছেন। সুতরাং রাষ্ট্রের সামগ্রিক নিরপত্তার স্বার্থে সরকার এক্ষেত্রে কঠোর হতে বাধ্য।
এদিকে বিশ্লেষকগণ বলছেন, নির্বাচনের আগে সরকার কোনো ধরনের আন্দোলন বিদেশি মিডিয়ায় সরকার-বিরোধী বক্তব্য হজম করতে প্রস্তুত নয়। তাছাড়া বিদেশি সাংবাদিক ও মিডিয়াগুলো বাংলাদেশকে সারা বিশ্বের কাছে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। সুতরাং সরকারের বিরুদ্ধে যে কোনো বক্তব্য-বিবৃতি ও আন্দোলনে আরো সতর্কতা এবং বিচক্ষণতা কাম্য, যা শহিদুল আলমের বক্তব্যে পাওয়া যায়নি।
ক্যাটাগরি: প্রধান খবর
[sharethis-inline-buttons]