রবিবার সকাল ৭:২০, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং

২০৫০ সাল নাগাদ পৃথিবী ও বিজ্ঞান উল্টো পথে হাঁটবে

প্রধান প্রতিবেদক

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির আবিষ্কার-উন্নয়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাস, জবরদখল ও নিত্য নতুন জুলুম অত্যাচারের যতসব অপকৌশল। বাড়ছে ব্যক্তিক একাকিত্ব, হতাশা, জীবনবিমুখ মানসিকতা। বাড়ছে প্রতারণা, তালাক, প্রকাশ্য খুন, ধর্ষণ, আত্মহত্যা ইত্যাদি।

বর্তমান পৃথিবী বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কার ও প্রযুক্তগত উন্নয়নে বিষ্ময়াভিভূত। চোখ এখন মানুষের কপালে। সমাজ, রাজনীতি, ধর্ম, পরিবার ও ব্যক্তির তেমন কিছুই আর অবশিষ্ট নেই, যেখানে বিজ্ঞানের নতুন আবিষ্কার ও আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া লাগেনি। এমনকি মানুষের শুধু ভোগ ও ব্যবহারিক ক্ষেত্রেই নয়, চিন্তা-দর্শন ও জ্ঞানগত ক্ষেত্রেও বিজ্ঞান-প্রযুক্তির সহায়তা ছাড়া সবকিছু যেন মুখ থুবড়ে পড়ে।

এদিকে এসব নিয়ে মানুষের বাড়াবাড়িও সীমা ছাড়িয়ে। মানুষের কল্পনা এখন মহাবিশ্বের অন্যান্য গ্রহ-নক্ষত্রের প্রতি। যে পৃথিবীতে তার জন্ম, বেড়ে ওঠা, চিন্তা ও আবিষ্কার করতে শেখা, সেই পৃথিবীকে সে এখন থোড়াই কেয়ার করে। চোখ-মন এখন মহাজগত পাড়ি দেয়া ও সেখানে বসতি গড়ার প্রতি। কেউ কেউ বলছেন, কাজ প্রায় আশিভাগ ‘এগিয়ে’ গেছে।

অদূর ভবিষ্যতে তীর-তলোয়ারের যুগ আসবে বলেও ধর্মের ভবিষ্যদ্বানী আছে। যদিও তা হয়তো আমরা বুঝতে ভুল করছি, অথবা ধর্মের ধ্বজাধারীরা এর সঠিক উপস্থাপন করতে পারছে না। ধারণা করা হয়, অতীতেও একাধিকবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত আবিষ্কার-উদ্ভাবন আকাশ ছুঁয়েছে। কিন্তু মানুষের পাপ-পঙ্কিলতা এবং আত্মাহঙ্কারের চাপে তা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়ে।

এমনই যখন অবস্থা, তখন মানুষের সুচিন্তা, সুশিক্ষা ও মনুষ্যত্বের কিন্তু বিন্দুমাত্র উন্নতি ঘটেনি। এসবক্ষেত্রে কয়েক হাজার বছর পূর্বের ‘সেই’ অন্ধকার জগতে পড়ে আছে বললেও মারাত্মক ভুল হবে। বরং মানুষের স্বার্থপ্রিয়তা, প্রবৃত্তিপূজা, ভোগপ্রবণতা এবং অমানবিক কার্যকলাপ প্রাগৈতিহাসিক কালকেও হার মানায়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির আবিষ্কার-উন্নয়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাস, জবরদখল ও নিত্য নতুন জুলুম অত্যাচারের যতসব অপকৌশল। বাড়ছে ব্যক্তিক একাকিত্ব, হতাশা, জীবনবিমুখ মানসিকতা। বাড়ছে প্রতারণা, তালাক, প্রকাশ্য খুন, ধর্ষণ, আত্মহত্যা ইত্যাদি।

এসব দেখে পশ্চিমা দেশগুলোতে বাড়ছে ক্রমাগত ধর্মপ্রবণতা। যদিও সেই ধর্মপ্রবণতাগুলো দীর্ঘসময়ের মানসিক ও চিন্তাগত বন্দিত্বের জাল ছিন্ন করতে পারছে না। তবে অনেকেই বিশ্বাস করেন, ধর্মই একদিন আবারো মানুষকে মুক্তি দিবে। কিন্তু ঠিক কখন মুক্তি দিবে, কীভাবে মুক্তি দিবে বা ‘মুক্তি’ আসলে কী ও কেমন- এসবের কিছুই বলতে পারছে না। অনেকে আবার বলছেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে মানুষ আবার পিছিয়ে যাবে। স্বেচ্ছায় ধ্বংস করবে এসব। যখন দেখবে এসব শুধু মানুষের প্রাসঙ্গিক চাহিদার যোগান দিয়ে মূল সমস্যাগুলো কেবল বাড়াচ্ছেই। তাছাড়া একদিকে প্রাসঙ্গিক যোগান দিলে অন্যদিকে বা অন্য অনেক মানুষের প্রাসঙ্গিক সমস্যাও আবার বাড়িয়ে দিচ্ছে।

পশ্চিমা দেশগুলোতে বাড়ছে ক্রমাগত ধর্মপ্রবণতা। যদিও সেই ধর্মপ্রবণতাগুলো দীর্ঘসময়ের মানসিক ও চিন্তাগত বন্দিত্বের জাল ছিন্ন করতে পারছে না। তবে অনেকেই বিশ্বাস করেন, ধর্মই একদিন আবারো মানুষকে মুক্তি দিবে। কিন্তু ঠিক কখন মুক্তি দিবে, কীভাবে মুক্তি দিবে বা ‘মুক্তি’ আসলে কী ও কেমন- এসবের কিছুই বলতে পারছে না।

এই সাংঘর্ষিক বিষয়গুলো নিয়ে দেশ দর্শনের নিজস্ব দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর ধারণা করা হচ্ছে, বিজ্ঞানের এই অগ্রযাত্রা আর খুব বেশিদিন চলবে না। বড়জোর ২০৫০ সাল নাগাদ তা উল্টোপথে যাত্রা করবে। অর্ধেকটা বাধ্য হয়ে, বাকি অর্ধেকটা স্বেচ্ছায়। যখন দেখবে মানুষ আর এসব চায় না। মানুষের প্রকৃত সমস্যা ও প্রশ্নের কোনো দ্রুব সমাধান দেয় না। কিছু মানুষের চিন্তা ও জ্ঞানগত শক্তির আলোকে হয়তো বিশ্বের সামনে মানবতার এবং মানবিকতার প্রকৃত জায়গাগুলো সুস্পষ্ট হবে। অথবা সরাসরি ধর্মের কোনো বৈশিষ্ট্য সামনে আসতে পারে। ইতিহাসে যার একাধিক সাক্ষ্য ও প্রমাণ পাওয়া যায়।

তাছাড়া অদূর ভবিষ্যতে তীর-তলোয়ারের যুগ আসবে বলেও ধর্মের ভবিষ্যদ্বানী আছে। যদিও তা হয়তো আমরা বুঝতে ভুল করছি, অথবা ধর্মের ধ্বজাধারীরা এর সঠিক উপস্থাপন করতে পারছে না। ধারণা করা হয়, অতীতেও একাধিকবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত আবিষ্কার-উদ্ভাবন আকাশ ছুঁয়েছে। কিন্তু মানুষের পাপ-পঙ্কিলতা এবং আত্মাহঙ্কারের চাপে তা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়ে। সেই ভেঙ্গে পড়া ধ্বংসস্তুপ থেকেই বর্তমান বিজ্ঞানও যাত্রা শুরু করেছিল। যা ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি।

ক্যাটাগরি: প্রধান খবর,  শীর্ষ তিন

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply