খুব দ্রুতই হেফাজত নেতাকর্মীদের মুক্তি ও কওমি মাদরাসাগুলো খুলে দেয়া হবে বলে আশা করেন মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী। হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও কেমি মাদরাসাগুলো খুলে দেয়ার দাবি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের কাছে গিয়েছিলেন সংগঠনটির আমির মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী। বৈঠকের পরদিন তিনি বললেন, দাবি পূরণের মৌখিক আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর খিলগাঁও মাখজানুল উলুম মাদ্রাসায় হেফাজতে ইসলামের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে জুনায়েদ বাবুনগরী এসব কথা বলেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
এই বৈঠকে হেফাজতের মহাসচিব নুরুল ইসলাম জেহাদি, জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, নায়েবে আমির আবদুল আওয়াল, প্রচার সম্পাদক মুহিউদ্দীন রাব্বানী, আবদুল কাইয়ুম সুবহানী ও জহুরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসে রাতে কয়েকজন সহকর্মীকে নিয়ে ধানমন্ডিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় যান হেফাজত আমির বাবুনগরী। প্রায় দুই ঘণ্টা পর মন্ত্রীর বাসা থেকে বের হন তাঁরা। বেরিয়ে যাওয়ার সময় উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরা কথা বলার চেষ্টা করলেও হেফাজত নেতারা কোনো কথা বলেননি।
হেফাজত নেতাদের বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন জুনায়েদ বাবুনগরী। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত কোনো কারণে নয়, জাতীয় স্বার্থে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে।
জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, ‘বৈঠকে আমরা আলেম–ওলামাদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, গ্রেপ্তার ও হয়রানি বন্ধ এবং কওমি মাদ্রাসাগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের দাবিদাওয়াগুলো মেনে নেওয়ার মৌখিক আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা আশা করছি, সরকার দ্রুত আমাদের দাবিগুলো মেনে আলেম-ওলামাদের মুক্তি দেবে।
হেফাজতের আমির বলেন, ‘সারা দেশে বহু নিরীহ আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা কারাগারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বৈঠকে আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বিষয়গুলো তুলে ধরেছি। আমরা জানিয়েছি, হেফাজতের বিরুদ্ধে কথিত যে সহিংসতার অভিযোগ করা হচ্ছে, তা সঠিক নয়। হেফাজতের কোনো নেতা-কর্মী সহিংসতার সঙ্গে যুক্ত ছিল না। কিছু দুষ্কৃতকারী হেফাজতের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করেছে। তাদের খুঁজে বের করা দরকার। নিরীহ আলেম-ওলামাদের এসবের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।
উল্লেখ্য, গত মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের বিরোধিতাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ ও সহিংস ঘটনার পর হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয় সরকার। সংগঠনের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীসহ প্রায় অর্ধশত নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধরপাকড়ের মধ্যে সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে একপর্যায়ে হেফাজতের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। পরে গ্রেপ্তার নেতাদের বাদ দিয়ে হেফাজতের নতুন কমিটি গঠন করা হয়।
ক্যাটাগরি: প্রধান খবর, শীর্ষ তিন
[sharethis-inline-buttons]