আমরা যারা লেখক-সাংবাদিক, অর্থবহ পরিবর্তনের লক্ষ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কলম হাতে নিয়েছি, আমাদের কড়া সতর্ক থাকতে হবে যেন ব্যক্তিগত স্বার্থ ও ঈর্ষা-ক্ষোভে জড়িয়ে না পড়ি। এতে করে লেখালেখি ও সাংবাদিকতার সামগ্রিক জায়গাটি প্রশ্নবিদ্ধ হবে। সমাজের আর দশজন মানুষের চেয়ে আমাদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক আচরণ উন্নততর হতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) রাত দশটার দিকে সাংবাদিক সুবর্ণা নদী তার পাবনার বাসায় দুর্বৃত্তদের হামলায় মর্মান্তিকভাবে নিহত হন। আমরা তার এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ ও বিচারের দাবি জানাই। শুধু সাংবাদিক বলে নয়, এ ধরনের যে কোনো হত্যাকাণ্ডই চরম ঘৃণাব্যঞ্জক ও দণ্ডনীয় অপরাধ। বিশেষ করে সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে বিষয়টি আরো স্পর্শকাতর। বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশের সামগ্রিক সুশাসনের অভাব এবং ধারাবাহিক বিচারহীনতার সংস্কৃতিই একের পর এক আমাদের এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি করছে।
অন্যদিকে, আমরা যারা লেখক ও সাংবাদিক, অর্থবহ পরিবর্তনের লক্ষ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কলম হাতে নিয়েছি, আমাদের কড়া সতর্ক থাকতে হবে যেন ব্যক্তিগত স্বার্থ ও ঈর্ষা-ক্ষোভে জড়িয়ে না পড়ি। এতে করে লেখালেখি ও সাংবাদিকতার সামগ্রিক জায়গাটি প্রশ্নবিদ্ধ হবে। সমাজের আর দশজন মানুষের চেয়ে আমাদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক আচরণ উন্নততর হতে হবে। সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে লড়াই করতে আরো গভীর ও দূরবর্তী জায়গাগুলোও চিহ্নিত করতে হবে।
আমরা ইতোমধ্যেই দেখেছি, যে কোনো হত্যাকাণ্ডের নিয়মমাফিক প্রতিবাদ ও বিচারের দাবি বর্তমানে কোনোই ফল বয়ে আনছে না। কারণ আমাদের শিক্ষা ও শিক্ষাব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়েছে। যে শিক্ষা ও শিক্ষাব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার কথা নীতিবান সাংবাদিক, লেখক, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী; সে শিক্ষাব্যবস্থা এখন সম্পূর্ণই দুর্নীতিবাজ ও অথর্বদের দখলে। সুতরাং লেখনী ও প্রতিবাদে আমাদের আরো কৌশলী হওয়া কাম্য।
উল্লেখ্য, সাংবাদিক সুবর্ণা নদী (৩২) ‘দৈনিক জাগ্রত বাংলার’ সম্পাদক ও প্রকাশক এবং বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আনন্দ টিভির পাবনা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। জেলা শহরের রাধানগর আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে তার বাসা।
-দেশ দর্শন সম্পাদক প্যানেল
ক্যাটাগরি: সম্পাদকীয়, সম্পাদকের বাছাই
[sharethis-inline-buttons]