একজন বিশেষ জনপ্রিয় প্রার্থীকে বেশ কয়েকটি টেলিভিশন টক-শোতে একজন উপস্থাপিকা/মডারেটর ব্যক্তিগত অাক্রমণ করে প্রশ্ন করছে। বিশেষ বলেছি, তারও যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সেই উপস্থাপিকা উনার অনুষ্ঠানের অামন্ত্রিত অতিথিকে এভাবে অাক্রমণাত্মক প্রশ্ন করে মনে হয় উপস্থাপিকা নিজেকেই খাটো করেছে।
অাসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলমত নির্বিশেষে প্রার্থীরা মনোনয়ন ফরম কিনছে। অনেকেই অাবার নিছক মজা করেই মনোনয়ন ফরম কেনার অাগ্রহ প্রকাশ করে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছে। বলছে, ‘ভাবছি, একটা নমিনেশন ফরম কিনলে কেমন হয়?’ নিছক মজা করেই হোক আর সত্যিকারেই রাজনীতিতে নাম লেখানোর উদ্দেশ্যেই হোক, বাংলাদেশের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে এবং সংসদ সদস্য বা এমপি নির্বাচিত হবার অাগ্রহ প্রকাশ করা সংবিধানে বাধা নেই।
সংবিধানের ৬৬ (১) ও (২) অনুচ্ছেদে সংসদ সদস্যপদের যোগ্যতা-অযোগ্যতার মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয়েছে। সংবিধানের ৬৬ নং অনুচ্ছেদ অনুসারে- কোনো ব্যক্তি সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য সর্বপ্রথম তাকে বাংলাদেশর নাগরিক হতে হবে এবং জাতীয় পরিচয়পত্র অনুসারে তার বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হতে হবে। বিস্তারিত
বিগত সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-তে কমপক্ষে ৩ বছরের দলীয় সদস্য পদ রাখার বিধান যোগ করা হয়। ওই বিধান অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তিকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে হলে তাকে ওই দলের সদস্য হিসেবে কমপক্ষে ৩ বছর কাটাতে হবে। বিলটি কার্যকরী হলে নির্বাচনের আগে সুযোগ সন্ধানী আমলা, ব্যবসায়ীসহ অন্যরা হঠাৎ করে এমপি বনে যাবার সুযোগ থাকতো না। এমনকি নিবার্চন পূর্বমুহূর্তে দল বদল অর্থাৎ ডিগবাজি, টাকার বিনিময়ে দলের মনোনয়ন নেয়ার সুযোগ বন্ধ হতো। এতে করে দুর্নীতি কিছুটা কমে অাসতো।
এখন অাসি, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একজন নিজেকে জনপ্রিয় নায়ক দাবী করে জনগণকে সেবা করার উদ্দেশ্যে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) থেকে নমিনেশন ফরম নিয়েছে। ফলশ্রুতিতে উনাকে নিয়েই চলছে বিতর্ক। এই বিশেষ জনপ্রিয় প্রার্থীকে বেশ কয়েকটি টেলিভিশন টক-শোতে একজন উপস্থাপিকা/মডারেটর ব্যক্তিগত অাক্রমণ করে প্রশ্ন করছে। বিশেষ বলেছি, তারও যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সেই উপস্থাপিকা উনার অনুষ্ঠানের অামন্ত্রিত অতিথিকে এভাবে অাক্রমণাত্মক প্রশ্ন করে মনে হয় উপস্থাপিকা নিজেকেই খাটো করেছে। তেমনি সেই প্রার্থীও জাতীয় সংসদ সদস্যদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ Youtube এ দাতভাঙ্গা জবাব নামে ভাইরাল হয়েছে।
ওই বিধান অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তিকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে হলে তাকে ওই দলের সদস্য হিসেবে কমপক্ষে ৩ বছর কাটাতে হবে। বিলটি কার্যকরী হলে নির্বাচনের আগে সুযোগ সন্ধানী আমলা, ব্যবসায়ীসহ অন্যরা হঠাৎ করে এমপি বনে যাবার সুযোগ থাকতো না। এমনকি নিবার্চন পূর্বমুহূর্তে দল বদল অর্থাৎ ডিগবাজি, টাকার বিনিময়ে দলের মনোনয়ন নেয়ার সুযোগ বন্ধ হতো। এতে করে দুর্নীতি কিছুটা কমে অাসতো।
তিনি অারো বলেন, অামার জনপ্রিয়তা যদি না থাকতো তাহলে অামাকে নিয়ে এতো মাতামাতি হতো না এবং যারা অামাকে নিয়ে হাসাহাসি করে ট্রল (Troll) করছে ,তারা অাসলে কোনো কিছু পারে না। অারেক টক-শোতে সুশাসনের জন্যে নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হচ্ছে, উনার প্রার্থীতা গণতন্ত্রের জন্যে সুখবর নাকি লজ্জাসকর!
অামি সে প্রার্থীকে দুটি পয়েন্টের অালোকে মূল্যায়ন করতে চাই। এক. তাঁর অাঞ্চলিক ভাষায় কোনো রকম উত্তেজিত না হয়ে সাবলিলভাবে প্রশ্নের জবাব দেয়ার ক্ষমতা। দুই. স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত যারা সংসদ সদস্য হয়েছে, তাদের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই তিনি ভোটে দাঁড়িয়েছেন, যেটা উনার বক্তব্যে প্রকাশ পেয়েছে। এছাড়া অামার কাছে মনে হয়েছে, এ ভদ্র প্রার্থী নমিনেশন নেয়ার মাধ্যমে রাজনীতিবিদ ও ভোটারদের সাথে এক রকম Prank করেছে।
এখন দেখার বিষয় হলো, জাতীয় পার্টি (এরশাদ) উনাকে চূড়ান্ত নমিনেশন দেয় কি না, তারপর জনগণ উনাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে জাতীয় সংসদে পাঠাবে কিনা! পরিশেষে বলছি, উনি তথাকথিত অযোগ্য হলে উনাকে মিডিয়ায় ডেকে এনে অপমান করা হচ্ছে নাকি উনাকে অারো জনসম্মুখে অানা হচ্ছে? উনি যদি ফানি (funny) টাইপ মানুষ হয়ে থাকেন, তাহলে তাকে তাঁর মতো ফানি লাইফ (life) লিড করতে দিলেই চলে।
মোদ্দা কথা, নির্বাচন কমিশন উনাকে অাইনের মানদণ্ডে বিচার করবে যোগ্য কি না। অার না হয় অারপিও সংশোধন করে যোগ্যতার নতুন মাপকাঠি দাঁড় করাবে।
ফারহান অাহমেদ ফুয়াদ
২১ নভেম্বর, ২০১৮
ক্যাটাগরি: প্রধান কলাম
[sharethis-inline-buttons]