শুক্রবার সকাল ৬:৩২, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং

মুসলমানদের দুর্দশার প্রকৃত কারণ

জাকির মাহদিন

এরা জিহাদের সময়, শর্ত, উদ্দেশ্য এবং সর্বোপরি জিহাদ ও যুদ্ধের পার্থক্য মানবজাতির সামনে তুলে ধরতে পারছে না। বরং জিহাদ নিয়ে বলতে গিয়ে বারবার সাম্প্রদায়িক ও সংকীর্ণ মনোভাবের পরিচয় দিচ্ছে, আবেগতাড়িত হচ্ছে, সাধারণ মানুষের প্রবৃত্তিাজত চোখ দিয়ে জীবনকে দেখছে।

জিহাদ ছেড়ে দেয়া নয় বরং জ্ঞান ও ‘সর্বোচ্চ ত্যাগ’ করে বেঁচে থাকার পথ ছেড়ে দেয়াই মুসলমানদের চরম দুঃখ-দুর্দশার কারণ। আজকের মুসলিম শাসক ও মুসলমানদের চিন্তা ও জ্ঞানের দুর্বলতা এতই প্রকট যে, ‘জিহাদের’ সংজ্ঞা, শর্ত ও মূল উদ্দেশ্য বোঝারও সামর্থ্য প্রকাশিত নয়। তাই শুধু নামধারী আবেগপ্রবণ সাধারণ মুসলমানরাই নয়, আলেম-মুফতি হিসেবে পরিচিত বড় বড় ব্যক্তিত্ব, ইসলামি স্কলার, এরদোগান-মাহাথিরের মতো মুসলিম শাসকরাও জিহাদ নিয়ে চরম বিভ্রান্তিতে আছে, বিশ্বে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং পরিস্থিতি উত্তপ্ত করছে বলে আমি মনে করি।

এরা জিহাদের সময়, শর্ত, উদ্দেশ্য এবং সর্বোপরি জিহাদ ও যুদ্ধের পার্থক্য মানবজাতির সামনে তুলে ধরতে পারছে না। বরং জিহাদ নিয়ে বলতে গিয়ে বারবার সাম্প্রদায়িক ও সংকীর্ণ মনোভাবের পরিচয় দিচ্ছে, আবেগতাড়িত হচ্ছে, সাধারণ মানুষের প্রবৃত্তিাজত চোখ দিয়ে জীবনকে দেখছে।

উচ্চশিক্ষিতরা সমাজ-রাষ্ট্রের ভারি বোঝা

অন্যান্য সমস্ত ধর্ম, সম্প্রদায় এবং গোষ্ঠীর লোকেরা নিজ নিজ ধর্ম-সম্প্রদায়-গোষ্ঠীর স্বার্থেই সবকিছু করে। আর একমাত্র মুসলমানরাই সমস্ত মানবজাতির স্বার্থে সবকিছু করে এবং সর্বক্ষেত্রে নিজেদের স্বার্থটা ছোট করে দেখে। এটাই অন্যান্য ধর্ম, মতবাদ এবং সম্প্রদায়ের সাথে মুসলমানদের পার্থক্য। যখন মুসলমানরা এমনটার পরিচয় ও প্রমাণ রাখতে পারবে না, তখন মুসলমানদের চেয়ে দুর্ভাগা ও দুর্দশাগ্রস্ত জাতি দ্বিতীয় কেউ হবে না।

অন্যান্য সমস্ত ধর্ম, সম্প্রদায় এবং গোষ্ঠীর লোকেরা নিজ নিজ ধর্ম-সম্প্রদায়-গোষ্ঠীর স্বার্থেই সবকিছু করে। আর একমাত্র মুসলমানরাই সমস্ত মানবজাতির স্বার্থে সবকিছু করে এবং সর্বক্ষেত্রে নিজেদের স্বার্থটা ছোট করে দেখে।

জিহাদের অনেকগুলো বৈশিষ্ট্যের একটা হচ্ছে, এটা অনেকটা রাষ্ট্রীয় পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর মতো। এটা রাষ্ট্রের সংবিধান ও মৌলিক নীতি মেনে পরিচালিত হতে হবে। যে কেউ চাইলেই জিহাদের নামে তলোয়ার হাতে নিতে পারবে না। গুলি বা বোমা মারতে পারবে না।

আরো পড়ুন- নষ্ট শিক্ষা পারমাণবিক বোমার চেয়েও ভয়ঙ্কর

আরেকটি কথা, চিন্তা এবং জ্ঞানের পথ ছেড়ে দিলে মুসলমানরা নিজেদের মধ্যেই দলাদলি এবং মারামারির কোনো কূল-কিনারা করতে পারবে না। এমতাবস্থায় রাষ্ট্রক্ষমতা পেলে তারা একটি রাষ্ট্রকে সাক্ষাৎ-দোযখ বানিয়ে ফেলবে। কারণ ধর্মের সঠিক শিক্ষা না পেলে ধর্মের নামে আবেগ, অন্ধত্ব, মূর্খতা ইত্যাদি বড়ই মারাত্মক। এ কারণে পৃথিবীর বহু বড় বড় পণ্ডিত, চিন্তাশীল ও মানবতাবাদী ব্যক্তি ধর্মে বিশ্বাস করেন না, করতে পারেন না। ধর্মে তাদের আস্থার জায়গাটি আমরাই নষ্ট করে দিচ্ছি।

জাকির মাহদিন : শিক্ষক, কলামিস্ট

ক্যাটাগরি: মিনি কলাম

ট্যাগ: জাকির মাহদিন,  সম্পাদকের মিনি কলাম

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply