জীবনে না পাওয়ার হতাশা আছে। কিন্তু বন্ধু হিসেবে একজন মাকে প্রাপ্তি তারচেয়েও হাজারগুণ তৃপ্তিদায়ক।
আমার আম্মুকে বুঝার জন্য একটা ঘটনাই যথেষ্ট। অনার্সে পেলাম ইকোনোমিক্স। প্রথম প্রথম ক্লাশে হা হয়ে থাকতাম। স্যার-ম্যামদের লেকচার মাথার উপর দিয়ে যেতো। সিদ্ধান্ত নিলাম বিভাগ পরিবর্তনের। স্বাভাবিকভাবে পরিবারকে বললে মেনে নিবে না। সাহস করে নিজেই করে ফেললাম। ১৪ দিন পর ভয়ে ভয়ে আম্মুকে জানালাম। আম্মুর সহজ স্বাভাবিক কথা, ‘যদি তুমি পড়ে মজা না পাও, কি দরকার!’ আব্বুকেও জানিয়েছিলাম, ফলাফল ১৭ দিন কথা বলা বন্ধ। মামা জেনেছিল আরো ৩ বছর পর!
এইচএসসির রেজাল্ট দেওয়ার কিছুক্ষণ আগে অস্থির হয়ে গিয়েছিলাম। কী হবে! কী হবে!! আম্মু বললেন, ‘তুই পাশ করবি এ ব্যাপারে কনফিডেন্স আছে?’
– আরে, পাশ নিয়ে তো চিন্তা না!
– তাহলে অস্থিরতা থামা। পাশ করলেই হবে।
আমার আত্মবিশ্বাসের জায়গাটাই তিনি। তিনি আমার শুধু মা নন, একজন উত্তম বন্ধুও। জীবনের ঘাত-প্রতিঘাতে কত তাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছি! ওই কান্নাটুকুই শেষ। এরপর কি এক মন্ত্রবলে তিনি আমার সমস্ত বেদনা শুষে নিয়ে হালকা করে দিতেন!
আম্মুকে নিয়ে এমন ভুরি ভুরি গল্প আছে। যেখানে তিনি মাটির সাথে মিশে যাওয়ার সময়ও স্রেফ হাত ধরে টেনে তুলে বলেছেন ‘আরে ধুর, এতে কি হয়!’
আমার আত্মবিশ্বাসের জায়গাটাই তিনি। তিনি আমার শুধু মা নন, একজন উত্তম বন্ধুও। জীবনের ঘাত-প্রতিঘাতে কত তাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছি! ওই কান্নাটুকুই শেষ। এরপর কি এক মন্ত্রবলে তিনি আমার সমস্ত বেদনা শুষে নিয়ে হালকা করে দিতেন!
সমাজ বলে মেয়ে বড় হলেই বিয়ে দিতে হয়। আম্মু বলেন, আগে শিক্ষা, আত্মনির্ভরশীল দৃষ্টি, স্বনির্ভরতা, চিন্তার বিকাশ। রক্তসম্পর্কহীন অন্য একটি পরিবারে মাথা উঁচু করে প্রবেশ করার আগে টিকেট কমফার্ম করো।
জীবনে না পাওয়ার হতাশা আছে। কিন্তু বন্ধু হিসেবে একজন মাকে প্রাপ্তি তারচেয়েও হাজারগুণ তৃপ্তিদায়ক।
ক্যাটাগরি: মিনি কলাম
[sharethis-inline-buttons]