ভোগবাদী মিডিয়ার বিভ্রান্তিমূলক নিউজের কারণে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। মানুষ কী করবে, ভেবে পাচ্ছে না। এমন সংকটময় মুহূর্তে আপনারা পাশে থাকুন। মানুষকে সাহস যোগান।
মরণব্যাধী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় ১৮ মার্চ থেকে দেশের সকল সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মার্চের ৩১ তারিখ পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।
এদিকে কওমী মাদরাসা বন্ধ ঘোষণা করা হবে কি না, তা নিয়ে আজ কয়েক দফায় মিটিংয়ে বসেছেন বেফাক নেতৃবৃন্দ। এ ব্যাপারে আগমীকাল সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানিয়েছে বেফাকসহ কওমি মাদরাসা গুলোর সমন্বিত শিক্ষাবোর্ড। ধারণা করা হচ্ছে, বন্ধের ঘোষণাই আসবে। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি মাদরাসা বন্ধ নয়, এখন খোলা রাখার সময়।
সরকার এবং তার আমলারা করোনা ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে সবকিছু বন্ধ করে দিতে পারেন। এটা একটা স্বাভাবিক বিষয়। কারণ তারা সারাজীবন যে শিক্ষা পেয়ে এসেছেন, তাতে তারা ভোগবাদিতা শিখেছেন, মানুষকে শোষণ-নীপিড়ন, দেশের সম্পদ লুটপাট করা শিখেছেন। তারা শিখেননি বিপর্যয়, মহামারি কীভাবে কাটিয়ে উঠতে হয়, কীভাবে আতঙ্ক থেকে মুক্ত থাকতে হয়, মহামারিতে আক্রান্ত হওয়া থেকে বাঁচতে কার কাছে ধর্ণা দিতে হয়।
আরো পড়ুন> করোনা নয়, এ যেন করুণা
কিন্তু মাদরাসাওয়ালারাও যদি করোনা ভীতিতে ভীত হয়ে তাদের মতই সবকিছু বন্ধ করে দিয়ে হাত-পা গুটিয়ে ঘরে বসে থাকেন- তাহলে তাদের মধ্যে আর আপনাদের মধ্যে পার্থক্য থাকলো কী? তাদের বিশ্বাস আর আপনাদের বিশ্বাসের মধ্যে অমিল থাকলো কোথায়?
মাদরাসা বন্ধ না করে এই সংকটময় সময়কে দাওয়াতের উপযুক্ত সময় মনে করুন।আল্লহর উপর বিশ্বাস রাখুন। করোনার জন্মস্থান চীনে একজন বিশ্বাসীও আক্রান্ত হয়নি বলে জানা গেছে।
যে করোনা সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে, সে করোনা কি ঘরে পৌঁছতে পারবে না? কারো ভাগ্যে যদি করোনা থেকেই থাকে, সে কি ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকলেই বাঁচতে পারবে?
ভোগবাদী মিডিয়ার বিভ্রান্তিমূলক নিউজের কারণে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। মানুষ কী করবে, ভেবে পাচ্ছে না। এমন সংকটময় মুহূর্তে আপনারা পাশে থাকুন। মানুষকে সাহস যোগান। সঠিক পথে ফিরে আসার আহ্বান জানান। অন্যায়,অপকর্ম, দুর্নীতি, সুদ,ঘুষ, চাঁদাবাজী,যিনা- ব্যভিচার, হারাম থেকে বেঁচে থাকার দাওয়াত সর্বত্র ছড়িয়ে দিন। এতে আপনাদের, মাদরাসার, সর্বপরি ইসলামের ভাবমূর্তী উজ্জ্বল হবে।
মাদরাসা বন্ধ না করে এই সংকটময় সময়কে দাওয়াতের উপযুক্ত সময় মনে করুন।আল্লহর উপর বিশ্বাস রাখুন। করোনার জন্মস্থান চীনে একজন বিশ্বাসীও আক্রান্ত হয়নি বলে জানা গেছে। করোনা আপনাদের কপালে না থাকলে আপনারা আক্রান্ত হবেন না। আর থাকলে ঘরে বসে থেকেও তা থেকে রেহাই পারবেন না। তবে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। আর সতর্ক থাকা মানেই ঘরবন্দি হয়ে যাওয় নয়।
অতএব, মারা গেলেও শ্রেষ্ঠজীব মানুসের সেবায় নিয়োজিত থেকেই মরুন। কারণ, আপনাদের সারাজীবনের উদ্দেশ্যই তো মানবকল্যাণে কাজ করা!
জুনায়েদ আহমেদ: সংবাদকর্মী
ক্যাটাগরি: মিনি কলাম
[sharethis-inline-buttons]