ড. কামালের নেতৃতত্বে অল্প সময়ের মধ্যে বিএনপি অমন ঘুরে দাঁড়াবে এবং নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের শক্তি অর্জন করে ফেলবে তা কেউ ভাবতেও পারেনি। তারপরও আওয়ামী লীগ এবং সরকার সবরকম চেষ্টা করে যাচ্ছে বিএনপি বা ঐক্যফ্রন্টকে ঠেকানোর। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সরকারের প্রতিটা পদক্ষেপই বুমেরাং হয়ে দেখা দিচ্ছে।
আগামী কাল ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকেন্দ্রীক নবগঠিত রাজনৈতিক জোট ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের’ কাছে গোহারাভাবে পরাজয়ের শঙ্কায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এদের অনেকেই নির্বাচনের আগেই দেশ ছেড়ে পালাতে পারে বলে মনে করায় অনেকের পাসপোর্টও কেন্দ্রীয় অফিসেেআটকে রাখা হয়েছে বলে জানা যায়। কারণ ফলাফল যাই হোক, নির্বাচনের আগে দেশ ছাড়লে নিশ্চিত পরাজয়।
এ পরাজয়ের শঙ্কা থেকেই সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তার বিভিন্ন বক্তব্যে তালগোল পাকিয়ে ফেলছেন। একেক সময় একেক রকম কথা বলছেন। কেউ কেউ তাকে হু. মো. এরশাদের ডিজিটাল ভার্সন বলছেন। আবার কেউ বলছেন ‘এরশাদের আওয়ামী ভার্সন’। এরশাদের মতোই যুবতী ও নারীদের সঙ্গে তার ঘষাঘষির অনেক ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই ভাইরাল হতে দেখা যায়।
শুধু ওবায়দুল কাদেরই নন, অনেকেই টকশো এবং বিভিন্ন বক্তব্যে আবোল-তাবোল বলে চরম বিতর্কের মুখে পড়ছেন, যা আওয়ামী লীগকে আরো বিপাকে ফেলছে। কিছুদিন আগে আওয়ামী লীগের একজন মহিলা টকশোয় ‘ব্লা্উজ বিতর্কে’ জড়িয়ে যান। ওবায়দুল কাদের জড়ান ‘বিউটি পার্লার’ বিতর্কে’। আর স্বয়ং শেখ হাসিনা মোবাইল বিতর্কে জড়ান অনেক আগেই। এসব নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রলের হুলস্থুল পড়ে যায়।
এদিকে ড. কামালের নেতৃতত্বে অল্প সময়ের মধ্যে বিএনপি অমন ঘুরে দাঁড়াবে এবং নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের শক্তি অর্জন করে ফেলবে তা কেউ ভাবতেও পারেনি। তারপরও আওয়ামী লীগ এবং সরকার সবরকম চেষ্টা করে যাচ্ছে বিএনপি বা ঐক্যফ্রন্টকে ঠেকানোর। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সরকারের প্রতিটা পদক্ষেপই বুমেরাং হয়ে দেখা দিচ্ছে।
বেগম খালেদা জিয়ার বন্দিত্ব যেন দেশের সাধারণ মানুষকে আরো বেশি কাছে টানছে। মনে হচ্ছে, সাধারণ মানুষের কাছে খালেদা জিয়ার শক্তি জেলের বাইরে থেকে ভেতরেই বেশি।
থ্রিজি-ফোরজি আচমকা বন্ধ, সরকার বিপাকে। গণগ্রেফতার, সরকার বিপাকে। বিএনপির অনেকের প্রার্থীতা বাতিল, স্বয়ং প্রার্থীকে আঘাত-আটক, সরকার বিপাকে। এভাবে প্রতিটা পদক্ষেপই যেন বিএনপিকে নতুন করে শক্তি যোগাচ্ছে। বিশেষ করে বেগম খালেদা জিয়ার বন্দিত্ব যেন দেশের সাধারণ মানুষকে আরো বেশি কাছে টানছে। মনে হচ্ছে, সাধারণ মানুষের কাছে খালেদা জিয়ার শক্তি জেলের বাইরে থেকে ভেতরেই বেশি। অবশ্য এর যথেষ্ট কারণও আছে। বিশ্লেষকগণ বলছেন, মানুষের মনুষ্যত্বের উন্নয়ন ও নিরপেক্ষ-নিঃসার্থ চিন্তা-চেতনার গঠন ছাড়া বস্তুগত যত উন্নয়নই করা হোক, অন্তত এ উপমহাদেশের মানুষ তা মেনে নেয় না। কারণ এ উপমহাদেশের মানুষের কাছে এখনো মানসিক এবং আত্মিক সত্তা প্রবল।
আবার বিরোধী পক্ষকে যৌক্তিভাবে মোকাবেলা করা ছাড়া অতিরিক্ত দমন-পীড়ন, নির্যাতন ইত্যাদিও রাজনৈতিক বিরোধী দলের শক্তি ক্ষমতা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাড়িয়ে দেয় বলে তারা বলছেন। তারা আরো বলছেন, বিএনপি-জামাত বা নবগঠিত ঐক্যফন্টও জনমানুষের সত্যিকার আবেগ-অনুভূতি-ভালোবাসা ধারণ করে না। রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে না, কিংবা দক্ষ রাজনৈতিক জ্ঞানও তাদের নেই। যদি থাকত, তাহলে তাদের এতসব প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করার প্রয়োজন হতো না। আরো আগেই তারা এসব থেকে মুক্তি পেত। অন্যদিকে এখন পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, যে কোনো দলই ক্ষমতায় আসুক, মানবসমাজের উন্নয়নের সূচকগুলোর আরো অবনতি ঘটবে দ্রুত। কেননা সত্যিকার কল্যাণকামী চিন্তা আ আদর্শ ধারণ কারো মধ্যেই নেই।
ক্যাটাগরি: প্রধান খবর
[sharethis-inline-buttons]