মসজিদ হচ্ছে মানুষের মানসিক ও আত্মিক চিকিৎসাকেন্দ্র এবং একইসঙ্গে ধর্মীয়, সামাজিক, রাষ্ট্রীয়- সার্বিক সঙ্কটগুলো উত্তরণে ও দিকনির্দেশনা দানে তৎপর। তাই প্রয়োজনে ইমাম পিপিই ব্যবহার করে গণমানুষের খোঁজখবর নেবেন, সেবা করবেন, নামাজ পড়াবেন।
তরুণ সাংবাদিক, লেখক ও দেশ দর্শন সম্পাদক জাকির মাহদিন “মসজিদ উন্মুক্ত” রাখার বিষয়ে কিছু ভিন্ন রকম যুক্তি হাজির করেছেন এবং যারা এই সঙ্কটের সময়েও মসজিদে উপস্থিত হয়ে ফরজ নামাজ আদায় করতে চান, তাদের জন্য কড়াকড়ি শর্ত আরোপ করেছেন। কিন্তু কোনোভাবেই তিনি বাংলাদেশ সরকার বা সরকারি প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ফাউন্ডেশনের চলমান নির্দেশনাটির সঙ্গে একমত নন। আবার এর বিপরীতে দেশ-বিদেশের বহু আলেমের কোনো কড়াকড়ি শর্ত বা যথার্থ যুক্তি ছাড়াই সবার জন্য মসজিদকে উন্মুক্ত করে দেয়ার মতামতটিও তিনি সমর্থন করেন না বলে জানান।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, “মসজিদে ফরজ নামাজে মাত্র পাঁচজনের উপস্থিতি আমি সমর্থন করি না। আমার বিকল্প মত ও প্রস্তাবনা আছে যা সরকারকে বিস্তারিত জানাতে আগ্রহী। আমি মনে করি, মসজিদ হচ্ছে মানুষের মানসিক ও আত্মিক চিকিৎসাকেন্দ্র এবং একইসঙ্গে ধর্মীয়, সামাজিক, রাষ্ট্রীয়- সার্বিক সঙ্কটগুলো উত্তরণে ও দিকনির্দেশনা দানে তৎপর। তাই প্রয়োজনে ইমাম পিপিই ব্যবহার করে গণমানুষের খোঁজখবর নেবেন, সেবা করবেন, নামাজ পড়াবেন। একজন ডাক্তার, ফায়ারসার্ভিস কর্মীর মতোই ইমামও ঘরে বসে না থেকে দেশ-জাতির খেদমতে আত্মনিয়োগ করবেন। তবে আমি এও মনে করি, এই সঙ্কটের সময়ে মসজিদে নামাজ আদায়ে মুসল্লীগণ পাইকারিহারে অনুমতি না পেয়ে বরং তাক্বওয়ার ভিত্তিতে অগ্রাধিকার পাবেন। অর্থাৎ তাক্বওয়াসম্পন্ন সীমিতসংখ্যক মুসল্লি ইমামকর্তৃক অনুমতি পাবেন। কেননা, সারাবছর খবর নেই- এমন অনেকেই এই সময়টিতে মসজিদে ভিড় করতে পারেন, যার দ্বারা নিয়মিত ও তাক্বওয়াসম্পন্ন মুসল্লিদের নামাজে ব্যঘাত ঘটে।”
তিনি আরো বলেন, মসজিদ থেকেই চালানো হবে সচেতনতা, ত্রাণতৎপরতা এবং জাতীয় দুর্যোগে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা। প্রয়োজনে এ বিষয়ে অনলাইনে ইমামদের প্রশিক্ষণ দিতেও তিনি প্রস্তুত। সরকার মসজিদ বন্ধ (কার্যত) করলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ অক্ষম এবং অসমর্থ। আর অধিকাংশ মন্ত্রী এম্পি দিশেহারা। এরা স্বাভাবিক পরিস্থিতিই সামলাতে পারে না, জরুরি অবস্থা কীভাবে সামলাবে? সুতরাং চোখ বন্ধ করে এদের উপর আস্থা রাখা যায় না।
তিনি বলেন, সুবিধাবাদিরা পলাতক অথবা দিশেহারা। তাই নেতৃত্ব ও জাতীয় দিকনির্দেশনা আসতে পারে তৃণমূল থেকে। প্রয়োজনে আমি এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনায় আগ্রহী। মসজিদ ও ইমামদের সহযোগিতা ছাড়া করোনা মোকাবেলায় সরকারের সম্ভাব্য ব্যর্থতা ৯৯%। বিদ্রোহও দানা বাধতে পারে এবং ইতোমধ্যে অনেক জায়গাতেই খাদ্য, ত্রাণ ও বেতনের দাবিতে বিদ্রোহ হয়েছে।
তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, এ বিষয়ে শীঘ্রই তিনি একটি পূর্ণাঙ্গ লিখিত বক্তব্য ও দিকিনির্দেশনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং তার সম্পাদিত দেশ দর্শনে প্রকাশ করবেন। কিছু ভিডিও বক্তব্যও দিতে পারেন। কারণ বিষয়টি অতি জটিল এবং স্পর্শকাতর। সংক্ষিপ্ত লেখা বা বক্তব্য অনেকের কাছেই পরিষ্কার মনে হবে না।
উল্লেখ্য, তিনি বর্তমানে একটি মসজিদের ভারপ্রাপ্ত ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি সামাজিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়েও তার কাজ ও গবেষণা চলমান রয়েছে।
আবির হোসাইন জসিম : স্টাফ রিপোর্টার
ক্যাটাগরি: প্রধান খবর, শীর্ষ তিন, সারাদেশ
[sharethis-inline-buttons]