ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রলারডুবির ২২ ঘণ্টা পর দুর্ঘটনা কবলিত ট্রলারটি উদ্ধার না করেই অভিযান সমাপ্ত করেছে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। শনিবার বিকেলে দুর্ঘটনাকবলিত স্থান শনাক্ত করে লাল নিশান টানিয়ে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও নৌ-দুর্ঘটনা তদন্ত কমিটির প্রধান মো. রহুল আমীন জানান, বিআইডব্লিউটিএ’র ডুবুরিরা তল্লাশি করে কোনো লাশ নেই বলে আমাদেরকে জানিয়েছেন। পরবর্তীতে দুর্ঘটনা কবলিত যানটিকে পানির নিচে শানাক্ত করার পর সেটিকে টেনে তীরের কাছে আনা হয়। পরে সেখানে বিআইডব্লিউটিএ’র ডুবুরিরা বাঁশ উঁচিয়ে লাল নিশান টানিয়ে দেয়। কোনো লাশ না থাকায় দিন শেষে অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করার কথা জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে শনিবার সকাল থেকে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত নৌ-যানটির ফিটনেস ছিল কিনা, নৌ-যানটির ডিজাইনে ত্রুটি ছিল কিনা, ধারণ ক্ষমতার চেয়ে যাত্রী কী পরিমাণ বেশি ছিল- সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করা হবে। আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এবং তদন্ত কমিটির সদস্য মো. মোজাম্মেল রেজা জানান, দুর্ঘটনার পর বিপরীত দিক থেকে আসা বালুবাহী ট্রলারের চালকসহ পাঁচ সদস্যকে আটক করা হয়। এরপর নৌ দুর্ঘটনায় একই পরিবারের চার সদস্য নিহতের ঘটনায় ওই পরিবারের স্বজনরা ৭ জনের নাম উল্লেখ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
তিনি জানান, দুর্ঘটনায় এজাহার নামীয় অপর দুজনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। অজ্ঞাতনামা আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, দুর্ঘটনা কবলিত নৌ-যানটি উদ্ধার করা বাস্তবিক অর্থেই সম্ভব না হওয়ায় এই অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। পরবর্তী সময়ে নৌ-যানটিকে উদ্ধারে চেষ্টা করা হবে।
বিআইডব্লিউটিএ’র ভৈরব এবং আশুগঞ্জ নৌবন্দরে উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার এবং বিজয়নগরে চম্পকনগরে চলাচলকারী নৌ-পথে চলাচলকারী নৌ-যানগুলোর নিবন্ধন নেই। চালকদের দক্ষতার অভাব রয়েছে। এ ছাড়া নৌযানগুলো ফিটনেসবিহীন অবস্থায় প্রতিনিয়ত চলাচল করছিল বলে মনে হচ্ছে। এই নৌ-পথে চলাচলকারী প্রত্যেক নৌ-যানকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি।
আদিত্ব্য কামাল : নিজস্ব প্রতিবেদক
ক্যাটাগরি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া, শীর্ষ তিন
[sharethis-inline-buttons]