যার জীবনে হতাশা, তার বিয়ে করলেও হতাশা, না করলেও হতাশা। বিয়ে জীবনের খুবই সামান্য একটা অংশ। কিন্তু জীবনকে অনুভবের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখনকার ছেলেমেয়েরা অধিকাংশই এই বিয়েকে কেন্দ্র করে অর্থহীন প্রেম-আবেগগুলোতে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে নানাবিধ হতাশায় ভুগে। এগুলো জীবনে মানসিক ও শারীরিক উভয় দিকেরই বেশ বিকৃতি ঘটায়। একপর্যায়ে সৃষ্টি হয় প্রজন্মের মধ্যে যৌন হতাশা। অনেক শুদ্ধিবাদী বিয়ে বিষয়টাকে যৌনচিন্তার বিকৃতি রোধ, সফলতার সুত্র, সঠিক জীবনবোধ এইসব হিসেবে দেখলেও আমার বিচারে এগুলো ততোটা প্রাধান্য পায় না।
আমি বিশ্বাস করি, মানুষের চিন্তা-চেতনা, অনুভুতি, যুক্তি ও জ্ঞানকে সৃষ্টির রহস্যময় সমুদ্রে ডুবিয়ে এমন পথে পরিচালিত করা সম্ভব যেখানে জীবনের অসীম প্রশান্তি বিদ্যমান। সচরাচর প্রচলিত এই শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের এই নিদর্শন দেওয়া থেকে সম্পুর্ণই দূরে। তবে যৌনতা জীব জগতের একটা অবিচ্ছেদ্য ও স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এটা নিয়ে বিয়েকেন্দ্রীক জীবনের সমগ্র সুখ বিবেচনা করাটা এক অর্থে পাগলামি।
সৃষ্টির মধ্যেই সৃষ্টির সমস্যার সমাধান লুকানো। কেবল খুঁজে নেয়ার দৃষ্টি থাকা চাই। আর এই দৃষ্টিকে যদি স্বাধীন চিন্তাবহির্ভূত করে কোনো দাসত্বে পরিণত করার প্রক্রিয়াকে আমরা বিদ্যাশিক্ষা বলি, তবে এর সমাধান এই যুগে অন্তত আসমান থেকে নাজিল হওয়া অসম্ভব।
প্রত্যক্ষ দৃষ্টিতে বিষয়গুলো কিছুটা জটিল। পরিবার এবং সমাজ থেকে শৈশব কৈশোর থেকেই আমাদের জীবন ও এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে যে দিকনির্দেশনা বেঁধে দেয়া হচ্ছে, সেগুলোর অসাড়তাই বর্তমান বিশৃঙ্খলার কারণ বলে আমি মনে করি। সৃষ্টির মধ্যেই সৃষ্টির সমস্যার সমাধান লুকানো। কেবল খুঁজে নেয়ার দৃষ্টি থাকা চাই। আর এই দৃষ্টিকে যদি স্বাধীন চিন্তাবহির্ভূত করে কোনো দাসত্বে পরিণত করার প্রক্রিয়াকে আমরা বিদ্যাশিক্ষা বলি, তবে এর সমাধান এই যুগে অন্তত আসমান থেকে নাজিল হওয়া অসম্ভব।
সমাজে সবাই বুদ্ধিমান হবে না বরং বুদ্ধিমানেরা বাকিদের নিয়ন্ত্রণ করবে, এটা স্বাভাবিক। তবে এই নিয়ন্ত্রণ হতে হবে নতুনত্বকে আবিষ্কার করে শিল্প-সংস্কৃতির প্রসার ঘটিয়ে সবার জীবনে সমৃদ্ধি নিয়ে আসার সংগ্রামের জন্যে সমাজকে নিয়ন্ত্রণ। অথচ ঠিক এর উল্টো চিত্রই এখন দেশ ও পৃথিবীতে। কারণ আমরা সৃষ্টি ও জগৎচিন্তা, প্রকৃতির সাথে বোঝাপড়ার চেয়ে প্রতিপক্ষ তৈরী করতেই বেশ পছন্দ করি।
এখনকার ছেলেমেয়েরা অধিকাংশই এই বিয়েকে কেন্দ্র করে অর্থহীন প্রেম-আবেগগুলোতে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে নানাবিধ হতাশায় ভুগে। এগুলো জীবনে মানসিক ও শারীরিক উভয় দিকেরই বেশ বিকৃতি ঘটায়। একপর্যায়ে সৃষ্টি হয় প্রজন্মের মধ্যে যৌন হতাশা। অনেক শুদ্ধিবাদী বিয়ে বিষয়টাকে যৌনচিন্তার বিকৃতি রোধ, সফলতার সুত্র, সঠিক জীবনবোধ এইসব হিসেবে দেখলেও আমার বিচারে এগুলো ততোটা প্রাধান্য পায় না।
এর ফলে সমাজে এক একটি শ্রেণীর মানুষকে দেখা যায় তার উর্ধ্বতন শ্রেণীর দাসত্ব আর গোলামে পরিণত হবার। সমাজের সীমাবদ্ধতার জায়গা সবাই আবিষ্কার করতে পারবে না। যারা আবিষ্কার করবে তাদের দিয়েই ভালো পরিবর্তন সম্ভব।
সভ্যতার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যৌনতার ইতিহাসটা বেশ বিতর্কিত। এক অর্থে বলা যায়, সৃষ্টির (জীব জগতের) নিয়ন্ত্রণ-পরিধির মাপকাঠি যুদ্ধ এবং যৌনতা। এই যুদ্ধ এবং যৌনতার ভেতর দিয়ে সমাজে সম্পদ পরিচালিত হয়। আর এখানেই যদি আমাদের ধারণা সর্বদাই অস্পষ্ট ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন থাকে, তবে যে কেউ এগুলোর দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আমাদের বিভ্রান্ত করবে।
নাঈম আহমেদ : শিক্ষার্থী
ক্যাটাগরি: মিনি কলাম
[sharethis-inline-buttons]