রবিবার রাত ১২:২৭, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং

বাস ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে ফুঁসে উঠছে মানুষ

ডিডি প্রতিবেদক

হোক প্রতিবাদ সব অনিয়মের বিরুদ্ধে: কোথাও অনিয়ম দেখলে 999 এ ফোন দিন। অন্যদিকে বাস ভাড়া কমাতে সরকারকে বাধ্য করুন।

বাস ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে অনলাইনে অফলাইনে ফুঁসে উঠছে মানুষ। বিভিন্ন মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশও করছে। আর  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ এবং টাইমলাইনে চলছে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও সমালোচনার ঝড়।

তারা বলছেন, এমনিতেই এই করোনায় মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য আয়-রোজগার বন্ধ। অথচ সরকার দেশের পরিবহন সিন্ডিকেটের কাছে বারবার মাথা নোয়াচ্ছে। সারাবছর জনসাধারণের গলা কাটলেও সামান্য দুচার মাস এরা ভর্তুকি দিতে রাজি নয়। পরিবহন সিন্ডিকেট দিন দিন গিলে ফেলছে সরকারকে। প্রত্যেক যাত্রীর পাশের সিট খালি রাখার নিয়ম ন্যূনতমও মানছে না বাস-মালিকগণ। অথচ ভাড়া নিচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ।

ফেসবুকে নিজের টাইম লাইনে হাতেম আহমেদ নামে একজন লিখেন, “জীবন যেখানে যেমন, বাঙালিকে হাইকোর্ট দেখিয়ে লাভ নেই- এই ভয়ে কেউ কেউ প্রতিবাদ করলেও বেশিরভাগ মানুষই অসহায়ের মতো চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করতে পারছে না।

গণপরিবহনে চলছে সীমাহীন দুর্নীতি আর নৈরাজ্য। এর জন্য সরকার সম্পূর্ণ দায়ী। করোনা ভাইরাসের কারণে সামাজিক দূরত্বের অজুহাতে গাড়ি ভাড়া ৬০%বাড়ানোর সীদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর জন্য বলা হয়েছে দুই সিটে একজন যাত্রী বসবে, ভাড়া ডাবল দিতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, দুই সিটে দুই জনই বসায় এবং দাঁড়িয়েও অনেক যাত্রী আনা-নেয়া করছে। এখানেও যাত্রীরা ওদের কাছে জিম্মি। প্রতিবাদ করলে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়।”

এম এ আকবর চৌধুরী লিখেন, “গাড়িগুলোতে কোনো শারীরিক দূরত্ব নেই। দুরত্ব নেই দেশের কোথাও। তবুও আমাদের দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হবে।”

আব্দুল মুমিন ফুয়াদ লিখেন, “আমার কাজিন ঢাকা যাওয়ার পথে, হোক প্রতিবাদ সব অনিয়মের বিরুদ্ধে। এইমাত্র ব্রাহ্মণবাড়ীয়া পৈরতলা বাসস্টপে এসে ঢাকা যাওয়ার টিকেট চাইতে গেলে প্রতিটি কাউন্টারে টিকেটের মূল্য চাচ্ছে ৩০০ টাকা এবং প্রত্যেক সিটেই যাত্রী বসাচ্ছে। আমি তাদের বললাম, টিকেটের মূল্য ৩০০ নিচ্ছেন কোন্ হিসাবে? তারা বলল, ঈদ উপলক্ষে! ঈদ গেলো ১ তারিখ, আর আজ ১০ তারিখ, তাতেও তাদের ঈদ শেষ হয় না! আচ্ছা ঠিক আছে, ৩০০ টাকা নিবি নে, কিন্তু ২ সিটে ১ জন বসাতে সরকার আইন করেছে, সেটা মানো।

না, কাউন্টার বলছে, কোম্পানির আদেশ ছাড়া তারা কিছু করতে পারবে না। তারপর আমি ৯৯৯ নাম্বারে কল দিয়ে সবকিছু জানিয়ে অভিযোগ করলাম। সেখাম থেকে তাৎক্ষণিক ব্রাহ্মণবাড়ীয়া থানায় বিষয়টি অবগত করেন এবং তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে বললেন। এখন থানা থেকে আমার সাথে কথা বলল এবং ওনারা পৈরতলা বাসস্টপে ফোর্স নিয়ে আসছে। আসুন আমরা সবাই অন্যায়, অনিয়মের বিরুদ্ধে এভাবেই প্রতিবাদ করি। নিজে বদলায় এবং সমাজকে বদলে দেই।”

আহমেদ সাকি লিখেছেননেত্রকোনা থেকে ঢাকার নরমাল ভাড়া ২৫০টাকা। এখানে প্রত্যেক যাত্রীই ৪৫০ টাকা করে ভাড়া দিয়ে টিকেট কেটেছে। বাস ছাড়ার সময় ছিল ভোর চারটায়। যাত্রীরা এসে চালক-হেলপারদেরকে জাগিয়ে তুলে। তারা ধীরে সুস্থে উঠে, একটু এদিক সেদিক করে একটা সিগারেট খায়, পনেরো-বিশ মিনিট পর গাড়ী ছাড়ে। ইন্জিন কভারে লোক বসানো, স্বল্প দূরত্বের যাত্রী তুলে দাঁড় করিয়ে নেয়া, সব কিছুই হচ্ছে এখানে।

প্রতিবাদ করে লাভ নেই, কারণ কোনো প্রতিকার তো হবেই না… বরং লজ্জাজনক ব্যবহারের সম্মুখীন হতে হবে। চলতে থাকুক এভাবেই। তবে হ্যাঁ, এই লকডাউনের সময়টাতে যে কয়েকটা সেবামূলক সংগঠনের সাথে কাজ করেছি, লক্ষ লক্ষ টাকা মানুষের মাঝে বন্টন করা হয়েছে। তবে কোনো বাসের হেলপার বা স্টাফকে যেন হেল্প না করা হয় সে চেস্টা করেছি। হয়ত ভবিষ্যতেও তাই করব।”

অন্যদিকে একটি পোর্টাল ১০০% যাত্রী বসিয়ে ৬০% বেশি ভাড়া আদায় শিরোনামের নিউজে লিখেছে, “করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্বের কোনোটিরই তোয়াক্কা করছে না কুমিল্লার গণপরিবহনগুলো। তাদের নজর ১০০ শতাংশ যাত্রী বসিয়ে অতিরিক্ত ৬০ শতাংশ ভাড়া আদায়ের দিকে। সরেজমিনে জেলার শাসনগাছা, চকবাজার এবং জাঙ্গালিয়া বাস টার্মিনালে গিয়ে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

রবিবার ওই বাস টার্মিনালগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, পাশাপাশি দুই সিটে একজন বসার নিয়ম থাকলেও সব বাসেই পাশাপাশি সিটে বসছেন দুইজন। বাসে জীবাণুনাশক স্প্রে দেয়াসহ এবং আনুষঙ্গিক কোনো নিয়মই মানছে না পরিবহনগুলো। এসব নিয়ে পরিবহন চালক ও যাত্রীদের মধ্যে পাল্টপাল্টি অভিযোগেরও শেষ নেই।”

ক্যাটাগরি: প্রধান খবর,  শীর্ষ তিন

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply