জনগণ প্রথমে তাঁদের শিক্ষার আংশিক ব্যয় বহন করে। দ্বিতীয়ত, বেতন ভাতাসহ সকল আর্থিক ব্যয় ও যাবতীয় সুযোগসুবিধার খরচও প্রদান করে। অথচ অমার্জিত, অনৈতিক আচরণ দ্বারা তৃতীয় ধাপে পুনরায় জনগণের পকেট কেটে শূন্য করা হয়।
আমলা, প্রশাসক, কর্মচারী, কর্মকর্তা- পদনাম যাই হোক, এঁরা সবাই এক কথায়- জনসাধারণের চাকর বা সেবক। অবসর গ্রহণের আগে আমিও তাই ছিলাম। চাকরিজীবী সকলেই সাধারণের প্রদত্ত অর্থে শিক্ষার সুযোগ পেয়ে থাকে। চাকরিতে নিয়োগ পেয়ে বেতন-ভাতা, বাসা-বাড়িসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা ভোগ করে থাকে। তাই সংবিধানে বর্ণিত বিধি-বিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণের সকল প্রকার স্বার্থ সংরক্ষণ এবং তাঁদের যাবতীয় সেবা প্রদান নিশ্চিতকরণে কর্মচারীদের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ বিষয়ে যে কোনো প্রকার শৈথিল্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
একজন বেসরকারি চাকরিজীবী, দিনমজুর, শ্রমিক, পেশাজীবী যেরূপে পূর্ণাঙ্গ সেবা (service) প্রদানপূর্বক অর্থোপার্জন করেন, অর্থের মালিকের সন্তুষ্টি অর্জন করেন, সম্মান করেন, একজন সরকারি চাকরিজীবীও দেশের মালিক জনগণকে তেমন সেবা ও সম্মান প্রদানে বাধ্য। কিন্তু তা সর্বক্ষেত্রে ঘটতে দেখা যায় না। জনগণের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন অনেক দপ্তরের কথা শোনা যায়, যেগুলোতে নানা অজুহাত সৃষ্টি করে ও টালবাহানার দ্বারা মানুষের পকেট কেটে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়। জটিলতা তৈরি করে দীর্ঘসুত্রিতার ফাঁদে ফেলা হয়। তোয়াজ তোষামোদ না করলে জ্যাক কিংবা প্রভাবশালী, ক্ষমতাধর কারো সাহায্য সুপারিশ গ্রহণ না করলে কর্মোদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়ে।
এমনও দেখা গেছে, সকল প্রকার বাধা ডিঙ্গিয়ে নথিখানা বড় সাহেবের টেবিলে পৌঁছার পর তিনি স্বেচ্ছায় উদ্দেশ্যমূলক একটি কুয়িরি করলেন, যার প্রয়োজন ছিল না। নথিখানা নীচে নেমে গেল, হয়রানী ও সময় বাড়লো, নথিখানা যার, তার আর্থিক ও মানসিক ক্ষতি হলো। আবার বৈধ কাজটি নিয়ম মেনে করে দিবেন মর্মে ঘুষ নিয়েছেন অথচ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পূর্বেই তিনি বদলী হয়ে গেছেন, অথচ ঘুষের অর্থ ফেরত দেননি। পরে যিনি এসেছেন তাকে পুনরায় ঘুষ দিয়ে কাজটি আদায় করতে হয়েছে।
মাস শেষে পর্যাপ্ত বেতন ও সুবিধাদি পাওয়ার পরও যারা এরূপ অবৈধ কাজে লিপ্ত, এসব কর্মচারী নিঃসন্দেহে দূর্বিনীত, অকৃতজ্ঞ, আইনের দৃষ্টিতে অপরাধী এবং তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। এই দূর্বিনীত কর্মচারীরা উল্টো দেশের মালিক জনগণকে তাদের চাকরবাকর, ক্ষেত্রবিশেষে গৃহপালিত জন্তু জানোয়ার ভাবে।
এমনও দেখা গেছে, সকল প্রকার বাধা ডিঙ্গিয়ে নথিখানা বড় সাহেবের টেবিলে পৌঁছার পর তিনি স্বেচ্ছায় উদ্দেশ্যমূলক একটি কুয়িরি করলেন, যার প্রয়োজন ছিল না। নথিখানা নীচে নেমে গেল, হয়রানী ও সময় বাড়লো, নথিখানা যার, তার আর্থিক ও মানসিক ক্ষতি হলো। আবার বৈধ কাজটি নিয়ম মেনে করে দিবেন মর্মে ঘুষ নিয়েছেন অথচ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পূর্বেই তিনি বদলী হয়ে গেছেন, অথচ ঘুষের অর্থ ফেরত দেননি। পরে যিনি এসেছেন তাকে পুনরায় ঘুষ দিয়ে কাজটি আদায় করতে হয়েছে।
জনগণ প্রথমে তাঁদের শিক্ষার আংশিক ব্যয় বহন করে। দ্বিতীয়ত, বেতন ভাতাসহ সকল আর্থিক ব্যয় ও যাবতীয় সুযোগসুবিধার খরচও প্রদান করে। অথচ অমার্জিত, অনৈতিক আচরণ দ্বারা তৃতীয় ধাপে পুনরায় জনগণের পকেট কেটে শূন্য করা হয়। অবশ্য সকল দপ্তরের সব কর্মচারী এরূপ কাজে যুক্ত নয়। কতিপয় দূর্নীতিপরায়ন অসৎ কর্মকর্তা কর্মচারীর কারণে প্রশাসনের সমস্ত কর্মচারীগণ দূর্নাম ও নিন্দার অংশীদার হয়ে থাকেন। যা অনভিপ্রেত, অপ্রত্যাশিত। প্রতিকারের লক্ষ্যে দ্রুত এদের জবাবদিহিতার আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
ক্যাটাগরি: মিনি কলাম
[sharethis-inline-buttons]