বুধবার সকাল ৯:১১, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং

পুলিশের এখন সীমাহীন ক্ষমতা

মুনশী জাকির হোসাইন

পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে হয় পুলিশের কাছে! অথচ, এই অভিযোগ একটি স্বাধীন সংস্থার নিকট করার সুযোগ রাখা উচিত ছিল! পুলিশের বিরুদ্ধে মাঝে মাঝে হাস্যকর কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বাজারে আসে; বদলি, ক্লোজ, দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার!!

বৃটিশ আমলে পুলিশ সম্পর্কে জনমানুষের যে ধারণা ছিল, সে ধারণা স্বাধীন দেশেও বহাল। সামান্য কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে ক্ষেত্রবিশেষে পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। বৃটিশ আমলে পুলিশ হাফপ্যান্ট পরত, এখন ফুলপ্যান্ট পরে- এটিই দৃশ্যমান পরিবর্তন। পুলিশের যে সেবা সাধারণ মানুষের পাওয়ার অধিকার সেটি শুধুমাত্র ক্ষমতাসীনরা পেয়ে থাকে, এটি আমি ৯০ সাল থেকেই দেখে আসছি। বৃটিশ আমলে পুলিশের ভিডিও করার ক্ষমতা ছিল না, ইন্টারনেট ছিল না! এখন পুলিশ ভিডিও করতে পারে নাগরিকের অনুমতি ছাড়াই এবং সেটি অবলীলাক্রমে পাবলিক ডোমেইনে ছেড়েও দিতে পারে! এই ফৌজদারী অপরাধকে পুলিশ অপরাধ মনে করে না! র‌্যাবের আঁতুড়ঘর থেকে ক্রসফায়ার এর এখন পুলিশেরও এখতিয়ারে এসে গেছে!

পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে হয় পুলিশের কাছে! অথচ, এই অভিযোগ একটি স্বাধীন সংস্থার নিকট করার সুযোগ রাখা উচিত ছিল! পুলিশের বিরুদ্ধে মাঝে মাঝে হাস্যকর কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বাজারে আসে; বদলি, ক্লোজ, দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার!!

সাধারণ মানুষ এখন আয়কর দেয়, পরোক্ষ কর সকলকেই দিতে হয়! এমন কি ভিক্ষুকও ভ্যাট দেন! সুতরাং, মানুষ এখন তাঁদের অধিকার সম্পর্কে আর ঔপনিবেশিক অবস্থানে নেই। পুলিশ কিছু ভালো কাজ করছে এটি যেমন সত্য, তেমনি পুলিশের দ্বারাও মানুষের অধিকার ভুলন্ঠিত হচ্ছে তাও সত্য! সরকারি সংস্থার বেতন কিন্তু দ্বিগুণ হয়েছে! সেবার মান পূর্বের অবস্থানেই আছে! এটি চরম সাংঘর্ষিক!

প্রতিষ্ঠানকে নির্দোষ রেখে শুধুমাত্র কর্মচারীকে দায়ী করার প্রবণতা প্রতিষ্ঠানকেই দুর্বল করে। প্রতিষ্ঠানের দোষ ঢাকার প্রবণতা প্রতিষ্ঠানের কাঠামোকে ধ্বংস করে, সংশোধনের পথ রুদ্ধ করে। প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো সুসংহত হলে সেখানে কর্মচারীদের নিয়ম বিরুদ্ধ হওয়ার পথ ক্রমশ সংকুচিত হতে বাধ্য।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের প্রশ্ন ফাঁস কি ভূতে করেছে? যারা প্রশ্নপত্র ফাঁস করল, যাদের সহযোগিতায়/অবহেলায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হলো তাদের বিচার না করে শুধু ভিকটিমদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো আরেকটি অপরাধ।

পুলিশ দায়িত্ব পালনকালে সাক্ষ্য, আলামত সংরক্ষণের প্রয়োজনেই ছবি তুলবে, ভিডিও করবে সেটি ঠিক আছে। তবে অসৎ উদ্দেশ্যে কিংবা বোধবুদ্ধিহীনতার কারণে যদি ছবি তোলে, ভিডিও করে, সেই ভিডিও পাবলিক ডোমেইনে প্রকাশ করে তাহলে প্রতিষ্ঠান হিসাবে পুলিশ প্রশাসন এর দায় এড়াতে পারে না।

ক্যাটাগরি: মিনি কলাম

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply