যান্ত্রিক উত্কর্ষতায় হয়তো আমাদের আঙ্গিক রূপ বেড়েছে, কিন্তু মানসিকতার দিক থেকে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি অনবরত। প্রতিদিন কিছুটা সময় দরকার একান্ত নিজের জন্যে। যখন মোবাইল, ল্যাপটপ বা অন্যকোনো যন্ত্রের যোগ থাকবে না। নিজের আত্মার সাথে কিছুটা সময় ব্যয় করা প্রয়োজন।
কারিগরী উত্কর্ষতা আমাদের জীবনকে সহজ করার কথা ছিলো। মুহুর্তের মধ্যে আমরা এখন সব খবর জানি, দূরের মানুষটাকেও একেবারে কাছের করে দেখার সুযোগ এখন সবার আছে। অথচ আমাদের জীবনের জটিলতা কিন্তু বাড়ছে। বেশি জানাতে আমাদের দায়বদ্ধতা বাড়ছে বেশি, বেশি শুনছি বলে আমাদের মানসিক চাপের উপকরণ বাড়ছে। জীবনে স্থিরতা বলে কিছু আর থাকছে না।
সবখানে, সবকিছুতে অসহনীয় একটা ব্যস্ততা; পিছিয়ে পড়ার অকল্পনীয় এক ভয় সবার মাঝে। এমনটাই কি হবার কথা ছিলো? আধুনিকতা একটা আপেক্ষিক হিসাব। আগে আমার মোবাইল ছিলো না, ল্যাপটপের কথা তো চিন্তায়ও ছিলো না। আমার একটা রেডিও ছিলো। আমি তা নিয়েই নিজেকে সবচেয়ে আধুনিক মনে করতাম। এখনকার বিচারে এটা হাস্যকর হলেও তখন এটাই ছিলো প্রতিষ্ঠিত ও গ্রহণযোগ্য সত্য।
সবখানে, সবকিছুতে অসহনীয় একটা ব্যস্ততা; পিছিয়ে পড়ার অকল্পনীয় এক ভয় সবার মাঝে। এমনটাই কি হবার কথা ছিলো?
রেডিওর গৎবাধা সেই বিজ্ঞাপন তরঙ্গের গান শুনেই আমার যে আনন্দ হত তার ছিটেফোটাও আমি খুঁজে পাই না আমার কয়েক মিলিয়ন গানের স্টকের মাঝে। যান্ত্রিক নির্ভরশীলতা আমাদের আকাঙ্খাকে নিয়ে যাচ্ছে আরো বেশি চাই ধারায়। জীবনের জটিলতার শুরু এখানেই। আমাদের এই আকাঙ্ক্ষায় বাড়ছে যন্ত্রের উত্কর্ষতা। আমরা ভাবছি এতে আমাদেরও উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আমরা সবাই কমবেশি মানসিকভাবে অসুস্থ।
যান্ত্রিক উত্কর্ষতায় হয়তো আমাদের আঙ্গিক রূপ বেড়েছে, কিন্তু মানসিকতার দিক থেকে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি অনবরত। প্রতিদিন কিছুটা সময় দরকার একান্ত নিজের জন্যে। যখন মোবাইল, ল্যাপটপ বা অন্যকোনো যন্ত্রের যোগ থাকবে না। নিজের আত্মার সাথে কিছুটা সময় ব্যয় করা প্রয়োজন। মানসিক সুস্থতার জন্যে এর থেকে ভালো আর কোনো চিকিত্সা নেই।এমনকি স্রষ্টার দেওয়া বিধান ও গুরুমুখী সাধনা।
ক্যাটাগরি: মিনি কলাম
[sharethis-inline-buttons]