নোয়াখালির বেগমগঞ্জে কিছু চিহ্নিত বখাটে এক গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে সংঘবদ্ধভাবে এমনভাবে নির্যাতন করে, যা অন্ধকারযুগের পাশবিকতাকেও হার মানিয়েছে। গতকাল রবিবার এমনই এক ভিডিও ফেসবুকে আপলোড হওয়ার পর মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। গত কয়েক মাস ধরেই সারাদেশে একের পর এক ধারাবাহিক ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ও নারীহত্যার ঘটনায় এটা সর্বশেষ সংযোজন।
এমতাবস্থায় বিশেষ শ্রেণি-গোষ্ঠী-প্রশাসনের বিরুদ্ধে উন্মাতাল হয়ে উঠেছে সারাদেশ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড়। এদিকে খবর পাওয়া গেছে, গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। কিন্তু সেই মামলায় নেই এই বখাটে বাহিনীর প্রধান দেলোয়ারের নাম।
অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং রাজপথে প্রথাগত প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, মানববন্ধনে কাজের কাজ কিছুই হবে না বলে সমাজবিশ্লেষকগণ মনে করছেন। তারা বলছেন, এগুলো মূলত বিচ্ছিন্ন ও বিভক্ত রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সংগঠনগুলো নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই করে। এসবের ফলে তাৎক্ষণিক হয়তো এটা সক্রিয়তায় প্রশাসন যায়, কিন্তু ভেতর থেকে সমাজকে বদলানোর পদ্ধতি এটা নয়।
নোয়াখালীতে এক নারীকে (৩৭) বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভাইরাল ভিডিও
সতর্কতা: দয়া করে অবিবাহিতরা এ ভিডিওটি এড়িয়ে চলুন। এটি আমাদের হাতে গতকালই এসেছে, কিন্তু দেইনি বা নিউজ করিনি। কারণ এটি দেখার মতো নয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত দায়িত্ববোধ থেকে দিতে হলো। তারপরও কারো আপত্তি থাকলে জানাবেন, ডিলিট করে দেব। -বিভাগীয় সম্পাদক।
Posted by Desh Dorshon on Sunday, October 4, 2020
তারা আরো বলছেন, প্রতিটি ঘটনায় যদি লক্ষ লক্ষ মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও রাজপথে এভাবে যদি ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে’ বিচার চাইতে হয়, এ থেকেই বোঝা যায় দেশের বিচারব্যবস্থা কোনো গিয়ে ঠেকেছে। আর এসবের দ্বারা যদি কমতই, তবে তার আলাম আমরা ইতিমধ্যে দেখতে পেতাম। কিন্তু বাস্তবে বরং হত্যা-ধর্ষণ, নির্যাতন, অপহরণ, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, প্রশাসনিক দলীয়করণ বাড়ছে। বাড়ছে প্রতিটি দলে চাটুকার, প্রচারপ্রিয় অজ্ঞ-মূর্খ-অথর্বদের নেতৃত্ব ও কদর।
সর্বশেষ খবরে জানা যায়, সেই ঘটনায় ৯ জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা হয়েছে। এছাড়া আরও তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে আরও একটি মামলা হয়েছে। রবিবার রাত ১টার দিকে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ (৩৫) বাদী হয়ে প্রথম মামলাটি করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দু’দফায় অভিযান চালিয়ে দুই আসামিকে আটক করে। তারা হলো, একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের আবদুর রহিম (২২) এবং রহমত উল্যাহ (৪১)। এদিকে, দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার, বাদল, কালাম ও আবদুর রহিমসহ ৫ তরুণ ওই ঘটনা ঘটায় বলে জানা গেছে। কিন্তু আসামি তালিকায় নেই দেলোয়ারের নাম।
ক্যাটাগরি: প্রধান খবর, শীর্ষ তিন
[sharethis-inline-buttons]