রবিবার সকাল ৯:০৯, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং

নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক সহিংসতা ও রক্তারক্তির আশঙ্কা

প্রধান প্রতিবেদক

১. ৩০ ডিসেম্বর ভোটদানকে কেন্দ্র করে যে কোনো সময় যে কোথাও ব্যাপক সহিংসতা ও রক্তপাত হতে পারে। গত দুদিন ধরে এরই আলামত প্রকাশ পাচ্ছে। ২. এ সহিংসতা ও রক্তারক্তির দায়ভার সরাসরি বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ, শিক্ষক ও রাজনীতিকদের উপর। যারা ধর্মীয় রাজনীতি ও শিক্ষার সঙ্গে জড়িত, তারাও এর জন্য সরাসরি দায়ি। ৩. আওয়ামী লীগের বিশেষ দুটি অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের উপর দলীয় ও সরকার প্রধান শেখ হাসিনার কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। প্রশাসনেরও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই এদের উপর। ২. বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের আদর্শ ও ন্যায়-নীতি গঠনেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিন্দুমাত্র ভূমিকা বা পদক্ষেপ নেই। এমনকি বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও ছিন্নভিন্ন।

বিশেষ প্রতিবেদন : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক সহিংসতা ও রক্তারক্তির আশঙ্কা করছেন সমাজতাত্ত্বিক ও বিশ্লেষকগণ। সাধারণ মানুষও নির্বাচনী সহিংসতায় তটস্থ, উদ্বিগ্ন। ভয় উৎকণ্ঠায় বিত্তশালী অনেকেই দেশ ছেড়েছেন কিংবা সন্তানদের বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন। আবার অনেক ভোটার এরই মধ্যে নিজের এলাকা ছেড়ে দূরে কোথাও চলে যেতে শুরু করেছেন। কিন্তু তবু তাদের ভয় কাটছে না। কারণ আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোটদানকে কেন্দ্র করে যে কোনো সময় যে কোথাও ব্যাপক সহিংসতা ও রক্তপাত হতে পারে। অবশ্য গত দুদিন ধরে এরই আলামত প্রকাশ পাচ্ছে। সারাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক সহিংসতার খবর পাওয়া যাচ্ছে। আর হুমকি-ধামকি শুরু হয়েছে আরো অনেক আগে থেকে।

তাত্ত্বিকগণ বলছেন, বিশ্বব্যাপী মৌলিক শিক্ষা, চিন্তা ও গণনীতির অভাব থাকায় দিন দিন ‘ক্ষমতাই’ সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে। আর এটা সরাসরি প্রভাব ফেলছে কিছু উন্নয়নশীল দেশের উপর। বাংলাদেশ এরই একটি। তারা বলছেন, এ মুহূর্তে বাংলাদেশ বিদেশি কোনো শক্তির দ্বারা সরাসরি আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির সুযোগ নিতে পারে যে কেউ এবং নিচ্ছেও। এ থেকে বাঁচতে হলে চলমান ধারণা ও ব্যবস্থাগুলোকে নতুনভাবে ভাবা ও যাচাই করার বিকল্প নেই।

তারা আরো বলছেন, এ সহিংসতা ও রক্তারক্তির দায়ভার সরাসরি আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ, শিক্ষক ও রাজনীতিকদের উপর। যারা ধর্মীয় রাজনীতি ও শিক্ষার সঙ্গে জড়িত, তারাও এর জন্য সরাসরি দায়ি। কারণ এরা কেউই সমাজ ও জাতিকে সার্বিক কল্যাণের প্রকৃত বার্তা দিচ্ছে না। বরং প্রত্যেকেই ব্যক্তি, পরিবার ও দলীয় স্বার্থে সবকিছু ভাবছে, বলছে ও পরিচালনা করছে। এক্ষেত্রে কেউ শিক্ষাকে ব্যবহার করছে, কেউ রাজনীতিকে, কেউবা ধর্মকে। এরা সবাই একই পাপে পাপী। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এসব হেভিওয়েটদের ক্ষমতায় যাওয়াকে কেন্দ্র করে যেসব সাধারণ মানুষের মৃত্যু ও রক্তপাত হবে এর দায়ভার কে নেবে? তারা বলছেন, অনেকটা সাধারণ জনগণকেও নিতে হবে। কারণ তারা কখনো ‘ভালোকে’ সর্বোচ্চ পর্যায়ে খোঁজ করে না। এমনকি তাদের দুয়ারে গেলেও গ্রহণ করে না। তারা আজকাল প্রতারণা, প্রকাশ্য মিথ্যা ও ভণ্ডামিকে মনেপ্রাণে ভালোবাসে এবং সমর্থন ও গ্রহণ করে।

দেশ দর্শনের সরেজমিনে দেখা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগের বিশেষ দুটি অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের উপর দলীয় ও সরকার প্রধান শেখ হাসিনার কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। প্রশাসনেরও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই এদের উপর। সুতরাং তারা যখন যা ইচ্ছা তাই করতে পারে এবং করছে। অন্যদিকে বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের আদর্শ ও ন্যায়-নীতি গঠনেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিন্দুমাত্র ভূমিকা বা পদক্ষেপ নেই। এমনকি বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও ছিন্নভিন্ন। আর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কামাল-মান্নাদের সঙ্গে যে ঐক্যবদ্ধতা তা কেবলই ক্ষমতার স্বার্থে। চিন্তা, আদর্শ ও দৃষ্টিভঙ্গিত দিক থেকে তাদের মধ্যে ন্যূনতম মিল নেই। এদিকে সারাদেশের শিক্ষিত যুবসমাজকে সমাবিশ্লেষকগণ আদর্শিক ও চিন্তাগত দিক থেকে ‘পঙ্গু’ হিসেবে বিবেচনা করছেন। তাদের পক্ষে জীবন দেয়া সম্ভব হলেও ন্যায়-নীতি ও আদর্শ বাছাই করা সম্ভব নয়। সুতরাং বাংলাদেশের কোনো ভালো ভবিষ্যতের আশা আপাতত করা যাচ্ছে না।

ক্যাটাগরি: প্রধান খবর,  সারাদেশ

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply