শনিবার রাত ১১:০২, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

নিরাপদ শিশুশিক্ষা শিশুর মৌলিক অধিকার

তোফায়েল আহমদ

শিশু যেন অন্তত বর্ণ ও বানান শিক্ষাটা পরিবারেই পায়- এই পরিবেশ তৈরি করা জরুরি। প্রথমত প্রাইমারি স্কুল থেকে ক্লাস টু অর্থাৎ দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত বাদ দিতে হবে। ক্লাস থ্রি থেকে শুরু হয়ে ক্লাস সেভেন পর্যন্ত হবে প্রাইমারি শিক্ষার সিলেবাস

‘শিক্ষাব্যয় কমিয়ে আনা’ ও ‘শিশুদের নিরাপদ প্রাথমিক শিক্ষা মায়ের কোলেই হোক’ এ ভাবনার সারাংশ লিখছি। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাটাই একটা চাপ। শিশুর জন্য সেটা ভয়ংকরই বটে। বড়রাই হিমশিম খায়, আবার যদি শিশুর পিঠে বেতের বাড়ি পড়ে, তাহলে সেটা দাঁড়ায় আজরাইল আর মৃতপ্রায় ব্যক্তির অবস্থার মতো। শিক্ষকের ধমক আর রক্তচক্ষুই শিশুর জন্য প্যান্ট ভিজিয়ে দেওয়ার কারণ, তার উপর বেত! ভাবতেই ভয়ংকর ঠেকছে। কিন্তু কী করবে একজন শিক্ষক বেচারা(?); যেখানে একজন মা একটি শিশুর যন্ত্রণা সহ্য করতে পারে না, সেখানে শিক্ষককে পঞ্চাশটি শিশুর যন্ত্রণা, দুষ্টুমি, বিরক্তি সইতে হয়।

বেচারা সুস্থ মানুষের কাতারে থেকেও পাগল হয়ে জীবনাযাপন করছে। অনেক সময়ই মাথা ঠিক রাখতে পারে না। ‘জুলুম’ করে ফেলে, নিজের অজান্তেই। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হাটহাজারিতে জাবালে নূর মাদরাসার ঘটনা এর সর্বোচ্চ উদাহরণ। শিক্ষক পরিষ্কার ‘জুলুম’ এবং সীমালঙ্ঘন করেছে, নির্দম পিটিয়েছে, বাচ্চাটা দম নিতে পারেনি। শয়তান রাগের ‘রগে’ এমনভাবে ঢুকেছে, ভিডিও হচ্ছে সেটাও সে খেয়াল করেনি। হয়তো একদল বলবে তাকে দোষমুক্ত করতে শয়তানকে দোষ দিচ্ছি। দোষটা যারই হোক, শাস্তিটা হুজুরেরই প্রাপ্য। ‘শয়তান সাহেবের’ কী সৌভাগ্য, সে দোষী সাব্যস্ত হয়েও শাস্তি পায় না। যদি এমন একটা শিক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া যায়, যে ব্যবস্থায় শিশুরা মায়ের কোলে-কাছে থেকেই প্রাথমিক শিক্ষা নিবে। মায়ের কাছ থেকে দূরে সরে আবাসিক হতে হবে না। হওয়ার প্রয়োজন নেই।

শিশুর শিক্ষা তালিকায় সর্বপ্রথম ‘বর্ণ পরিচয়’ আসে। এই বর্ণ শিক্ষার জন্য শিশুকে মায়ের কোলছাড়া হতে হয়- এটা বুদ্ধি-চিন্তা মেনে নিতে পারে না। চার-পাঁচ কেজি বা তারও বেশি ওজনের ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে স্কুলে যেতে হয়। মাদরাসায় যেতে হয়। কিছুদিন আগে এই ওজন বহন নিয়ে খুব ‘খবরাখবরি’ হয়েছিলো টিভিতে। আর ওই ‘খবরাখবর’ টিভিতেই থেকে গিয়েছে। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনায় শিশুটির বর্তমানে কী হাল জানি না। সীমাহীন আফসোস এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য। শিশুকে একেবারে প্রাথমিক বর্ণ পরিচিতির জন্য প্রতিষ্ঠানে ছুটতে হয়। এটা প্রমাণ করে- হয়তো শিশুর মা-বাবা নিরক্ষর অথবা শিক্ষা দিতে ব্যর্থ, অপারগ কিংবা চেষ্টাই করে না। সমস্যা সব ক’টিই বিদ্যমান। নিরক্ষর মা-বাবাও আছে, স্বাক্ষর কিন্তু শিক্ষা দিতে পারে না এমনও আছে। আবার এমনও আছে যে চেষ্টাই করে না বা সময় নেই।

শিশু যেন অন্তত বর্ণ ও বানান শিক্ষাটা পরিবারেই পায়- এই পরিবেশ তৈরি করা জরুরি। প্রথমত প্রাইমারি স্কুল থেকে ক্লাস টু অর্থাৎ দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত বাদ দিতে হবে। ক্লাস থ্রি থেকে শুরু হয়ে ক্লাস সেভেন পর্যন্ত হবে প্রাইমারি শিক্ষার সিলেবাস। শিশুকে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত তার মা-বাবা, বড়ো ভাই-বোন, গৃহশিক্ষক বা যে কেউ শিক্ষা দিবেন; কিন্তু পরিবারে, মায়ের কোলে-কাছে রেখেই। অবশ্য তরুণ লেখক ও দার্শনিক হাফেজ জাকির মাহদিন মনে করেন, বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পর্যায়ের শিক্ষাটাও পরিবারেই দেওয়া সম্ভব। তার কথা তিনি নিজেই বলবেন। আমি যেটুকু সত্যিই সহজ এবং আজ থেকেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব সেটুকু বলছি। এর আরো সুবিধা হলো, হাইস্কুল থেকে দুটি ক্লাস কমে যাওয়ায় একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা লাভ করা শিক্ষার্থীদের জন্য সহজ হবে। সব গ্রামেই হাইস্কুল আছে বিধায় গ্রামের শিক্ষার্থীদেরকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার জন্য শহরে ছুটতে হবে না।

এতে গ্রামের গরীব পিতার, তাদের সন্তানদের প্রতিদিনের আসা যাওয়ার ভাড়া, মেছ ভাড়া গুণতে হবে না। শুধু এ কারণেও অনেক ছেলেমেয়ে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়তে পারে না। নিজ গ্রামে থেকেই যখন উচ্চ মাধ্যমিক পড়তে পারবে। তখন এরা পড়াশোনার পাশাপাশি পরিবারের কাজকর্মেও মা-বাবাকে সহযোগিতা করতে পারবে। যেহেতু শিশুদের জন্য তৃতীয় শ্রেণির আগে স্কুলে যাওয়ার বিধান থাকবে না, আবার সব মা-বাবা স্বাক্ষরও নন, তখন প্রচুর গৃহশিক্ষকও প্রয়োজন হবে। গৃহশিক্ষক পাওয়াও সহজ হবে, কারণ দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া শিক্ষার্থী গ্রামেই থাকবে ঢের। একই শিক্ষা ব্যবস্থা থাকবে মাদরাসা শিক্ষার জন্য। অন্তত নূরানী, নাযেরা পড়ার জন্য কোনো শিশুকে দূরের মাদরাসায় আবাসিক হতে হবে না। প্রতিটি গ্রামের প্রতিটি মসজিদই এই শিক্ষা আঞ্জাম দিতে সক্ষম। আবার একই সাথে প্রাথমিক আরবি ও সাধারণ শিক্ষাও মসজিদভিত্তিক ও মক্তবে শিক্ষা দেওয়া সম্ভব।

মসজিদের ইমাম সাহেব ও মুয়াজ্জিন সাহেব আরবি আর গ্রামের শিক্ষিত ছেলেরা জেনারেল শিক্ষা দিবেন। বিনামূল্যে দিতে পারলে সবচেয়ে ভালো। অন্যথায় কিছু হাতখরচ সেটা বিনামূল্যেরই নামান্তর। হাফেজ জাকির মাহদিন মনে করেন, শিক্ষা সুযোগ নয়, অধিকার। অধিকার দিতে হয় বিনামূল্যেই। এ শিক্ষাব্যবস্থায় কিন্ডারগার্টেন ও নূরানি সিস্টেম থাকবে না। আর মসজিদ তো মায়ের কোলই। সমাজে এমন অনেক নজীর আছে, শিক্ষিত ছেলে কিন্তু মা-বাবার কোনো সম্মান রাখছে না। তাদের দেখাশোনা করছে না। এর একটা কারণ এটাও হতে পারে, সে তার মায়ের কাছ থেকে কোনো শিক্ষা পায়নি তাই তার মায়ের কাছে শিক্ষাভিত্তিক ঋণে আবদ্ধ নয়। মা’কে দ্বিতীয় ‘রব’ বলা হয়, যেহেতু তিনি সন্তান প্রতিপালন করেন। এই বলাটা শিরিক নয়। এটা শুধু মায়ের দায়িত্ব পালন করার প্রতি লক্ষ্য করে বলা।

এন্ড্রয়েড মোবাইল আর ইন্টারনেট এসে বাড়ির প্রতিটি রুমই হয়ে গেছে থিয়েটার। একেকজন একেকটা মোবাইল নিয়ে বসে পড়েছে একেক কোণে। চোখ দুটি মোবাইলে গেঁথে দিয়ে মাথা ঝুঁকিয়ে ধুমসে টিপছে মোবাইল। মা টিপছে, বাবা টিপছে, বড় ভাইবোন টিপছে, শিশু ভাবে আমি বাদ যাবো কেন? কান্নাকাটি জুড়ে দিয়ে সেও শুরু করে ফোন টেপা। শেষে শিশুই হয় ফোন টিপার মাস্টার।

প্রতিপালনের দিকে লক্ষ্য করে মা দ্বিতীয় রব হলেও শিক্ষার ক্ষেত্রে মা হবেন প্রথম শিক্ষক। প্রতিপালন আর শিক্ষাদানের অবদানে একটি সন্তান যখন মায়ের কাছে, বাবার কাছে আবদ্ধ হবে তার জন্য মা-বাবা থেকে দূরে সরে পড়া অনেকটা অসম্ভবের মতো। শিক্ষার প্রভাব আর দায়বদ্ধতা সর্বদা শক্তিশালী প্রমাণিত হয়। অনেক উগ্র মেজাজ ছাত্রও শিক্ষকের সামনে নতশির দাঁড়িয়ে থাকে। যখন কোনো ছাত্র ‘ডক্টর শহীদুল্লাহ্’ও হয়ে যায়, সেও তার বর্ণমালার শিক্ষকের কাছে সবচেয়ে বেশি ঋণী থাকে। কারণ বর্ণ দিয়েই বিদ্যার সর্বোচ্চ সোপানে চড়তে হয়। সেই বর্ণ শিক্ষা হোক মায়ের কাছে, মায়ের কোলে, মায়ের দেখাশোনায়। মা-ই শুধু শিশুর পাহারাদার নন, শিশুও মায়ের পাহারাদার হতে পারে।

যুগের এই সময়ে এই চিত্র অনেক- স্বামী প্রবাসে, সন্তানরা স্কুলে, মা খালি বাসায় খালাতো-মতো দেবরের সাথে নির্বিঘ্নে নিরাপদ পরকীয়া আর যৌনাচার চালাচ্ছে। আমার নিজ জানাশোনায় এমন একটি ঘটনা আছে। সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে মা’টি এমন কাজ করে যাচ্ছিলো। বাসার মালিক বিষয়টি টের পেয়ে প্রবাসে থাকা তার স্বামীকে জানায় ফোনে। স্বামীটি গোপনে দেশে এসে আত্মগোপনে থাকে। মাংসের নেশায় বাঘ যেমন ভুলে যায় শিকারির কথা, তেমনি নারীর নেশায় তাল হারিয়ে ফেলে পুরুষ। ভুলে যায় ধরা পড়ার কথা। তাদের সময়ে তারা যখন দরজা ভেজিয়ে দিয়েছে, বাসার মালিক ফোন দিয়ে জানিয়ে দেয় ক্ষেতে ভেড়া পড়েছে। তারপর ক্ষেতের মালিক এসে ভেড়াকে হাতেনাতে ধরে সরেজমিনে। মহিলাটি বেকুব বনে যায়। তালাকের তালা নাকে ঝুলিয়ে বাপের বাড়ির পথ ধরে চোখের জলে পথ ভেজাতে ভেজাতে। দুটি সন্তান ছিলো এই দম্পতির। একটি মেয়ে, একটি ছেলে। খুব বিশ্বাস করে বলে গিয়েছিলো খালাতো ভাইকে ‘তোর ভাবীর বাজার-টাজার করে দিস মাঝে মাঝে।’ ‘শেয়ালের হাতে মুরগী বর্গা’র প্রবাদের প্রমাণ পেলাম। বাজার করে দিয়েছে ‘টাজার’ও বাদ রাখেনি।

আরো পড়ুন> অনার্স-মাস্টার্স সাফল্য না অভিশাপ?

বলছিলাম শিশুও হতে পারে মায়ের পাহারাদার। তাই শিশুকে কোল ছাড়া করে মা ও শিশুকে বিপদে না ফেলে দুজনকেই নিরাপদ রাখার ব্যবস্থা করা জরুরি। আবাসিক একটি শিশুর সাথে ঠিক কীরকম আচরণ করা হচ্ছে সেটার সঠিক বৃত্তান্ত কে দিতে পারবে? খোদ শিক্ষকই কী পারবেন? তিনি কি বলতে পারবেন কতবার একটি শিশুকে ধমকাচ্ছেন, চোখ রাঙাচ্ছেন? কতবার বেত দিচ্ছেন সেটাও তো কেউ গুণে রাখেন না। গুণে রাখাটাই কি সম্ভব? এতোগুলা শিশু, তাদের দুষ্টুমি, নালিশ, সমস্যা, চাহিদা,অসুস্থতা, কান্নাকাটি, মন খারাপসহ কতকিছু সবই তো একজন শিক্ষককে সামলাতে হয়। এটা কতবড় একটা বিষয়! সহজ মনে করা সহজ নয়। মাথা খারাপ করা দায়িত্ব ও পেরেশানি। তারপরও একজন শিক্ষক সামান্য বেতনের জন্য এসব সয়ে থাকেন। শুধু বেতনের জন্য বলাটা ঠিক নয়। শুধু বেতনের জন্য সহ্য করাটা সম্ভবও নয়, দায়িত্ববোধও বিবেককে তাড়িত করে। সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যায়। সব মানুষ তো সমান নয়, এক নয়। অনেক ঘটনা ঘটনাকারীরও অনাকাঙ্ক্ষিত।

একটি শিশু তার মা’কেই চায় পাশে পাশে থাকুক। বোনের ননদপুত্র শাফি। মাদরাসা তার মামার। দুই হুজুর তার দুই মামা। মাদরাসা ও বাসা পাশাপাশি। মায়ের হাতে খাচ্ছে। মায়ের সাথে ঘুমাচ্ছে। মায়ের কাছেই থাকছে বেশিটা সময়, তারপরও পড়তে পড়তে হঠাৎ নির্ভূমিকায় কেঁদে ওঠে। বলে ‘আমি আম্মুর কাছে যামু’। তাহলে একটি শিশু মায়ের সান্নিধ্য কতোটা চায় হিসেবটা কষে দেখুন। শাফিন, আরেক ননদপুত্র, মাদরাসার সাথের ফ্ল্যাটের। তবুও সময়টা খুব হিসেব করে দেয়। একবেলা এলে পরের বেলা আসতে চায় না। আরেকজন ইফাত, শর্ত করেই নিয়েছে, একবেলা এসে পড়ে যাবে। আসলে শিশুরা মায়ের কাছেই থাকতে চায়। মা যদি শিক্ষক হয়ে যায় তাহলে শিশু মা’ও পেলো, শিক্ষকও পেলো। সাধারণত নূরানী মাদরাসায় শিশুদেরকে আবাসিক করা হয় ভালো মানের আরবি শিক্ষার জন্য। অথচ এই ভালো মানের আরবি শিক্ষাটা মসজিদে মসজিদে দেওয়াই সম্ভব। শিক্ষকতায় দক্ষ এমন ব্যক্তিকে ইমাম মুয়াজ্জিন হিসেবে নিয়োগ দিয়ে দু’বেলা করে মক্তব পড়িয়ে প্রাথমিক আরবি বা নূরানী শিক্ষা অনাবাসিকভাবেই দেওয়া যেতে পারে।

মসজিদভিত্তিক মক্তব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকে চিন্তিত। কিন্তু যে শিশুরা মসজিদে যেতো ওরাই তো নূরানী মাদরাসায় আবাসিক হয়ে পড়ছে। তাহলে মসজিদের মক্তবে ছাত্র আসবে কোত্থেকে? মসজিদভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম হারিয়ে গেছে বললেই চলে। স্বল্প খরচের মসজিদভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করে শিশুশিক্ষা সহজ ও নিরাপদ করা সময়ের দাবি। মানুষের ঘরগুলো থিয়েটারে পরিণত হয়েছে। টিভি তো আগেই ছিলো, এখন এন্ড্রয়েড মোবাইল আর ইন্টারনেট এসে বাড়ির প্রতিটি রুমই হয়ে গেছে থিয়েটার। একেকজন একেকটা মোবাইল নিয়ে বসে পড়েছে একেক কোণে। চোখ দুটি মোবাইলে গেঁথে দিয়ে মাথা ঝুঁকিয়ে ধুমসে টিপছে মোবাইল। মা টিপছে, বাবা টিপছে, বড় ভাইবোন টিপছে, শিশু ভাবে আমি বাদ যাবো কেন? কান্নাকাটি জুড়ে দিয়ে সেও শুরু করে ফোন টেপা। শেষে শিশুই হয় ফোন টিপার মাস্টার।

অনেক সময় বড়রাও শিশুর থেকে প্রোগ্রাম শিখে নেয়। ঘরগুলোতে এখন আর পড়ার আওয়াজ বাজে না। আমাদের ছোটকালে বাড়ির প্রতিটি ঘর থেকে সকাল বিকাল পড়ার আওয়াজ উঠতো। প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করার ‘একতালা’ বাজনাটা কানে খুব বাজতো। হাঁটতে হাঁটতে মুখস্থ পড়াটা কেউ পড়ে না। উদ্দমটাই মরে গেছে। ঘরগুলো আবারও পড়ার শব্দে জীবন্ত হোক। আমাদের স্বভাব হলো, কোনো সমস্যা নিয়ে কিছুদিন মাতামাতি করে ‘স্টপ’ হয়ে যাই। আর সমস্যা থেকে যায় তার জায়গায়। কোনো সমাধান টানা হয় না। সুতরাং শিশু নির্যাতন ও নিরাপদ শিশুশিক্ষার একটা বিহিত হোক।

লেখকের ব্লগ

তোফায়েল আহমদ: শিক্ষক, কবি, কলামিস্ট

ক্যাটাগরি: প্রধান কলাম

ট্যাগ: তোফায়েল আহমদ

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply