হঠাৎ করেই দুর্গাপুরে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে কেন, এর প্রতিকারইবা কী- এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সব শ্রেণী-পেশার মানুষের মাঝে। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের অভিভাবকগণ বিষয়টি নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় আছেন।
গত কয়েক বছর আগেও পর্যটন এলাকাখ্যাত নেত্রকোনার দুর্গাপুরের মানুষজনের কাছে আত্মহত্যা শব্দটা ছিলো প্রায় অচেনা, অজানা। এমনকি বছরের পর বছরেও শোনা যেতে না কারো আত্মহত্যার খবর। কিন্তু হঠাৎ করেই দুর্গাপুরে অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে সব ধর্মেই নিষিদ্ধ ভয়ঙ্কর আত্মহত্যার প্রবণতা।
শুধু এ মাসেই সুলেমা খাতুন (৫০) ও পুর্ণিমা মেহতা (৪৮) নামের দুজন আত্মহত্যা করেছে। সর্বশেষ সিলিং ফ্যানের হুকে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে দুর্গাপুর শহরের বাগিচা পাড়ার নাঈম (২০) নামের এক কলেজ ছাত্র। এরও আগে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেন এক সন্তানের জনক প্লাবন সরকার (৩০)। এসব মানুষ তুচ্ছ থেকে তুচ্ছতর কারণে নিজ হাতে নিজপ্রাণ নিঃশেষ করেছেন নৃশংসভাবে; কেউ বিষ খেয়ে, কেউবা গলায় ফাঁস দিয়ে।
হঠাৎ করেই দুর্গাপুরে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে কেন, এর প্রতিকারইবা কী- এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সব শ্রেণী-পেশার মানুষের মাঝে। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের অভিভাবকগণ বিষয়টি নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় আছেন। সমাজ গবেষকগণ মনে করছেন, মানুষের মাঝে সঠিক ধর্মচর্চা না থাকা, টিভি চ্যানেলে বা সামাজিক মাধ্যমে আত্মহত্যা বিষয়ক ইন্ডিয়ান সিরিয়াল দেখা, ধৈর্যক্ষমতা কমে যাওয়া, দরিদ্রতা বেড়ে যাওয়া, ভোগের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়া এবং সে চাহিদা পুরণে ব্যর্থ হওয়া, অনৈতিক সম্পর্ক ও কাজে জড়ানোসহ নানা কারণে হতাশাগ্রস্ত হয়ে মানুষ আত্মহত্যার দিকে ধাবিত হচ্ছে।
আত্মহত্যার প্রবণতা থেকে বাঁচতে মানুষজনকে এসব অনৈতিক কাজ থেকে বেঁচে থাকতে হবে। সঠিক ধর্ম চর্চায় ফিরে আসতে হবে। সব ধর্মে যে আত্মহত্যা নিষিদ্ধ, জঘন্য অপরাধ, আত্মহত্যা মানেই যে সব সমস্যার সমাধান নয় এবং এর কুফল সম্পর্কে সমাজে প্রশাসনিকভাবে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালাতে হবে। তাহলে মানুষ এ বিষয়ে সচেতন হবে এবং আস্তে আস্তে এ প্রবণতা কমে আসবে বলে মনে করছেন তারা। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দুর্গাপুরের আত্মহত্যাগুলোর বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে কয়েকজন সমাজবিশেষজ্ঞ এমনই বলেন।
জুনায়েদ আহমেদ: স্টাফ রিপোর্টার
ক্যাটাগরি: প্রধান খবর, শীর্ষ তিন, সারাদেশ
[sharethis-inline-buttons]