সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় এক অনুষ্ঠানে জাকির নায়েক বলেছেন, ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের চেয়ে শতগুণ বেশি অধিকার ভোগ করে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটির সংখ্যালঘু হিন্দুরা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা ভারত সরকারের চেয়ে মালয়েশিয়ার সরকারকে বেশি পছন্দ করে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এদিকে মালয়েশিয়ায় ধর্ম ও জাতিগত ইস্যু স্পর্শকাতর বলে বিবেচনা করা হয়। দেশটির ৬০ শতাংশ মানুষ মুসলমান আর বাকিরা চীন ও ভারতের নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী। এদের বেশিরভাগই হিন্দু। এমন দেশে জাকির নায়েকের মন্তব্য ঘিরে সমালোচনা মুখর হয়ে উঠেছেন দেশটির মন্ত্রীরা।
ভারতের বিতর্কিত ইসলাম ধর্ম প্রচারক জাকির নায়েকের স্থায়ী আবাসিকতা নিয়ে আলোচনা করেছে মালয়েশিয়ার মন্ত্রিসভা। ওই বৈঠকে চার মন্ত্রী বিতর্কিত এই ধর্মপ্রচারককে মালয়েশিয়া থেকে বাহিষ্কারের দাবি করেছেন। মন্ত্রীদের অভিযোগ, জাকির নায়েক জাতিগতভাবে স্পর্শকাতর মন্তব্য করেছেন।
মন্ত্রিসভায় জাকির প্রসঙ্গে আলোচনা নিয়ে যোগাযোগ ও মাল্টিমিডিয়া বিষয়ক মন্ত্রী গোবিন্দ সিং দেও এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমরা আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি। আর তা হলো, অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে এবং জাকির নায়েককে আর মালয়েশিয়ায় থাকতে দেওয়া যাবে না। প্রধানমন্ত্রী আমাদের উদ্বেগ আমলে নিয়েছেন। বিষয়টি তার ওপর ছেড়ে দিয়েছি আর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব তাকে দেওয়া হয়েছে।
দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী এম কুলাসেগারান বলেন, নায়েক স্থায়ী আবাসিকতার মর্যাদা পাওয়ার যোগ্য নন। পানি, ভূমি ও প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়ক মন্ত্রী জেভিয়ার জয়াকুমার বলেন, জাকির নায়েককে থাকতে দেওয়া হলে মালয়েশিয়ায় জাতিগত ও ধর্মীয় বিভাজন সৃষ্টি হতে পারে।
ভারতের আদালতে অর্থপাচার ও ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর মধ্য দিয়ে জিহাদি কার্যক্রম উদ্বুদ্ধ করার অভিযোগ রয়েছে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে। দিল্লির পক্ষ থেকে তাকে ফেরত পাঠানোর আনুষ্ঠানিক আবেদন করা হলে ২০১৮ সালে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ এ ব্যাপারে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তবে সম্প্রতি তুর্কি সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, জাকিরের কট্টরপন্থী মতবাদ মালয়েশিয়ার ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য হুমকি হলেও অন্য কোনও দেশ তাকে রাখতে চায় না বলেই মালয়েশিয়া তাকে বের করে দিতে পারছে না।
ক্যাটাগরি: প্রধান খবর, শীর্ষ তিন
[sharethis-inline-buttons]