শনিবার দুপুর ১:২৯, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং

আমরা কি এই ইসলাম চেয়েছিলাম?

জাকির মাহদিন

আরো একটি নতুন সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, রাজনীতিতে। ক্ষমতার জন্যও নয়, সামান্য একটি আসনে নির্দিষ্ট দল থেকে মনোয়ন পেতে সমস্ত আদর্শ-উদ্দেশ্য ভুলে যাওয়া, তা আবার ইসলামের নামেই, এমনকি বলা হয় ‘ইসলামি স্বার্থেই’!

ভাষা যেমন নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা পরপর কিছুটা বদলে যায়, তেমনি ইসলাম ধর্মেরও এখন একই অবস্থা। এমনকি বিশ্বব্যাপী ইসলাম ধর্মের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-সংঘাতগুলো এখন খুবই মারাত্মক। শিয়া-সুন্নী-আহমদী-বেরেলভী ইত্যাদি কি কি যেন। বহু বহু ফেরকা (মত ও পথ)। কোনো বৈশ্বিক শৃঙ্খলা নেই, একক নেতৃত্ব নেই।

বাংলাদেশে আরো একটি সমস্যা প্রকট। বিয়ে-শাদীর ক্ষেত্রে সুন্নি-ওয়াহাবী-আহলে হাদীস-মাজহাবী, তাবলীগী (এতায়াতী-ওয়াজাহাতী) ইত্যাদি। খুবই জটিল ও মারাত্মক এক সমস্যা। অথচ এ দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয়, প্রতিমাসে লক্ষ-কোটি টাকা ইনকামকারী হুজুর-মউলানা-শায়খ-মুরশিদের অভাব নাই।

ফেসবুকে অমন শায়খ-মুর্শিদ হাজারে-বিজারে। তাদের লক্ষ লক্ষ লাইকার-ফলোয়ার। ইসলামের নামে কোনো পেইজ, গ্রুপ বা পোর্টাল খুললেই কেল্লা ফতে। তারা কেউ কেউ লোকাল হিরো নয় শুধু, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবেও বেশ বিখ্যাত। নির্দিষ্ট এলাকা, অঞ্চল বা শ্রেণির কাছে তারা ব্যাপক জনপ্রিয়।

সুরেলা চটি বক্তা, খতিব, ওয়ায়েজ, ‘বাতিলের আতঙ্ক’, ‘পীরে কামেল’ সারাদেশে প্রচুর। ইদানিং চটি মিডিয়ায়ও তারা ‘সাফল্যের’ স্বাক্ষর রাখছেন। তাদের তৃপ্তির ঢেকুর শুনলে মনে হবে, ইসলামকে তারা সাহাবাদের চেয়েও বেশি উন্নত করে ফেলেছে। তারা ‘সমাজেও আছে, নমাজেও আছে’। দুনিয়াও খাচ্ছে, আখেরাতও নাকি পাচ্ছে… কি সেলুকাস!

অনেকে মনে করেন, মার খেতে খেতে হয়তো একদিন জ্ঞান ফিরবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, মার কি এ পর্যন্ত কম খাওয়া হয়েছে? সেই ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু, এর আগের কথা না হয় বাদই দিলাম। মার খেয়ে যদি শিক্ষা হতো, তবে দীর্ঘবছর ভারতের কাছ থেকে মার খাওয়ার কথা বাদ দিলেও, অন্তত ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিদের হাতে মার খেয়ে চূড়ান্ত শিক্ষা হয়ে যেতো।

ইদানিং এ দেশে আরো একটি নতুন সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে; রাজনীতিতে। ক্ষমতার জন্যও নয়, সামান্য একটি আসনে নির্দিষ্ট দল থেকে মনোয়ন পেতে সমস্ত আদর্শ-উদ্দেশ্য বিলিয়ে দিচ্ছে। তা আবার ইসলামের নামেই, এমনকি বলা হয় ‘ইসলামি স্বার্থেই’!

আর কত খেলা দেখবে বাঙালি জাতি? আর কত প্রতারণার শিকার হবে? তাও যদি হয় আবার ধর্মের নামে, তা কি মেনে নেয়া যায়? চোখের সামনে এখন যে ইসলাম দেখছি, আমরা কি এই ইসলাম চেয়েছিলাম?

অনেকে মনে করেন, মার খেতে খেতে হয়তো একদিন জ্ঞান ফিরবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, মার কি এ পর্যন্ত কম খাওয়া হয়েছে? সেই ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু, এর আগের কথা না হয় বাদই দিলাম। মার খেয়ে যদি শিক্ষা হতো, তবে দীর্ঘবছর ভারতের কাছ থেকে মার খাওয়ার কথা বাদ দিলেও, অন্তত ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিদের হাতে মার খেয়ে চূড়ান্ত শিক্ষা হয়ে যেতো।

ক্যাটাগরি: মিনি কলাম

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply