ধর্মের মূল আদর্শের পথকে অনুসরণে প্রয়োজন জ্ঞান-গবেষণা, চিন্তা ও যাচাই বাছাই করে নিজের ভিতরে মানবীয় গুণ জাগিয়ে তোলার চেষ্টা এবং বিশ্বমানবতার কল্যাণ কামনায় অগ্রগামী হওয়ার চেষ্টা করা।
ভাই আপনি কোন্ দল বা দলের অনুসারী? একটি প্রশ্নের বা শ্রেণীবিন্যাসের কারণে আজ ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র বা বিশ্ব অখণ্ডতা থেকে খণ্ড খণ্ড দলে বিভক্ত হয়ে যাচ্ছে । যে কারণে আজ মুসলিম সমাজে এত অন্তর্কোন্দল ।
দেখতে সুদর্শন বা বিলাসী চাকচিক্য প্রদর্শন করে কিছু মনগড়া ধর্মকাহিনি উপস্থাপন করে বা নতুন কিছু ফর্মুলা সমন্বয় করে উপস্থাপন করলে অথবা কোনো নির্দিষ্ট একটি বা দুটি বিশেষ আমল বা কর্ম অনুশীলন বা প্রচারণা দ্বারাই দল বিভক্ত হয়ে যাচ্ছে। যা বিশ্বধর্ম ও বিশ্বমানবতার চরম পরিপন্থী বা মূল ধর্ম থেকে অনেক দূরে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
ব্যক্তি বা দলীয় পর্যায়ে নিজস্ব মত ও দাবি যেমন ‘আমরাই নেক ও সঠিক’- এ দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করা তো সমাজে ভয়াবহ কট্টরপন্থী মানসিকতা তৈরি করছে, যা স্রষ্টার নির্দেশের পরিপন্থী। যেখানে স্রষ্টা বলেন, দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের প্রতি রাকাতে তেলাওয়াতে চাইতে এবং স্বীকৃতিস্বরূপ সবাই একবাক্যে স্রষ্টার কাছে চাইছে “ইহদিনাস সিরাতাল মুসতাকিম” (অনুবাদ : আমাদের সরল পথ দেখান); সেখানে এই মত ও দাবি কতটুকু ইসলামসম্মত ও যৌক্তিক তা চিন্তার অবকাশ রাখে।
বিভিন্ন দিক থেকে আসা সমস্যা নির্ণয় ও সমাধান কট্টরপন্থী মনোভাব পোষণ করা দ্বারা পরিবর্তন কীভাবে সম্ভব? এখন সমাজে উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীরা মূল ধর্ম বা ধর্মের চিন্তা অনুশীলন, ধর্মকেন্দ্রিক বিশ্বমানবতা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।
স্রষ্টা তার শেষ নবী ও রসূল হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর মাধ্যমে ধর্মের পূর্ণাঙ্গতা প্রকাশ করে পরিবর্তন পরিবর্ধন সম্পূর্ণ রহিত করে দিয়েছেন, যেখানে রসূল ও তার সাহাবীদের আদর্শ ও জীবনব্যবস্থা পুরো বিশ্বমুসলিম তথা বিশ্ব মানবতা ও প্রচার প্রসারে আদর্শ, সেখানে এই শ্রেণীবিভাগের ও মানসিকতা পোষণ করার সুযোগ কোথায়?
বিভিন্ন দিক থেকে আসা সমস্যা নির্ণয় ও সমাধান কট্টরপন্থী মনোভাব পোষণ করা দ্বারা পরিবর্তন কীভাবে সম্ভব? এখন সমাজে উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীরা মূল ধর্ম বা ধর্মের চিন্তা অনুশীলন, ধর্মকেন্দ্রিক বিশ্বমানবতা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, বর্তমানে জন্মসূত্রে মুসলিম অধিকাংশ স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি ছাত্রছাত্রীরা এই বিষয়ের প্রতি আগ্রহী নয়।
মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করতে গেলে বলা যায়, নানান দলের বিভক্তি তাদের মানসিকতাকে বিভ্রান্ত করে এবং যাচাই-বাছাই, চিন্তাশক্তিকে ব্যাহত করে ধর্মের প্রতি নৈরাশ্য তৈরি করছে। যেখানে বিশ্বের অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরা তাদের ধর্মীয় গবেষণা ও বিশ্বমানবতার নামে অগ্রগামী, সেখানে মুসলিম ধর্মের গবেষণা ও মানবীয় গুণাবলী ও সর্বজনীন মানবতার চেতনা চাপা পড়ছে ধর্মব্যবসায়ীদের কাছে।
ধর্মের মূল আদর্শের পথকে অনুসরণে প্রয়োজন জ্ঞান-গবেষণা, চিন্তা ও যাচাই বাছাই করে নিজের ভিতরে মানবীয় গুণ জাগিয়ে তোলার চেষ্টা এবং বিশ্বমানবতার কল্যাণ কামনায় অগ্রগামী হওয়ার চেষ্টা করা।
সরকার জুম্মান : যাত্রাবাড়ি, ঢাকা
ক্যাটাগরি: মিনি কলাম
[sharethis-inline-buttons]