অন্যের বউ-জামাই, ছেলে-মেয়ে নিয়ে আমাদের বাঙালিদের যতটা মাথাব্যাথা, তার এক অংশও যদি সমাজের অন্য সমস্যাগুলো নিয়ে থাকতো তবে অনেক সমস্যা থেকে আমাদের মুক্তির পথ খুলে যেতো। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে-মেয়ে তাদের জীবন কীভাবে কাটাবে সেটা একান্তই তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার, তাতে আপনাদের এতো মাথা ব্যাথা কেন? তারা তো পাবলিকপ্লেসে এসে কোন কিছু করেনি বরং নিকৃষ্ট জন্তুর মতো তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা আপনারা ভেঙ্গেছেন।
আরো পড়ুন> আলেমদের মনগড়া ধর্মীয় ব্যাখ্যা
কেউ কেউ এটাকে আদিমতা বলেছে দেখলাম। তা ভাই আমার খুব জানতে ইচ্ছে, আপনারা কোন আধুনিক পদ্ধতিতে জন্ম নিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে জন্ম দেবেন? আমরা বাঙালিরা মনে করি আমরা প্রত্যেকেই ধুয়া তুলসিপাতা আর অন্যেরা সব বিচুটি পাতা। একজনকে দেখলাম প্রশ্ন করতে, কেন তাহসান-মিথিলার ঘর ভাঙলো এটাই নাকি সে মানতে পারেনি। এটা অন্যায় হয়েছে, কি অদ্ভুত মানসিকতা চিন্তা করুন। সংস্যার ভাঙা বা গড়া, সেটাও লোকের কথায় করতে হবে? যদিও পৃথিবীতে কোন স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভাঙার পক্ষে আমি নই। কিন্তু তারপরও কেউ একসাথে থাকবে না আলাদা হবে সেটা তাদের একান্ত ব্যাক্তিগত ব্যাপার।
“পাশের দেশের চাঁদ অভিযানের ব্যর্থতা নিয়ে তো গড়াগড়ি খেলেন হাসতে হাসতে। কিন্তু নিজেরা যে আজ পর্যন্ত পরের ঘরের কুৎসা রটানো ছাড়া আর কিছুই করতে পারেননি সে খবর নিলেন না। সারা পৃথিবী চলছে একদিকে, আর আমরা আরেকদিকে। সারাদিন তো দেশের উন্নয়ন আর মুক্তি নিয়ে চেঁচাচ্ছেন, কিন্তু দেশের উন্নয়ন বা গণতন্ত্রের মুক্তির কথা ভাবার আগে নিজেদের মানসিকতার উন্নয়ন করুন এবং নিজেদের কুৎসিত মানসিক বিকারগ্রস্থতা থেকে নিজেদের মুক্ত করুন।”
তেমনি এটাও তাদের ব্যাক্তিগত বিষয়- তারা নতুন কোনো সম্পর্কে জড়াবে কি না। তাছাড়া তারা যদি ভুল জীবন যাপন করেও, তার ফল তারাই ভোগ করবে। কিন্তু সেটা নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা করতে গিয়ে বা ভাবতে গিয়ে আপনারা যে সমাজকে নোংরা মেসেজ দিচ্ছেন তার দায়ভার কে নেবে?
লেখকের সব কলাম
আমাদের এই অনলাইন জগতে বহু উঠতি বয়সের ছেলেমেয়ে আছে, তারা যে এই ছবিগুলো দেখছে তাদের কাছেই বা কী মেসেজ পৌঁছাচ্ছে? এগুলো তাদের উপর কি বিরূপ প্রভাব পড়বে ধারণা আছে আপনাদের? ব্যক্তিগত ডাস্টবিন হোক অথবা পাবলিক- দুটোর মুখ বন্ধ রাখাই সামাজিক দায়িত্ব। কারণ তাতে যে গন্ধ বের হয় তা দুর্গন্ধের জীবাণু, সুগন্ধি আতর নয়। খারাপ খবর খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করে, ভালো নয়। আর এ ধরনের সম্পর্ক যেখানে বৈধভাবেই গোপনীয় রাখা নিয়ম, সেখানে একটা অবৈধভাবে সামনে আনা কতটা মানসিক বিকারগ্রস্ততার কাজ ধারণা আছে আপনাদের?
“আমাদের এই অনলাইন জগতে বহু উঠতি বয়সের ছেলেমেয়ে আছে, তারা যে এই ছবিগুলো দেখছে তাদের কাছেই বা কী মেসেজ পৌঁছাচ্ছে? এগুলো তাদের উপর কি বিরূপ প্রভাব পড়বে ধারণা আছে আপনাদের?”
পাশের দেশের চাঁদ অভিযানের ব্যর্থতা নিয়ে তো গড়াগড়ি খেলেন হাসতে হাসতে। কিন্তু নিজেরা যে আজ পর্যন্ত পরের ঘরের কুৎসা রটানো ছাড়া আর কিছুই করতে পারেননি সে খবর নিলেন না। সারা পৃথিবী চলছে একদিকে, আর আমরা আরেকদিকে। সারাদিন তো দেশের উন্নয়ন আর মুক্তি নিয়ে চেঁচাচ্ছেন, কিন্তু দেশের উন্নয়ন বা গণতন্ত্রের মুক্তির কথা ভাবার আগে নিজেদের মানসিকতার উন্নয়ন করুন এবং নিজেদের কুৎসিত মানসিক বিকারগ্রস্থতা থেকে নিজেদের মুক্ত করুন। তাতে সবচেয়ে বেশি উপকার হবে সমাজের।
জান্নাতুল মাওয়া ড্রথি : কলামিস্ট
ক্যাটাগরি: মিনি কলাম
[sharethis-inline-buttons]
Shondor