‘ধামাকা’র অনুসারীরা প্রয়োজনে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা- সব ভুলে গিয়ে হলেও মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে থাকতে রাজি আছেন। জীবনে ভালো কিছু করা, জ্ঞান ও স্বাবলম্বিতা অর্জনের প্রয়াস- সবকিছুই এই ‘ধামাকা’র মোহের কাছে হার মানে।
বর্তমানে বিশ্বায়নের যুগ- অবাধ তথ্য প্রবাহ। আজ বিশ্ববিখ্যাত জনাব ‘অমুক’ একটা কথা বললে মুহূর্তের মধ্যে তা উত্তর মেরুতেও পৌছে যাবে। মানুষকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখার কাজটা এখন অনেক সহজ; টিভি, সিরিয়াল, সিনেমা, পপ মিউসিক- এসবে বিশ্বাসী অনেকেই একসাথে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে থাকেন। এতে নাকি মানুষে মানুষে বন্ধন দৃঢ় হয়।
বিশ্বব্যাপী বন্ধন দৃঢ় হয় এরকম ‘ধামাকা’র উদাহরণ আরো আছে। অলিম্পিক, ফুটবল, ক্রিকেট, দাবা ইত্যাদি। এ তো হল খুশির খবর! অন্যদিকে এরকম আরো একটি জিনিস আছে, যাতে বিশাল পরিমাণ জনগোষ্ঠী একইসাথে মোহিত থাকে।
এই ‘ধামাকা’র অনুসারীরা প্রয়োজনে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা- সব ভুলে গিয়ে হলেও মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে থাকতে রাজি আছেন। জীবনে ভালো কিছু করা, জ্ঞান ও স্বাবলম্বিতা অর্জনের প্রয়াস- সবকিছুই এই ‘ধামাকা’র মোহের কাছে হার মানে।
এই মোহটি এতই গভীর, মস্তিস্ক-বিজ্ঞানীরাও কুলকিনারা করতে পারেন না যে এই ‘ধামাকা’র কারণে মস্তিষ্কের কোন্ কো্ অংশ নিস্তেজ হতে থাকে; আর কোন্ কো্ অংশ অতিমাত্রায় সতেজ হতে থাকে।
এর অনুসারীদের মধ্যেও বন্ধনের দৃঢ়তা লক্ষ্য করা যায়। এরা একজন আরেকজনের দরদ বোঝে, একজন ডাকলে আরেকজন ছুটে যায়। শুধু ডাকলেই হয়। তারা একে অপরের মনের ভাষা, ইঙ্গিতমাত্রই বোঝে, বেশি কথার প্রয়োজন নাই।
আরো পড়ুন> সাংবাদিকতার ল্যাঠা : ‘অতিগুরুত্বপূর্ণ’ নিউজ
এই মোহটি এতই গভীর, মস্তিস্ক-বিজ্ঞানীরাও কুলকিনারা করতে পারেন না যে এই ‘ধামাকা’র কারণে মস্তিষ্কের কোন্ কো্ অংশ নিস্তেজ হতে থাকে; আর কোন্ কো্ অংশ অতিমাত্রায় সতেজ হতে থাকে।
এই ‘ধামাকা’টিকে ইউরোপের অনেক দেশ এবং আমেরিকার হলিউডসহ কিছু জায়গায় সরকারি অনুমোদনে কেনা-বেচা, লালন-পালন এবং চর্চা-বিকাশের ব্যবস্থা রয়েছে।
আমি মনে করি, একদিন এই ‘ধামাকা’য় বিশ্বাসীদের মোহিত হওয়াটাকে তাদের আইনি অধিকার হিসেবে গণ্য করা হবে, “মানবাধিকারের” অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এই ‘ধামাকা’র নাম মাদক।
জুনায়েদ গালিব : প্রবাসী, যুক্তরাষ্ট্র
ক্যাটাগরি: মিনি কলাম
[sharethis-inline-buttons]