“আমার নারিত্ব আমার অহংকার, যাকে আলাদা করে চাওয়ার প্রয়োজন নেই। তাই আমার কাছে নারীর কোনো দিবস নেই। যে নারীকে ছোট করে, সে সেই সহস্য কোটি ভ্রুণের সাথে যুদ্ধ করে জয়ী হওয়া ভ্রুণকে ছোট করলো। নারীর জায়গা বিস্তর।”
নারী-পুরুষের সমান অধিকার চেয়ে স্লোগান দেওয়া হয়ে উঠেনি কখনো। অথবা জিন্সের প্যান্ট আর টি-শার্ট পরে বলা হয়নি কোনো পুরুষকে যে, তোমার সাথে আমার আর তফাত নেই বা “আমি আর তুমি দুজনে এক”। কারণ আমি নিজেও জানি, সে আর আমি এক নই। আবার আমার সাফল্য আর তার অক্ষমতাকেও জানি। হাজার ভ্রুণের সাথে যুদ্ধ করে বিজয়ী হওয়া ভ্রুণটাকে তো লালন-পালন আমিই করি। আর শতাব্দীর পর শতাব্দী তার বিস্তার করে বেড়াই। এর মাঝে আবার কেউ কেউ মহামানবের তকমাটাও পেয়ে যায়। তাই আমি নারী, আমার নারিত্ব আমার গর্ব।
যা হোক, নিজের কথায় আসি। পুরুষত্ব জাহির করা পুরুষ দূর থেকে অনেক দেখেছি। কিন্তু সেই পুরুষের ভীড়ে দাঁড়িয়ে নিজেকে জাহির করা প্রকৃত পুরুষের দেখা ব্যক্তিজীবনে আজো দেখা হয়নি। মেয়ে বলে তুমি এটা পারবে না বা ওটা পারবে না- এমন কথাও শোনা হয়নি কখনো। বাসার পুরুষ সদস্যের জন্য মাছের মাথা আর মেয়ে হবার জন্য মাছের কাটা- সেই অবস্থাও দেখা হয়নি কখনো।
আরো পড়ুন> সন্তানের অভিভাবকত্ব প্রশ্নে কেন নারীর সমঅধিকার নয়?
কেউ কোনদিন বলেনি “বাইরে যেয়ো না”, বরং মেয়ে হয়েও শুনেছি “দুনিয়াতে হোঁচট খেয়ে হলেও দুনিয়া দেখো”। পুরুষকে টেক্কা দিয়ে নয়, পুরুষের সাথে চলা হচ্ছে নারী। অত্যাচারী- সে হোক পুরুষ বা নারী, তাকে অত্যাচারের জবাব দেওয়া হচ্ছে নারী। বাবা-মায়ের ছায়া আর বাবা-মা-ভাই-স্বামী-সন্তান সবার সম্মান রক্ষার নাম নারী। আপনের পাশে ঢাল হয়ে থাকার নাম নারী। যেখানে একটা ভ্রুণকে লালন-পালন করে পৃথিবীতে আনা থেকে শুরু করে মৃত্যু অবধি নারীর ভুমিকা, সেখানে সেই নারীকে দিবসে টেনে একটা দিন উদযাপন করা তো সেই নারীকে ছোট করার সমান।
“পুরুষের ভীড়ে দাঁড়িয়ে নিজেকে জাহির করা প্রকৃত পুরুষের দেখা ব্যক্তিজীবনে আজো দেখা হয়নি। মেয়ে বলে তুমি এটা পারবে না বা ওটা পারবে না- এমন কথাও শোনা হয়নি কখনো। বাসার পুরুষ সদস্যের জন্য মাছের মাথা আর মেয়ে হবার জন্য মাছের কাটা- সেই অবস্থাও দেখা হয়নি কখনো।”
আমার নারিত্ব আমার অহংকার, যাকে আলাদা করে চাওয়ার প্রয়োজন নেই। তাই আমার কাছে নারীর কোনো দিবস নেই। যে নারীকে ছোট করে, সে সেই সহস্য কোটি ভ্রুণের সাথে যুদ্ধ করে জয়ী হওয়া ভ্রুণকে ছোট করলো। নারীর জায়গা বিস্তর। তাই নারী তার নিজগুণে গুণান্বিত।
লেখকের সব লেখা
আমি নারী তুমি পুরুষ অথবা তুমি পুরুষ আমি নারীতে নয় বরং নিজেকে পরিচিত করো মানুষ হিসেবে। কারণ এই যুগে নারী-পুরুষের মাঝে ভিন্নতা নেই। ভিন্নতা আছে মানুষের মাঝে। নারী-পুরুষ স্রষ্টার দান। তাই এই নিয়ে বিভেদও স্রষ্টাকে অপমান। নারী-পুরুষের ভেদ মানুষ বা পশু দুটোতেই আছে যা অপরিবর্তনীয়। কিন্তু সবাই চাইলেই মানুষ হতে পারে না। তাই মানুষ হও আর মনুষ্যত্ব ধারণ করো হে মানুষ, সে তুমি হও নারী হও বা পুরুষ।
এডভোকেট জান্নাতুল কারার তিথি : ঢাকা জজকোর্ট
ক্যাটাগরি: মিনি কলাম
[sharethis-inline-buttons]