ঠাকুরগাঁওয়ের উৎপাদিত মোজ্জারেলা চীজ যাচ্ছে দেশের
বিভিন্ন স্থানে। শহরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ফাস্টফুডের সাথে যে চীজ আমরা খাই; সে সকল পনীর দুধ থেকে চীজ তৈরি করে বাজারজাত করা হচ্ছে ঠাকুরগাঁও
থেকে। সদর উপজেলার সালন্দরে “এমিনেন্ট এগ্রি ইন্ডাষ্ট্রি” নামে ওই কোম্পানী পরিচালনা করছেন নারী উদ্যোক্তা নাগিনা নাজনিন কেয়া। স্থানীয় দুদ্ধ খামারীদের
কাছ থেকে দুধ কিনে তা প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে চীজ তৈরী করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েচ্ছেন এ কারখানাটি। দেশের চাহিদা পূরন করে এমিনেন্টের
উৎপাদিত চীজ বিদেশেরও রপ্তানীর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানা যায়। এমিনেন্ট এগ্রি-ইন্ডাষ্ট্রিজ এর পরিচালক নাগিনা নাজনিন কেয়া বলেন, ১৯৯২
সালে আমার বাবা হুমায়ুন রেজা এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন। শুরুর দিকে হ্যাডস নামক এন.জি.ও দ্বারা পরিচালিত একটি প্রকল্প থাকলেও বর্তমানে এর পরিধি
ব্যাপক। প্রকল্পটির মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল পল্লী কৃষকদের দুগ্ধ এবং কৃষিজাত পন্যগুলির বিকাশ সাধনের মাধ্যমে তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থান উন্নয়নে সহায়তা করা।
ওই সময় ফ্যাক্টরিতে দুধ নেওয়ার ফলে ক্ষুদ্র, প্রান্তিক ও ভূমিহীন দুগ্ধ উৎপাদনকারীগণ ন্যায্য মূল্যে দুধ বিক্রি করতে পারতো। ডেনমার্ক থেকে অভিজ্ঞ দুজন শিক্ষানবীশ
এনে তিন জন মহিলাকে মোজ্জারেলা চীজ তৈরীর প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে উৎপাদন শুরু করা হয়। ৯৮ সালে একটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রদানের মাধ্যমে সোনারগাঁও
হোটেলে ৫০ কেজি চীজ দিয়ে প্রথম বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়। দাবি করা যায় এটিই বাংলাদেশের সর্বপ্রথম মোজ্জারেলা চীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।
এ প্রতিষ্ঠান চীজের পাশাপাশি ঘি, মাখন, দই ও বিভিন্ন কৃষিজাত পন্য বিক্রি করে থাকেন।
গতকাল সোমবার কারখানায় গিয়ে জানা যায়, কারখানাটি পুরাতন স্থান থেকে সরিয়ে নতুন স্থানে স্থাপন করে উৎপাদন শুরু করা হয়েছে। আপাতত করোনার কারনে ৭/৮ জন কর্মচারী দিয়ে উৎপাদন কার্যক্রম চলমান আছে। তবে পুরোদমে উৎপাদন শুরু
হতে আরও মাসখানিক সময় লাগবে বলে জানান কারখানা কর্তৃপক্ষ। ফ্যাক্টরিতে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাইসাইকেল, ভ্যান, ইজিবাইক,মটরবাইকে করে দুধ এনে দিচ্ছেন খামারীরা। বর্তমানে এই চীজ কারখানাকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি দুগ্ধ খামার গড়ে উঠেছে বলে জানা যায়। কারখানায় দুধ সরবরাহের ফলে দুগ্ধ খামারীদের দু:খ-দুর্দশা, হয়রানী ও কষ্ট অনেকাংশে লাঘব হয়েছে।
সদর উপজেলার গড়েয়া এলাকার দুদ্ধ খামারী সাধন দাস ও হরিসাধনসহ বেশ কয়েকজন দুধের ব্যাবসায়ী জানান, আগে শহরের বিভিন্ন হোটেল ও বাসা-বাড়িতে দুধ দিত
তারা; দুধের দাম বাকি পরে থাকতো দীর্ঘদিন। বর্তমানে এ ফ্যাক্টরিতে দুধ নিয়ে আর ঝামেলায় পরতে হয় না। এখানেই প্রতিদিন দুধ দিয়ে সাথে সাথেই ন্যর্য্য মূল্য
নিশ্চিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা।
সালন্দর ইউপি চেয়ারম্যান মাহাবুব আলম মুকুল বলেন, নারী উদ্যোক্তা নাগিনা নাজনিন কেয়ার কারখানাটি ইতিমধ্যে পরিদর্শন করেছি। সেখানে গিয়ে দেখা
যায় ৬/৭ জন নারী কমর্ী দিয়ে উৎপাদন করা হচ্ছে চীজ। নারীদের কর্মসংস্থান ও উন্নতমানের চীজ উৎপাদন ও তা দেশে-বিদেশে বাজারজাতকরণনের মাধ্যমে এলাকার সুনাম সর্বত্র ছড়াচ্ছে এবং ঠাকুরগাঁও জেলা নতুন করে পরিচিতি লাভ করছে। আমি এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানকে সাধুবাদ জানাই।
Some text
ক্যাটাগরি: মতামত
[sharethis-inline-buttons]