শনিবার রাত ১১:০৩, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

অগ্রগতি-উন্নয়ন সম্পর্কে ‘ইসলামি আফগানিস্তানের’ বিবৃতি

৩৬৬ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

নোমান আরাফাত:

দেশে সর্বশেষ অগ্রগতি ও উন্নয়ন সম্পর্কে ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের বিবৃতি: প্রিয় জন্মভুমিতে আমাদের সর্বশেষ অগ্রগতি ও উন্নয়ন সম্পর্কে আমরা নিচের ঘোষণা করছি

১। ইসলামী ইমারাতের নিয়ন্ত্রণে আসা অঞ্চল এবং প্রদেশগুলোই হচ্ছে আফগান জনগণের মাঝে ইসলামী ইমারাতের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতার সবচেয়ে স্পষ্ট নিদর্শন। মহাক্ষমতাবান আল্লাহ্‌ তাআলার সাহায্য ব্যতীত এবং আমাদের জাতির বিশাল ও উদাত্ব সমর্থন ছাড়া আমাদের পক্ষে এমন বিশাল বিজয় এতো দ্রুত সময়ে অর্জন করা সম্ভব ছিল না। তাই আমাদের ভাষা ও কাজের মাধ্যমে সকলকে আমরা ধন্যবাদ জানাতে চাই।

২। ইমারাতে ইসলামিয়া আবারো তার জনগণকে এই নিশ্চয়তা দিচ্ছে যে, সবসময়ের মতোই তারা জনগণের জীবন, সম্পদ ও সম্মানের নিরাপত্তা দিয়ে যাবে এবং এই জাতির জন্য একটি শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করবে। এক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তিরই নিজ জীবন নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই।

৩। কোষাগার, নাগরিক সুবিধা সরকারী কার্যালয়সমূহ, সরকারী কার্যালয়ের যন্ত্রপাতি, পার্ক, রাস্তাঘাট, সেতু – এগুলোর প্রতি মুজাহিদদের এখন সব থেকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। এগুলো সব হচ্ছে জনগণের বিশ্বাস ও সম্পদ; এগুলোর প্রতি কোনো ধরনের ব্যক্তিগত আবেগ বা অবজ্ঞা প্রদর্শন করা যাবে না, বরং এগুলোর জন্য কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

৪। যেসকল ব্যক্তি ইতিপূর্বে দখলদার বাহিনীর পক্ষে কাজ করেছে বা তাদেরকে সহযোগিতা করেছে, অথবা এখনো যারা দুর্নীতিবাজ কাবুল প্রশাসনের পক্ষে অবস্থান করছে, ইসলামী ইমারাত তাদের জন্য নিজের দরজা উন্মুক্ত করে রেখেছে এবং তাদের জন্য নিরাপত্তার ঘোষণা দিয়েছে। আমরা তাদেরকে দেশ ও জাতির সেবায় এগিয়ে আসার জন্য আবারো আহবান জনাচ্ছি।

৫। সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিবর্গ- যারা ইসলামী ইমারাতের সাথে যোগদান করবে, তাদের চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই, কেননা ভবিষ্যতে জাতির সেবার লক্ষে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে তাদেরকে নিজ মেধা ও যোগ্যতা অনুযায়ী উপযুক্ত পদে নিয়োগ দিতে ইসলামী ইমারাত বদ্ধপরিকর।

৬। যেসকল এলাকা ইসলামী ইমারাতের নিয়ন্ত্রণাধীন রয়েছে, সেখানে জনগণ তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন করবে, বিশেষ করে – শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক বা সংস্কৃতির মতো দাপ্তরিক ক্ষেত্রগুলোতে নিয়োজিতরা। কাউকেই নিজ দেশ বা এলাকা ছেড়ে যেতে হবে না। তারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করবে; আমাদের দেশ ও জাতির সেবার প্রয়োজন, এবং আফগানিস্তান হলো আমাদের সম্মিলিত ঘর, যা আমরা একসাথে নির্মাণ করবো ও এর সেবা করে যাব।

৭। সম্প্রতি কাবুল সরকার ধারাবাহিকভাবে কিছু ভিত্তিহীন ও চক্রান্তমূলক প্রোপাগান্ডা চালিয়েছে, যার মাধ্যমে তারা কিছু দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করেছে। সেখানে ইসলামী ইমারাতকে তারা এমন সব অপরাধের জন্য দায়ী করছে, যে অপরাধগুলো মূলত ঘটিয়েছে তারা নিজেরাই, অথবা ঘটিয়েছে তাদের সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা বাহিনীগুলো। এসবের পাশাপাশি তারা সময়ে সময়ে ইসলামী ইমারাত ও এর নেতা বা কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে ভুয়া ঘোষণাপত্র প্রচার করেছে। মিথ্যা ও বাস্তবতা-বিবর্জিত এই প্রোপাগান্ডাগুলো যৌক্তিকতার দাবিতেই গ্রহণযোগ্য নয়। মাঝে মাঝে তারা এমন কথাও বলেছে যে, ইসলামী ইমারাত লোকদেরকে জোড় করছে তাদের মেয়েদেরকে বিয়ে করার জন্য, অথবা তাদেরকে মুজাহিদগণের সাথে বিয়ে দিতে জবরদস্তি করছে। আবার তারা এমনটাও প্রচার করেছে যে মুজাহিদগণ সাধারণ মানুষ, বন্দী ও আটক ব্যক্তিদের হত্যা করছে। এছাড়াও তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে এমন সব অভিযোগ করছে যেগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

৮। ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান কারো ব্যক্তিগত সম্পদের প্রতি আগ্রহী নয়, ( যেমন কারো গাড়ি, জমি বা বাড়িঘর, কারো মার্কেট বা দোকান ইত্যাদি) বরং ইসলামী ইমারাত জাতির জান-মাল-ইজ্জত রক্ষা করাকে নিজের সর্বপ্রথম কর্তব্য মনে করে।

৯। যারা ইতোমধ্যে শত্রুর প্রোপাগান্ডার শিকার হয়েছেন, অভ্যন্তরীণভাবে যারা বাস্তুচ্চুত হয়েছেন, অথবা যারা ভিন্ন দেশে স্থানান্তরিত হয়েছেন – সে প্রশাসনিক ব্যক্তিই হোক বা সাধারণ নাগরিক – তাদের এখন উচিৎ নিজ বাড়ি ও এলাকায় ফিরে যাওয়া; তাদের সেখানে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না। আমরা তাদের জীবন-সম্পদ ও সম্মানের নিরাপত্তা দান করবো।

১০। ইসলামী ইমারাত তার মুজাহিদদের নির্দেশ দিয়েছে এবং আরও একবার নির্দেশনা জারি করেছে যে, অনুমতি ছাড়া কেউ কারো বাড়িতে ঢুকতে পারবে না। কারো জীবন-সম্পদ বা সম্মানের জন্য ক্ষতির কারণ না হয়ে বরং মুজাহিদদের দ্বারা যেন সেগুলো নিরাপত্তা পায়।

১১। শত্রু সম্ভবত মুজাহিদদের নাম করে কিছু লোক নিয়োগ দিয়েছে, যারা জনসাধারণকে হেনস্থা করাসহ তাদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে। এক্ষেত্রে জাতি ও জনগণের উচিৎ অভিযোগ ও সমস্যা সংক্রান্ত কমিশনকে বিষয়টি জানাতে মুজাহিদগণকে সাহায্য করা।

১২। ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও বিনিয়োগকারীদের প্রতি আমাদের বার্তা হলো, তারা যেন তাদের ব্যবসা স্বাভাবিকভাবে চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে দেশের সেবা করে। ব্যবসায়ীদের জন্য ইসলামী ইমারাত ব্যবসায়ের নিরাপদ ও অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করবে, এবং ইসলামী ইমারাত তার সক্ষমতা অনুযায়ী তাদেরকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করবে।

১৩। আবারো আমরা আমাদের সকল প্রতিবেশীকে এই নিশ্চয়তা দিচ্ছি যে, তাদের জন্য আমরা কোনো ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করবো না, এ ব্যপারে তাদের ভরসা রাখা উচিৎ। আমরা দেশি-বিদেশি সকল কূটনীতিক, দূতাবাস, কনস্যুলেট এবং দাতব্য সংস্থার কর্মীদের এই নিশ্চয়তা দিচ্ছি যে, ইসলামী ইমারাত তাদের কোনো ক্ষতি করবে না – শুধু তাই নয় – বরং তাদের জন্য নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তাপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করবে। ইনশাআল্লাহ্‌।

Some text

ক্যাটাগরি: মতামত

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি