শনিবার রাত ১০:২৭, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে ব্যবসায়ীদের সমস্যা হবে না: প্রধানমন্ত্রী

দেশ দর্শন ডেস্ক

আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, ততদিন ব্যবসায়ীদের কোনো ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ যেন সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে চলতে পারে-সে লক্ষ্যে এ দেশকে একটি ক্ষুধা ও দরিদ্রমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে তার সরকার তৃণমূল মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘যদি আমরা একটি দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়তে চাই, তবে আমাদের সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা যদি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে বাড়ানোর পাশাপাশি শিল্পায়নের দ্রুত বিস্তার ঘটাতে চাই, তবে আমাদের নিজস্ব বাজার সৃষ্টি করতে হবে। আর এ জন্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানো জরুরি।’

প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি ‘বেসরকারি তহবিলের মাধ্যমে বাড়ি নির্মাণ’ ও ‘করোনাভাইরাস সহায়তা তহবিল’র জন্য অনুদান গ্রহণকালে এসব বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তার পক্ষ থেকে মুখ্য সচিব বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংগঠন ও ব্যক্তির কাছ থেকে অনুদানের চেক গ্রহণ করেন।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, প্রত্যেক গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষকে আশ্রয় দেওয়া এবং করোনাভাইরাসের অভিঘাত থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করার লক্ষ্যে তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট থেকে পাঁচ কোটি টাকা প্রদান করে এই তহবিল শুরু করেছেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘করোনভাইরাস মহামারী দেশের অর্থনীতিকে ব্যহত করেছে। আমাদের এ বৈশ্বিক মহামারির অভিঘাত থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করতে হবে এবং আমরা এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, একটি উন্নত দেশ উপহার দেওয়ার স্বপ্ন নিয়ে জাতির পিতা আমাদের দেশকে স্বাধীন করেছিলেন- যাতে এ দেশের জনগণের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষা নিশ্চিত হয়। সরকার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

দায়িত্ব গ্রহণের পর আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে এ দেশ তার সম্মান হারিয়ে ফেলেছিল এবং এ হত্যাকাণ্ডের পর পূর্ববর্তী সরকারগুলো দেশের গৌরব ও সম্মান পুনরুদ্ধারে কিছুই করেনি।

তিনি বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। আমাদের একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে টিকে থাকতে হবে। আর এ লক্ষ্যে আমাদের বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আত্মমর্যাদার সঙ্গে আরো সামনে এগিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি, একটি বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বের দরবারে আমাদের মাথা উঁচু করে চলতে হবে।’

সংবিধানের ১৫ ধারার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করে সামনে এগিয়ে নিতে সরকারি ও বেসরকারি খাত সমান গুরুত্বপূর্ণ।

‘বেসরকারি অর্থে গৃহনির্মাণ তহবিলে’ শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন যেসব প্রতিষ্ঠান অবদান রেখেছে সেগুলো হলো বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি), বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক), বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল কর্পোরেশন (বিএসইসি), বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই), বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স সেন্টার (বিআইটিএসি), বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট (বিআইএম), ডিপার্টমেন্ট অব প্যাটেন্ট, ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেডমার্কস (ডিপিডিটি), বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড (বিএবি), ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও), অফিস অব দি চীফ ইন্সপেক্টর অব বয়লার্স এবং এসএমই ফাউন্ডেশন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়; নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, কর্ণফুলি শিপ বিল্ডার্স লিমিটেড এবং থ্রি এঙ্গেল মেরিন লিমিটেড তহবিলে অর্থায়ন করেছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড, আশুগঞ্জ পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, নর্দান ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড, ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড, রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, বিআর পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড, নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন এবং বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ কর্পোরেশন (পেট্রোবাংলা) এ তহবিলে অবদান রেখেছে।

পাশাপাশি বাংলাদেশ ইনডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসার্স এ্যাসোসিয়েশন (বিআইপিপিএ), বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিসিসিআই), মেট্রোপলিটান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), এস আলম গ্রুপ, সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, ওয়ালটন গ্রুপ, হোসাফ গ্রুপ, পিএইচপি গ্রুপ, প্রাণ আরএফএল গ্রুপ, ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড, বেঙ্গল গ্রুপ, শেলটেক গ্রুপ, লেদার ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, এনভয় গ্রুপ, মিনিস্টার গ্রুপ এবং লাবিব গ্রুপ করোনাভাইরাস সহায়তা তহবিলে অবদান রেখেছে।

এ ছাড়া বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড অ্যান্ড এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এবং হাবিব উল্লাহ দেওয়ান তহবিলে অবদান রেখেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি সংস্থা এবং ব্যক্তিবর্গ এরআগে ‘বেসরকারি অর্থে গৃহনির্মাণ তহবিলে’ ২৬৩ কোটি টাকা এবং ‘করোনাভাইরাস সহায়তা তহবিলে’ ১১০ কোটি টাকা অবদান রেখেছে।

ক্যাটাগরি: প্রধান খবর,  শীর্ষ তিন

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply