সারাদেশ একদিকে শীতে কাঁপছে, অন্যদিকে অজানা ভয় ও শঙ্কায়। কে থাকবে আর কে থাকবে না- কিছুই বলা যাচ্ছে না। তবে এটা বলা যায় নিশ্চিন্তে, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-সংঘাত, হিংসা-প্রতিহিংসা, পারিবারিক সামাজিক অমিল-অশান্তি এবং রাজনৈতিক অসম্প্রীতি দারুণ ‘উন্নতি’ ঘটেছে।
অবশেষে রাত পোহালেই শুরু হচ্ছে সেই যুদ্ধসময়। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। দুদলেরই ‘কেউ কাহাকেও নাহি ছাড়ি’ ভাব। কাকে কে খাবে, কাকে কে মারবে আর কে টিকে থাকবে এবং কে টিকে থাকবে না সেই লড়াই শুরু হতে যাচ্ছে মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাদেই। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ এমন ‘উৎসবমুখর যুদ্ধ ঘোষণা’, ‘যুদ্ধ প্রস্তুতি’ বা যুদ্ধ-পরিস্থিতি আর কখনো হয়নি। সারাদেশ একদিকে শীতে কাঁপছে, অন্যদিকে অজানা ভয় ও শঙ্কায়। কে থাকবে আর কে থাকবে না- কিছুই বলা যাচ্ছে না। তবে এটা বলা যায় নিশ্চিন্তে, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-সংঘাত, হিংসা-প্রতিহিংসা, পারিবারিক সামাজিক অমিল-অশান্তি এবং রাজনৈতিক অসম্প্রীতির দারুণ ‘উন্নতি’ ঘটেছে।
দুই দলের ঔদ্ধত্যে, বুদ্ধিবাজদের মূর্খামী-ভণ্ডামী, টকশোজীবীদের বাড়াবাড়ি, ধর্মঅলাদের ময়নাপাখির বুলি আর শত শত মিডিয়ার ‘সফল ব্যবসায়ে’ শেষ পর্যন্ত সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হয়নি। কালই হয়তো নির্ধারণ হয়ে যাবে কারা ক্ষমতায় যাচ্ছে আর কারা যাচ্ছে না। কিন্তু এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কতদিন লাগবে বা আদৌ হবে কি না তা নিয়ে সমাজতাত্ত্বিক ও বিশ্লেষকগণ পুরোপুরিই অন্ধকারে। কেউ কিছু বলতে পারছে না। কেউ কোনো নিশ্চয়তা দূরের কথা, আশ্বাসও দিতে পারছে না। সবাই কেবল হায় হায় করছে। এমতাবস্থায় কোটি কোটি জনগণ বড়বেশি অসহায়বোধ করছে।
প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের সবকিছুই সরকারের পক্ষে। সেনাবাহিনীও এখনো পর্যন্ত তাই। নির্বাচনী কেন্দ্রগুলোও সন্ধ্যা থেকেই দখলে। তবে হঠাৎ কেউ উল্টে যায় কি না, অথবা আগে থেকেই উল্টে যাওয়ার পরিকল্পনা করে রেখেছে কি না, কিংবা বিএনপি-জামায়াত মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে দেয় কি না- এমন নানা প্রশ্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষণদের মুখে মুখে। সবাই তাকিয়ে আছে আগামী কালের দিনটির প্রতি। ফোকাস, ৩০ ডিসেম্বর।
কী হতে পারে ৩০ ডিসেম্বর? অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু? ব্যাপক ধর-পাকড়, হত্যা-রক্তপাত? পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পক্ষে পরিস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক রাখতে পারা, পরবর্তীতে কোনো দল ক্ষমতা গ্রহণ করে দেশকে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা কতটুকু? যদিও সবাই এটিই চায়?
জনগণ সবাই চায় স্বাভাবিকতা, শান্তি ও সহাবস্থান। সবাই চায় সহযোগিতা, সহমর্মিতা, আন্তরিকতা ও সৌহার্দ-সম্প্রীতি। অবশ্য কেউ কেউ বলছেন, তেমন সহিংসতার কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ বিএনপি জামায়াত ইন্টারনেট দুনিয়ায় তোলপাড় চালালেও বাস্তবে তাদের শক্তি-সাহস খুব একটা নেই। তাছাড়া সংঘাত করে ক্ষতি ছাড়া লাভও নেই। বরং সুস্থ রাজনীতির চর্চা করে ধীরে ধীরেই আবার তাদের ক্ষমতার মূল ধারায় আসতে হবে।
আরো পড়ুন- নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক সহিংসতা ও রক্তারক্তির আশঙ্কা
ক্যাটাগরি: প্রধান খবর
[sharethis-inline-buttons]