রবিবার রাত ৩:০২, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং

আওয়ামীলী‌গে করোনার তৃতীয় আঘাত: মারা গেলেন সিলেটের মেয়র কামরান

হাসনাইন হাওলাদার

দীর্ঘ‌দিন ধ‌রে দে‌শের শিক্ষাব্যবস্থা, সরকার, সামা‌জিক ও রাজ‌নৈ‌তিক দলগু‌লো পরস্পর ছিন্নবি‌চ্ছিন্ন ও বিভক্ত থাকায় এ মহামা‌রি প্রতিরোধে যেমন স‌ম্মি‌লিত ও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না, তেমনি রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মৃত্যুগুলোকেও দেখা হচ্ছে দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই।

মাত্র গতকালই ক‌রোনার জোড়া আঘা‌তে লাগাতার তৃতীবা‌রের ম‌তো সরকার গঠন করা আওয়ামী লীগ হারায় তা‌দের দুজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী‌কে। একজন বর্তমান মন্ত্রী। অন্যজন দ‌লের নী‌তি‌নির্ধারণী ব্য‌ক্তিত্ব এবং একা‌ধিক মন্ত্রণা‌য়ের ও একা‌ধিকবা‌রের সা‌বেক মন্ত্রী। দল‌টি এ আঘাত কা‌টি‌য়ে উঠার আ‌গেই আবারও ক‌রোনার ভয়াল থাবা।

এবার মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য বদর উদ্দিন আহমদ কামরান মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্ন ইলাহি রাজিউন)।

রোববার (১৪ জুন) দিবাগত রাত তিনটায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। কামরানের ছেলে ডা. আরমান আহমদ শিপলু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত ৫ জুন সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে কামরানের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়। পরদিন তীব্র জ্বর ও বমিটিংয়ের জন্য নগরীর শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ৭ জুন তাকে ঢাকায় এনে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়।

চিকিৎসকরা প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে তাকে প্লাজমা থেরাপি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার দেহে করোনাজয়ী কারো ‘এ’ পজিটিভ রক্তের সংগৃহীত প্লাজমা দেয়া হয়। তার স্বজনরা জানান, হাসপাতালে প্লাজমা থেরাপি দেয়ার পরই বদর উদ্দিন আহমদ কামরান কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠেন। তবে রোববার মধ্যরাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তিনি মারা যান। এর আগে গত ২৮ মে তার স্ত্রী আসমা কামরানেরও করোনা শনাক্ত হয়। বর্তমানে তিনি নিজ বাসাতেই আইসোলেশনে আছেন।

উ‌ল্লেখ্য: শান্ত‌শিষ্ট ও নিরাপদ দেশ বাংলা‌দেশ অ‌তি অল্পসম‌য়েই হ‌য়ে উ‌ঠে ক‌রোনার অভয়াশ্রম। ক‌রোনা কা‌কে কখন কোন্ দিক থে‌কে আঘাত ক‌রে কেউ বল‌তে পার‌ছে না। সাধারণ মানুষ যেমন ঘরে বসেও নিরাপদ থাকতে পারছে না, প্রতিদিনিই মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে; তেমনি রাষ্ট্র ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও নিরাপদ নেই। বিশেষ করে করোনার আঘাতে বর্তমান সরকারের অনেকগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে এরই মধ্যে। যদিও সেগুলো ততটা আলোচনায় আসেনি।

অন্য‌দি‌কে দীর্ঘ‌দিন ধ‌রে দে‌শের শিক্ষাব্যবস্থা, সরকার, সামা‌জিক ও রাজ‌নৈ‌তিক দলগু‌লো পরস্পর ছিন্নবি‌চ্ছিন্ন ও বিভক্ত থাকায় এ মহামা‌রি প্রতিরোধে যেমন স‌ম্মি‌লিত ও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না, তেমনি রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মৃত্যুগুলোকেও দেখা হচ্ছে দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই। তবে সবাই আশা করছেন, অন্তত এই করোনাকে কেন্দ্রকে হলেও দেশ জাতির সবাই ঐক্যবদ্ধ হবেন। মিটে যাবে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি। সবাই সবাইকে একদেশ ও একজাতি হিসেবে ভাববেন।

: বিশেষ প্রতিনিধি

ক্যাটাগরি: প্রধান খবর,  শীর্ষ তিন

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply