রবিবার ভোর ৫:৪৫, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং

একা তারাবি পড়া নিয়ে জটিলতায় সাধারণ মুসল্লিগণ: দায়ি কারা?

জুনায়েদ আহমেদ

“মুসল্লিগণ পুরো বছর এমনকি জীবনভর ইমামের পেছনে জামাতে নামাজ পড়ার পরও তারা একা একা নামাজ পড়তে পারেন না, জানেন না সুরা-কেরাত, মাসআলা-মাসায়েল ও কোন্ নামাজ কীভাবে পড়তে হয়। এ ব্যাপারে ইমামগণের সদিচ্ছা ও সক্রিয় ভূমিকাই এ সমস্যা থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ বলে মনে করছেন ধর্মীয় বিশেষজ্ঞগণ।”

বাংলাদেশে গত শুক্রবার থেকে তারাবি শুরু হয়েছে। এদিন রাতে সেহেরি খেয়ে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে রোজা। কিন্তু এবার করোনার কারণে তারাবি, সেহরি, ইফতারিতে দেখা যাচ্ছে না কোনো উৎসবের আমেজ। মানুষজন একসাথে নামাজ-তারাবি পড়তে পারছেন না। করতে পারছেন জাঁকজমকভাবে ইফতারির আয়োজনও।

রমজানে পাঁচওয়াক্ত নামাজে মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড় থাকলেও এবার দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। করোনো সংক্রমণরোধে জামাতে নামাজ পড়ার ব্যাপারে সরকারি বিধিনিষেধ থাকায় মসজিদে নামাজ পড়ছেন শুধুমাত্র ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেমসহ কয়েকজন মিলে। তারাবির নামাজেও একই অবস্থা।

এ পরিস্থিতে ওয়াক্তিয়া নামাজ সাধারণ মুসল্লিগণ একা একা আদায় করতে পারলেও তারাবি নামাজ পড়া নিয়ে বেশ জটিলতায় পড়েছেন। তারা প্রতি রমজানে ইমামের পেছনে তারাবি পড়েই অভ্যস্থ। তবে এ রমজানে তারাবিতে বারোজনের বেশি মুসল্লি অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সিংহভাগ মানুষকে বাসায় তারাবি পড়তে হচ্ছে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই জানেন না একা একা তারাবি কীভাবে পড়তে হয়। ফলে বেশ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের।

“ইমামদের প্রতি মানুষের অভিযোগ, তারা ইমামতি বলতে শুধু পাঁচওয়াক্ত নামাজ পড়ানোকেই বোঝেন। ওয়াক্তিয়া নামাজ পড়িয়েই তাদের দায়িত্ব শেষ বলে মনে করেন। কিন্তু এছাড়াও যে ইমামদের আরো অনেক দায়িত্ব আছে- সেটা অধিকাংশ ইমামগণই করেন না।”

প্রথম ও দ্বিতীয় তারাবিতে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা যায়, মানুষজন যেখানেই জানতে পারছেন যে কারো বাড়িতে রুমে বা বাসার ছাদে জামাতে তারাবি হচ্ছে, তারা সেখানেই ভিড় জমাচ্ছেন। এর কারণ হলো, তারা একা একা তারাবি পড়তে পারেন না। জানেন না সুরা-কেরাত ও নিয়ম কানুন।

অথচ  তারাবি পড়তে না পারা এই মানুষগুলই সারাবছর মসজিদে ইমামের পীছনে পাঁচওয়াক্ত নামাজ পড়েছেন। ইমাম কিছুটা আগ্রহী হলেই তাদেরকে শেখাতে পারতেন, তারাবিসহ সমস্ত নামাজের নিয়মকানুন, সুরা-কেরাত মাসলা-মাসায়েল ইত্যাদি। এক্ষেত্রে ইমামগণের বড় দায় রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকগণ।

ইমামদের প্রতি মানুষের অভিযোগ, তারা ইমামতি বলতে শুধু পাঁচওয়াক্ত নামাজ পড়ানোকেই বোঝেন। ওয়াক্তিয়া নামাজ পড়িয়েই তাদের দায়িত্ব শেষ বলে মনে করেন। কিন্তু এছাড়াও যে ইমামদের আরো অনেক দায়িত্ব আছে- যারা  সুরা-কেরাত, নামাজের নিয়ম কানুন জানে না, কো্ নামাজ কীভাবে পড়তে হয়, তা বোঝে না; তাদেরকে শেখানো- এসব বিষয় নিয়ে নিয়মিত বা কদিন পর পর বসা, আলোচনা করা এই চেষ্টা অধিকাংশ ইমামগণই করেন না। তবে ব্যতিক্রম যে নেই তা নয়।

আর এ কারণেই মুসল্লিগণ পুরো বছর এমনকি জীবনভর ইমামের পেছনে জামাতে নামাজ পড়ার পরও তারা একা একা নামাজ পড়তে পারেন না, জানেন না সুরা-কেরাত, মাসআলা-মাসায়েল ও কোন্ নামাজ কীভাবে পড়তে হয়। এ ব্যাপারে ইমামগণের সদিচ্ছা ও সক্রিয় ভূমিকাই এ সমস্যা থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ বলে মনে করছেন ধর্মীয় বিশেষজ্ঞগণ।

জুনায়েদ আহমেদ: স্টাফ রিপোর্টার

ক্যাটাগরি: প্রধান খবর,  শীর্ষ তিন,  সারাদেশ

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply