শুক্রবার রাত ১:৪৯, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং

বিশ্বাসে মিলে বস্তু, তর্কে বহু দূর

সরকার জুম্মান

ধর্মে সেগুলো নিষেধ করা হয়েছে। নবী মোহাম্মদ (সা:) এর নির্দেশ, খাবার আগে ভালোমতো দুহাত ধুয়ে নেয়া। তদুপরি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাকে ইমান বা বিশ্বাসের অঙ্গ বলা হয়েছে। এ বিষয়গুলোর গুরুত্ব এখন আমেরিকানদের কাছেও আছে। তাই তারা মোহাম্মদ (সা:) এর বাণী বিলবোর্ডে টানিয়ে রেখেছে।

সারাদেশে চলছে করোনা ভাইরাসের তাণ্ডব । উচ্চমহল থেকে নিম্নশ্রেণি- সকলেই প্রভাবিত বা চিন্তিত। নেই কোনো প্রতিকার। ২২২ বছর পর জনজীবন একেবারে অচল করে দিয়েছে। বিজ্ঞানীরাও হতবাক, নিরুপায়। প্রতিনিয়ত করোনা তার গতি-প্রকৃতি পরিবর্তন বা মিউটেশন করে চলেছে। আজ এ উপসর্গ, কাল তা পরিবর্তিত হয়ে আরেকটা। বিশ্ববিজ্ঞান কখনো এত অসহায় বা চিন্তায় পড়েনি। কেউ না কেউ উদ্ভাবনের সুসংবাদ বা কৃতিত্ব নিয়েছে, কিন্তু এখন সকলেই শান্তনার বাণী ছাড়া কোনো উপায় দেখছেন না।

ডোনাল্ট ট্রাম্পের মত লোক সামান্য জ্বরের ট্যাবলেটের জন্য সাবেক চা-বিক্রেতা মোদির পায়ে হাত, মানে তোষামোদ করতে হয়। এ যেন বাঘে-মহিষে এক ঘাটে পানি খাওয়া। পুতিন ছেড়েছে বাঘ সিংহ, কিম জংয়ের ফায়ার, চায়নার পুড়িয়ে ফেলা, বিশ্বব্যাপী লকডাউন! সমাধানের আর কোনো পথ নেই ।

আসি বাংলাদেশে চলা বিরতিহীন লকডাউনে। গরিব রাষ্ট্র থেকে আমরা মধ্য আয়ের দেশে পরিণত! মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্যমতে, অর্থনীতি সিঙ্গাপুর ছুঁইছুঁই! কিন্তু আমরা আমাদের স্বাস্থ্যখাতকে বিশেষ কোনো উন্নত করতে পারিনি, যে কারণে উপরন্তু উপায় লকডাউন মানে মসজিদ, দোকানপাট বন্ধ। মোটকথা পুরো অর্থনীতির চাকা অচল করা ছাড়া কোনো পথ নেই।

বাংলাদেশ শতকরা ৯০% মুসলিম অধ্যুষিত দেশ হওয়ায় এখানে ধর্মবিশ্বাসী মানুষের সংখ্যা ব্যাপক। আচ্ছা করোনা এখানে আসলো কী করে? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বারবার হুশিয়ার করে আসছে, ১৮ কোটি জনসংখ্যার বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আঘাত আনলে ২০ লক্ষ প্রাণহানীর আশঙ্কা। মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কোনো কর্ণপাত নেই। এ ১০% মৃত্যু উনার কাছে তেমন বিশেষ কিছু মনে হলো না।

যে জীবাণুর বিনাশ নিয়ে স্বয়ং বিজ্ঞান চিন্তিত, তা আমার ২৫ টাকার স্যানিটাইজার নির্মূল করবেই- এটা কতটা নির্ভরযোগ্য? এই তো কদিন আগে এক ‘বাবা’ আবিষ্কার করলেন, যেহেতু স্যানিটাইজারে জীবানু ধ্বংস হয়, তাই ভক্তদের খাইয়ে দেই। ব্যস, মরে গেল ২৫ জন!

যেন উনি বাংলার জনসংখ্যায় সিঙ্গাপুরের সাথে সমতা আনতে চান, তাই কোনো পরোয়া ছাড়াই ৭ লক্ষ প্রবাসীকে দেশে ছেড়ে দিয়ে দেশকে হুমকির মুখে ঠেলে দিলেন, যা এখন প্রধানমন্ত্রীর দিনরাত মনিটরে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হচ্ছে। আর ভুগছে আমজনতা। আমাদের এখন একমাত্র ভরসা ব্লিচিং পাউডার, অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার। কী বলবো, বাজারে এখন যে হ্যান্ড স্যানিটাইজারগুলো রয়েছে, এসবের অধিকাংশে নেই জীবানু নাশক উপাদান। নেই কোনো বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা।

রাতারাতি চাহিদা তৈরি হওয়ায় কোনোমতে কাস্টমার ঠেকাচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। ১০ টাকার মাস্ক হয়ে গেছে ৮০ টাকা। ভাইরাস প্রতিরোধক n 95 মাস্ক সর্বনিম্ন ৮০০ – ১০০০ টাকা। কোথায় বিশ্ব, আর কোথায় আমরা? করোনা এদেশে এসে হেসে খেলে ধরবে। আচ্ছা ধর্ম কী বলে? সাধারণত করোনাভাইরাসের উৎপত্তি ধরা হয় বিষাক্ত প্রাণীর দেহ থেকে। আর বেশি আক্রান্ত সেসব দেশ ও মানুষ, যারা রিচফুডের নামে বিষাক্ত প্রাণী খায় ।

ধর্মে সেগুলো নিষেধ করা হয়েছে। নবী মোহাম্মদ (সা:) এর নির্দেশ, খাবার আগে ভালোমতো দুহাত ধুয়ে নেয়া। তদুপরি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাকে ইমান বা বিশ্বাসের অঙ্গ বলা হয়েছে। এ বিষয়গুলোর গুরুত্ব এখন আমেরিকানদের কাছেও আছে। তাই তারা মোহাম্মদ (সা:) এর বাণী বিলবোর্ডে টানিয়ে রেখেছে। যদিও তারা এই ধর্মে বিশ্বাসী নয় । আর মুসলিমরা বিশ্বাসী দাবী করে। কিন্তু মূলত বিশ্বাস রাখে নিম্নমানের হ্যান্ড স্যানিটাইজারের উপর।

ব্যবহারিক ক্ষেত্রে রাখা দোষণীয় নয়। কিন্তু যে জীবাণুর বিনাশ নিয়ে স্বয়ং বিজ্ঞান চিন্তিত, তা আমার ২৫ টাকার স্যানিটাইজার নির্মূল করবেই- এটা কতটা নির্ভরযোগ্য? এই তো কদিন আগে এক ‘বাবা’ আবিষ্কার করলেন, যেহেতু স্যানিটাইজারে জীবানু ধ্বংস হয়, তাই ভক্তদের খাইয়ে দেই। ব্যস, মরে গেল ২৫ জন!

সরকার জুম্মান: সাংবাদিক ও লেখক

ক্যাটাগরি: মিনি কলাম

ট্যাগ: সরকার জুম্মান

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply