সরকার বা প্রশাসন যদি এই জাতীয় সঙ্কটের সময়েও মাত্র কিছুসংখ্যক ফকির-মিসকীনের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে না পারে, তাহলে সহজেই সরকারের সক্ষমতা ও আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। মিডিয়ায় যেভাবে প্রচার হচ্ছে নিম্নবিত্ত মধ্যবিত্তদের ত্রাণ ও সহায়তার কথা, বাস্তবে তা ষোলোআনার মধ্যে বড়জোর দুই আনা মাত্র।
গত ৪ এপ্রিল দেশ দর্শনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার সামনেই প্রতিদিন ভিক্ষুকদের জটলা শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এরপর অনেকেই প্রশাসনের কাছে রাষ্ট্রীয় ও মানবিক কারণ এবং করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে এই ভিক্ষুকদেরকে সরকারিভাবে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু প্রশাসন এ দাবি আমলে না নিয়ে বর্তমানে চলা ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেও ভিক্ষুকদেরকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ভিক্ষা করার নির্দেশ দেন। গতকাল একাধিক ভিক্ষুকদের সাথে কথা বলে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফকিরাপুলে ভিক্ষুকরা অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছুটা ফাঁক ফাঁক হয়ে বসেছে। আবার অনেকে এভাবে বসতে চান না। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডাও হয়। তবে কেউ ত্রাণ বা টাকা-পয়সা দিতে আসলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা ভুলে সবাইকে একসাথে ভিড় করতে দেখা যায়।
গতকাল বারোটার দিকে এক মহিলা কিছু টাকা দান করতে এসেছিলেন। তখন সবাই মহিলাকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরে। এ সময় মহিলা কাকে রেখে কাকে দেবেন, তা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যান। অবস্থা বেগতিক দেখে কয়েকজনের হাতে হাতে টাকা দিয়ে তিনি দ্রুত চলে যান।
এ বিষয়ে একজন সমাজবিশ্লেষকের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, বিষয়টা অতীব দুঃখজনক। সরকার বা প্রশাসন যদি এই জাতীয় সঙ্কটের সময়েও মাত্র কিছুসংখ্যক ফকির-মিসকীনের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে না পারে, তাহলে সহজেই সরকারের সক্ষমতা ও আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। মিডিয়ায় যেভাবে প্রচার হচ্ছে নিম্নবিত্ত মধ্যবিত্তদের ত্রাণ ও সহায়তার কথা, বাস্তবে তা ষোলোআনার মধ্যে বড়জোর দুই আনা মাত্র।
জুনায়েদ আহমেদ : স্টাফ রিপোর্টার
ক্যাটাগরি: প্রধান খবর, শীর্ষ তিন
[sharethis-inline-buttons]