একজন বাউল জীবনে যতবার গাঁজা খায়, ততবার ভাতও খায় না। এদেশের সেকুলার, নাস্তিক ও বামপন্থীরা তাদের অনুসারী।
মনের মানুষ খোঁজার কথা বলে বাউলরা দেহের ভিতর দেহাতীতের সন্ধান করেন নরনারীর যুগল সাধনার মাধ্যমে। দেহের সাথে দেহের মিলন না হলে মাধুর্য ভজন হয় না। মাধুর্য ভজন না হলে মানুষ হয়ে জন্মানোর স্বার্থকতা কোথায়? এই হলো বাউলদের মৌল জিজ্ঞাসা।
এই জিজ্ঞাসার উত্তর তারা খোঁজেন বিকৃতরুচি কাম সাধনায়। এই কারণে বাউলরা জোড়ে জোড়ে থাকেন। বাউল সাধনা একাকী পুরুষের বা একাকী নারীর সাধনা নয়। একে এক ধরনের পাশ্চাত্যের ‘লিভিং টুগেদারের’ সাথেও তুলনা করা চলে। লালনের ধর্মমতের ‘চারিচন্দ্রভেদ’, ‘ষড়চক্র’, ‘দ্বিদলপদ্ম’, ‘মূলধারাচক্র’, ‘সহস্রদলপদ্ম’, ‘অধর মানুষ’, ‘ত্রিবেণী’, ‘সাধনসঙ্গিণী’, ‘প্রেমভজা’ প্রভৃতি কাম আরাধনার ইঙ্গিতপূর্ণ শব্দের তাৎপর্য জানলে বা শুনলে যে কোনো মানুষের লালনের প্রতি শ্রদ্ধা কমে যাবে।
বাউলরা মূলত গাঁজাখোর ও ধর্মবিদ্বেষী। একজন বাউল জীবনে যতবার গাঁজা খায়, ততবার ভাতও খায় না। এদেশের সেকুলার, নাস্তিক ও বামপন্থীরা তাদের অনুসারী। তারা এমন এক পৃথিবীর স্বপ্ন দেখে, যেখানে ধর্ম ও নৈতিকতা বলতে কিছু থাকবে না।
এই জিজ্ঞাসার উত্তর তারা খোঁজেন বিকৃতরুচি কাম সাধনায়। এই কারণে বাউলরা জোড়ে জোড়ে থাকেন। বাউল সাধনা একাকী পুরুষের বা একাকী নারীর সাধনা নয়। একে এক ধরনের পাশ্চাত্যের ‘লিভিং টুগেদারের’ সাথেও তুলনা করা চলে।
জগন্মোহনী বাউল মতবাদ একটি দর্শন যা বাংলাদেশ ও ভারতের কিছু অঞ্চলে প্রচলিত। এরা মূলতঃ বৈষ্ণব ধর্মীয় বিশ্বাসে জড়িত।
এই মতবাদের উৎপত্তি ১৪’দশ শতকে বাংলাদেশের সিলেটের হবিগঞ্জে। জগন্মোহন গোসাঁই নামীয় একজন বাউল সাধক কর্তৃক এই মতবাদের উৎপত্তি ঘটে বলে একে “জগন্মোহনী বাউল মতবাদ” বলে অভিহিত করা হয়।
ইহারা নির্গুণ উপাসক, কোনো সাকার দেবতার উপাসনা করে না। কিন্তু দীক্ষাগুরুকে সাক্ষাৎ ভগবান বলিয়া স্বীকার করে। তিনি মূর্তিমান ঈশ্বর, তিনিই শিষ্যগণের ত্রাণকর্তা। এরা দীক্ষাকালে “গুরু সত্য” এই বাক্য উচ্চারণপূর্বক গুরুকেই প্রত্যক্ষ পরম দেবতা বলে স্বীকার ও বিশ্বাস করে এবং তার নিকট হতে ব্রহ্মনাম গ্রহণপূর্বক তাদের উপাসনা অবলম্বন করিয়া থাকে।
সূত্র: বাংলার বাউল দর্শন-মোঃ সোলায়মান আলী সরকার। ভারতবর্ষীয় উপাসক-অক্ষয় কুমাড় দত্ত।
শেখ নজরুল ইসলাম : ইতিহাস গবেষক
ক্যাটাগরি: মিনি কলাম
[sharethis-inline-buttons]