স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছর অতিক্রান্ত হতেই পরাজিত শক্তির চক্রান্তে তাদের এ-দেশীয় দোসর ও ধর্ম ব্যবহারকারীদের যৌথ প্রচেষ্টায় উচ্চাভিলাষী সামরিক আমলা ও ঘরের শত্রু বিভীষণ (মোশতাক)-এর মেলবন্ধনে পঁচাত্তরের মর্মন্তুদ ঘটনার পর রাজনীতি প্রকৃত রাজনীতিকদের থেকে বেহাত হয়ে যায়। চলে যায় সুযোগসন্ধানী, আদর্শহীন, ভ্রষ্ট, নষ্ট ও দূর্বৃত্ত রাজনীকদের কবলে। রাজনীতিতে দ্রুত দূর্বৃত্তায়ন ঘটে।
রাজনীতি ও রাজনীতিকদের নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা ও সমালোচনা চলে। সব শ্রেণি-পেশার মানুষই চায়ের কাপে, নাস্তার টেবিলে, আড্ডায় এ নিয়ে ঝড় তোলে। কতিপয় উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ ব্যতীত বিশ্বের সব দেশেই তা হয়। স্বাধীনতাপূর্ব ও পরের পর্বদ্বয়ের বিশ্লেষণ করলে পূর্বের রাজনীতিকগণ সৎ, দক্ষ, মেধাবী এবং গভীর রাজনৈতিক জ্ঞান ও প্রজ্ঞার অধিকারী ছিলেন বলে প্রতীয়মান হয়। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করলে এ কথা নির্দ্বিধায় স্বীকার করতে হয় যে, এই আন্দোলনের সাফল্যই বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং একটি জাতি-রাষ্ট্র নির্মাণে, স্বাধীনতার জন্য জাতিকে প্রস্তুতি গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় শিক্ষা আন্দোলন, ছয় দফা, গণঅভ্যুত্থান, স্বাধীকারের দাবী, সত্তুরের নির্বাচনে অংশগ্রহণ, বঙ্গবন্ধু কর্তৃক মহান স্বাধীনতা ও মুক্তির দৃপ্ত ঘোষণা, তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁরই সহচর ও যোগ্য নেতৃবৃন্দের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া, বিশাল ত্যাগের বিনিময়ে বাঙালির দীর্ঘদিনের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জন। এসব ঐতিহাসিক ও গৌরবময় ঘটনাগুলো রাজনীতিকদের অসাধারণত্বেরই জ্বলজ্বলে প্রমাণ বহন করছে।
দীর্ঘ পরিসরে অপরাজনীতি, অপপ্রচারে জাতি বিভ্রান্ত, দিকনির্দেশনাহীন, বিপন্ন ও চরম বৈরি পরিবেশে ছিল। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে নবসৃষ্ট একটি রাজনৈতিক দলের উল্লম্ফনেও রাজনীতি ও দেশের বিপুল ক্ষতি হয়েছে। জাতির অনেক বীর সন্তান ও প্রচুর তরুণ যুবকের প্রাণ বিসর্জিত হয়েছে।
স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছর অতিক্রান্ত হতেই পরাজিত শক্তির চক্রান্তে তাদের এ-দেশীয় দোসর ও ধর্ম ব্যবহারকারীদের যৌথ প্রচেষ্টায় উচ্চাভিলাষী সামরিক আমলা ও ঘরের শত্রু বিভীষণ (মোশতাক)-এর মেলবন্ধনে পঁচাত্তরের মর্মন্তুদ ঘটনার পর রাজনীতি প্রকৃত রাজনীতিকদের থেকে বেহাত হয়ে যায়। চলে যায় সুযোগসন্ধানী, আদর্শহীন, ভ্রষ্ট, নষ্ট ও দূর্বৃত্ত রাজনীকদের কবলে। রাজনীতিতে দ্রুত দূর্বৃত্তায়ন ঘটে।
এই দুর্বৃত্তায়নের সময় বিভিন্ন কুকর্মে, দল বদলে, চরিত্র হারানোতে ও ক্ষমতার মধু আহরণে সামরিক শাসক, বেসামরিক আমলা, প্রশাসনযন্ত্র পূর্ণ সহযোগিতা করেছে। গণতন্ত্র, জবাবদিহিতা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যত্যয় ঘটিয়েছে। দেশের পুনর্গঠন, পুনর্নির্মাণ ও অগ্রগতি রুদ্ধ করেছে। এভাবে দীর্ঘ পরিসরে অপরাজনীতি, অপপ্রচারে জাতি বিভ্রান্ত, দিকনির্দেশনাহীন, বিপন্ন ও চরম বৈরি পরিবেশে ছিল। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে নবসৃষ্ট একটি রাজনৈতিক দলের উল্লম্ফনেও রাজনীতি ও দেশের বিপুল ক্ষতি হয়েছে। জাতির অনেক বীর সন্তান ও প্রচুর তরুণ যুবকের প্রাণ বিসর্জিত হয়েছে।
অতঃপর অনেক চড়াই উৎরাই অতিক্রম করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে বহু সংশয় ও অনিশ্চয়তা ছিল। সংবিধানসম্মত সংলাপে প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে এসব বাধা এখন অপসারিত। রাজনীতি ও রাজনীতিকদের বিজয় সূচিত হয়েছে। দেশবাসী স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলেছে। নির্বাচনের সুবাতাস বইছে। তাই আমাদের সবার অংশগ্রহণে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আশা করতেই পারি। এর নিশ্চয়তা বিধানে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন সঠিক দৃঢ়তা ও দায়িত্বের পরিচয় দেবেন এমনটাই প্রত্যাশা।
ক্যাটাগরি: প্রধান কলাম
[sharethis-inline-buttons]