বৃহস্পতিবার রাত ১২:৫৯, ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

পতিতাদের মি-টু আন্দোলন (#Me Too) ছড়িয়ে পড়ছে

বিনোদন প্রতিবেদক

দিনশেষে সাধারণ পতিতাদের কপালে জোটে সমাজের ঘৃণা আর অবহেলা। কিন্তু আধুনিক পতিতারা দিনশেষে ‘রেড কার্পেটে’ হাঁটে, ‘ধর্ষক’-শ্রোতাদের তুমুল করতালি পায়। এদের টাকার পরিমাণটাও বেশি, কারণ এদের পেছনে প্রচুর ইনভেস্ট হয়।

‘আধুনিক পতিতালয়’ খ্যাত দেশি-বিদেশি চলচিত্র জগতের অভিনেত্রীরা এবার কথিত ‘যৌন হেনস্থার’ বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। যদিও এরা ভালো করেই জানে, এ জগতে নারীর সৌন্দর্য ও শরীর-যৌবনের বাইরে দ্বিতীয় কোনো সাধনা নেই। একজন পতিতা যেমন সবকিছু বুঝে-শুনেই অর্থের জন্য নিজের শরীর বিক্রি করে, সিনেমাজগতেও তাই। কেবল একটু ধোঁকার আশ্রয় নেয়া হয় শিল্প-সংস্কৃতির নামে। অন্যদিকে দিনশেষে সাধারণ পতিতাদের কপালে জোটে সমাজের ঘৃণা আর অবহেলা। কিন্তু আধুনিক পতিতারা দিনশেষে ‘রেড কার্পেটে’ হাঁটে, ‘ধর্ষক’-শ্রোতাদের তুমুল করতালি পায়। এদের টাকার পরিমাণটাও বেশি, কারণ এদের পেছনে প্রচুর ইনভেস্ট হয়। এদের রঙচঙ করার যন্ত্রপাতী দেশীয় নয়, সব বাইরের।

অশ্লীলতা, নারীনগ্নতা এবং খোলাখুলি দৃশ্যের দিক থেকে ইংলিশ সিনেমার পরই ভারতীয় সিনেমার অবস্থান। ভারত বহুকাল ধরেই এক্ষেত্রে নারীর শরীর, সৌন্দর্য ও যৌবন বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করে আসছে। এ থেকে প্রচুর লাভবানও হয়েছে, হচ্ছে এবং হবারই কথা। ‘চিত্ত বিনোদনের’ নামে নারীর নিতম্ব ও বক্ষ দেখিয়ে শুধু দেশের ভেতরের গরীব-দুঃখীদের কাছ থেকে নয়, বহির্বিশ্বের কাছ থেকেও প্রতি বছর কোটি কোটি ডলার উপার্জন করে ইন্ডিয়া। এ লাভজনক ব্যবসায় পরিচালক-প্রযোজকরা প্রচুর ইনভেস্ট করেন শুধু আর্থিক লাভের জন্য নয়, অভিনেত্রীদের ভোগ করার জন্যও। বাংলাদেশ-ভারতে এটা অলিখিত আইনও।

যে অভিনেত্রীরা অভিনয় জগতে পা বাড়াচ্ছেন, তারা এটা জেনে ও মেনেই এ জগতে আসছেন। তারা তাদের যৌবন, সৌন্দর্য ও নারিত্ব বিক্রির ওয়াদা করেই পরিচালক-প্রযোজক ও কিছু কলা-কুশলীর নজর কাড়েন। এখানে কোনো নারী যদি কারো ভোগে না গিয়ে থাকেন, তবে সেটার মূল কারণ তাকে তেমন কেউ পছন্দ না করা এবং কখনো বিছানায় না ডাকা। পছন্দ করলে এবং ডাকলে তারা যেতে বাধ্য। একজন পতিতা যেমন তার খদ্দেরকে খদ্দেরের ইচ্ছেমতো সময় ও শরীর দিতে বাধ্য।

এদিকে বৃহত্তর জনসমাজের পরোক্ষ ধর্ষকরা প্রত্যক্ষ ধর্ষক ও যৌন হেনস্থাকারীদের বিরুদ্ধে পতিতাদের পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো গরম করলেও এদের সবার বিপরীতে গিয়েও অনেকেই কথা বলছেন। তারা বলছেন, এ ‘মি-টু’র জন্য দায়ী এরা নিজেরাই। দেশ দর্শন সম্পাদক জাকির মাহদিন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, “রাতের বেলা আত্মহত্যা করতে যাওয়ার সময় সাপের ভয়ে লাঠি হাতে বের হওয়া আর সিনেমায় মেয়েদের অভিনয় করতে গিয়ে যৌন হেনস্থার (মি-টু) অভিযোগ তোলা একই কথা। কয়লা যখন ময়লার বিরুদ্ধে নালিশ করে, তখন না হেসে থাকা সম্ভব ।”

অনেকেই শিল্প-সংস্কৃতি ও চিত্তবিনোদনের নামে এসব যৌনব্যবসা বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছেন। চিত্রজগতের অভিনেতা-অভিনেত্রী এবং পরিচালক-প্রযোজকদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার কথা বলছেন।

অন্যদিকে একটি ‘ইসলামি’ নিউজ পোর্টাল এ নিয়ে শিরোনাম করেছে, “হ্যাশট্যাগ মি-টু খুলে দিচ্ছে ভোগবাদী সমাজের মুখোশ”। মানে তারা বলতে চাচ্ছে, তারা ধর্মের কথা বলে, ধর্মের শিক্ষা দিয়ে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করেও ভোগবাদী সমাজের মুখোশ খুলতে পারছেন না। পরিশেষে তাদের এ কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন আধুনিক পতিতারা। অথচ এ পতিতাগণ নিজেদের পেশা, কাজ ও দৃষ্টিভঙ্গির জন্য অনুতপ্ত নয়।

 

ক্যাটাগরি: প্রধান খবর

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply