শুক্রবার দুপুর ২:৩২, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং

দেশপ্রেম খায় না মাথায় দেয়?

আনসারী তৌফিক

দেশপ্রেম মানব সভ্যতার হুমকি, এতে কোনো সন্দেহ নেই। মূলত দেশপ্রেমিক দাবি করা প্রত্যেকটি মানুষই হয় চরম বোকা, না হয় বিরাট প্রতারক। চিন্তার ব্যাপার হলো, দেশপ্রেমের এই উন্মাদনার মাত্রাকে কমিয়ে আনা আসলে কতটুকু সম্ভব? মানুষ জন্মসূত্রে দেশপ্রেমের যে ‘কুশিক্ষা’ পায়, তার মাতাপিতা, শিক্ষক, স্কুলের বই, ও অন্যান্য মাধ্যমে যে জাতীয়তাবাদের প্রচারণা চলে নিরন্তর, তা থেকে মানুষের মুক্তি অর্জন করা আদৌ সম্ভব কি না।

আপনি কোথায় কোন দেশে, কেন, কিভাবে জন্মাবেন, কেমন পরিবেশে জন্মাবেন, কোথায় থাকবেন, কিভাবে চলবেন, কেন চলবেন, কী খাবেন, আপনার শৈশব, কৈশোর, যৌবন ও জীবন কেমন হবে, আপনার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী কী হবে, কেন হবে, এমনকি আপনার মৃত্যু কীভাবে হবে, তাও কতটুকু ভাল পরিবেশে হবে, সবই আগে থেকে ঠিক করে রেখেছে একদল মানুষ। এরা তৃতীয়পক্ষ হিসেবে কাজ করে। বিস্ময়কর নয় কি?

ব্যাপারটা খুবই বেদনাদায়ক যে মানব জাতিকে এখন (সম্ভবত অনেক আগে থেকেই) নিয়ন্ত্রণ করে আসছে একদল মানুষ। তারা পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষকে তাদের গ্রাহক হিসেবে নিশ্চিত করে তাদের ব্যবসায়িক চক্র বাড়িয়ে চলেছে। তারা জানে, একটি দেশে আপনার এবং আপনার মতো আরো অনেকের জন্ম হবে। পারিপার্শ্বিক নানারকম সংকট ও অরাজকতা নিয়ে আপনি বড় হবেন। পরিবেশের সাথে মিলেমিশে বড় হবার পথে আপনার ঠিক কি কি প্রয়োজন, কি কি চাহিদা, সবই তারা জানে। আপনার জীবনমান অনেক কম, আপনি যেখানে থাকেন সেখানকার সুযোগ সুবিধা নিম্নমানের। সমস্যা নেই। তারা আপনাকে বলবে, এটি তোমারই দেশ। তাই এতো অধৈর্য হয়ো না। দেশকে ভালবাসো। ‘দেশকে’ ভালবাসবো? ‘দেশ’ কী? খায় না মাথায় দেয়? তারা আপনাকে বলবে, দেশ হলো তোমার ভূখন্ড। তোমার পূর্বপুরুষেরা এটি স্বাধীন করেছেন। স্বাধীন? হ্যা, একটা নির্দিষ্ট সীমানা দিয়ে আপনাকে সেই এলাকায় চলাফেরা করার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। এটা তারা বলবে। এটা ‘স্বাধীনতা’? তারা এটাই বলবে যে, এটা স্বাধীনতা। অতএব আপনি আপনার দেশকে ভালবাসুন। বাকি পৃথিবী গোল্লায় যাক। এই হলো তাদের দর্শন। তো এই পলিসিতে সেই তৃতীয় পক্ষের ফায়দা কী? কেন তারা বিশ্বজুড়ে পৃথক পৃথক দেশকে এত দেশপ্রেম শেখাচ্ছে? এত এত সীমানাবদ্ধ ভূখন্ড সৃষ্টি করে বলছে এটা নাকি ‘স্বাধীন’! তারা কেন এই ভণ্ডামিটা করছে? তারা এই মিথ্যাটা বলছে, কারণ এতে সেই ব্যবসায়ী তৃতীয় পক্ষের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের বেশ সুবিধা হয়। কীভাবে?

বিশ্বব্যবসায়ীদের এই পলিসি বুঝতে আপনাকে কিছুক্ষণের জন্য ডুব দিতে হবে কল্পনার সাগরে। কল্পনার শুরুতেই আপনি আপনার দেশকে একটি দোকান হিসেবে ভাবুন। আর নিজেকে চিন্তা করুন সেই দোকানের একজন কাস্টমার হিসেবে। সে দোকানে আমি, আপনি এবং আমরা সবাই হলাম কাস্টমার। এমন করে পৃথিবীর দেশগুলোকেও একেকটি দোকান ভাবুন। চিন্তা করুন, সেই দোকনাগুলোতেও আমার আপনার মত গ্রাহক আছে। এখন আসি আপনার দোকানে। নির্দিষ্ট সেই দোকান, যেখানে আমরা আছি, সেই দোকানদার আমাকে বলেছে, তুমি শুধুমাত্র এই দোকানটিতেই ক্রয় করতে পারবে, অন্য কোনো দোকানে নয়। তারপর আবার বলছে, এটা তোমার ‘স্বাধীনতা’! এটা স্ববিরোধী, কুযুক্তি। যে কোনো মানুষই এই ফাঁকি ধরতে পারবে। কিন্তু যাতে ধরতে না পারে, সেজন্য নানাপ্রকার ব্যবস্থাও করেছে দোকানদাররা। এখন আপনি সেই দোকানগুলোর মালিকগোষ্ঠীর পরিচয় পাবেন। তারা হলো সেই তৃতীয় পক্ষ, প্রথমেই যাদের কথা বলেছি। এরা পৃথিবীর আন্ত:দেশীয় ব্যবসায়ী, যাদের কাছে মুনাফাই একমাত্র সফলতা। এরাই আপনার জন্ম, জীবন ও মৃত্যু নির্ধারণ করে।

আবেগে জড়াবেন না, বাস্তব চোখে চিন্তা করুন, বোঝা সম্ভব। মহাত্মা মালিকগোষ্ঠী দেখলেন, পৃথক পৃথক দোকানে পৃথক পৃথক কাস্টমার রাখা চাই। একই কাস্টমার যদি সব দোকানের পণ্য কিনতে পারে, তবে তারা আর একক কোনো দোকানের প্রতি দায়বদ্ধ থাকবে না, তারা ছড়িয়ে পড়বে দিকে দিকে, নিজের পছন্দমতো পণ্য কিনবে। এতে মালিকপক্ষ বেকায়দায় পড়ে যায়। কেননা, তখন কাস্টমার আগের চেয়ে তুলনামূলক বুদ্ধিমান হয়ে উঠে, মালিক গোষ্টি কাস্টমারকে ধাঁধায় রেখে যে অতিরিক্ত মুনাফাটা আগে অর্জন করতে পারতো, তা আর পারে না। অতএব, দোকানটিকে ভিত্তি করে কাস্টমারকে এমন একটা ব্যবস্থায় বাধ্য করতে হবে বা এমন কোনো মুগ্ধকর চিন্তায় মগ্ন রাখতে হবে যাতে সে আর অন্য কোনো দোকানে না যায়, যেনো শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত- আজীবন একই দোকানে সকল লেনদেন সম্পন্ন করে। এজন্য তারা প্রেমের গল্প বানায়, প্রচার করে। প্রচারণার ধরণ হয় অনেকটা এরকম- ‘আপনি যে দোকানের পণ্য ব্যবহার করে বড় হয়েছেন, সে দোকানকে ভালবাসুন।’ কি সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর প্রচারণা!

দায়বদ্ধতার প্রসঙ্গ তুলে তারা কাস্টমারকে নির্দিষ্ট সেই দোকানের প্রতি বশীভূত করে রাখে। এতে পণ্যের গুপ্তরহস্য ‘রহস্য’ই থেকে যায় গ্রাহকের কাছে। অর্থাৎ আমাদের কাছে। আমরা আর জানতে পারি না, পৃথিবীতে কী হচ্ছে, কেনো হচ্ছে। শুধু জানি এই দেশটাই আমার, আমাদের, এই দেশের পণ্য (বা সম্পদ) ভোগ করেই আমরা বড় হয়েছি, এখানেই আমার জন্ম হয়েছিলো, এখানেই নাকি মরতে হবে। কি নিদারুণ সুকৌশল, ভয়ংকর দাসত্ব। ভাবা যায়! আপনি জন্ম থেকেই একটি তৃতীয় পক্ষের ব্যবসায়িক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন, আপনি তাদের মালিকানাধীন দোকানের কাস্টমার, দোকানের দায়িত্বটুকু তারা বুঝিয়ে দিয়েছে রাজনীতিবিদদের। আপনি তাদের নির্ধারণকৃত সীমানায় সীমাবদ্ধ, তাদের সৃষ্ট কারাগারে আবদ্ধ, বন্দি। অথচ আপনি দাবি করছেন, আপনি স্বাধীন? এর চাইতে শ্রেষ্ঠতম বোকামী আর কে কবে করেছে কোথায়? এমন সুবোধ কাস্টমার তারা এত সহজে পাবে! যাইহোক, বলছিলাম রাজনীতিকরা হলো সেই তৃতীয় পক্ষের ইজারাদার, আরো সহজ ভাষায় বলতে গেলে বিশ্ব ব্যবসায়ীদের দালাল। আর ব্যবসায়ীরা হলো রাজনীতিকদের পৃষ্ঠপোষক। কি ফায়দা এই দ্বিপক্ষীয় মৈত্রী বন্ধনে? ফায়দা হলো, লাখ লাখ দেশপ্রেমিক বোকা জনতাকে ঠকিয়ে লাভের ভাগটা তারা ভাগ করে নেবেন। এখানে মানুষের মুখোমুখি থাকার কাজটি করবেন রাজনীতিকরা, আর আড়ালে থেকে শক্তি জুগিয়ে যাবে ব্যবসায়ীরা।

রাজনীতিকরা ‘দেশ’ নামের একটি দোকান ভাড়া নিয়েছেন, এর সাথে যোগ করেছেন ‘প্রেম’ শব্দটি। দুইয়ে মিলিয়ে তারা প্রচার করেছেন ‘দেশপ্রেম’ নামের অদ্ভুত এক ‘প্রেমের গল্প’। অর্থাৎ তারা বলতে চাইছেন, একমাত্র আমার দোকানকে ভালবাসো। আমার দোকানেই তোমরা আজীবন লেনদেন করো। তারা এমনভাবে বোঝান যে, একমাত্র তার দোকানটিই বিশ্বজগতের শ্রেষ্ঠতম এবং একমাত্র নিরাপদ দোকান। ক্রেতা সাধারণ এই ঘোষণা শুনে চমকিত হয়, বিস্মিত হয়, আপ্লুত হয়। সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, দোকানদারের এমন আবেগাপ্লুত বক্তব্য শুনে কেউ কেউ গর্বিতও হয়। গৌরব বোধ করে সেই দোকানের একজন আজীবন কাস্টমার হিসেবে নিজেকে তালিকাবদ্ধ করতে পারায়! চিন্তার কি দৈন্যতা! এদিকে আন্ত:দেশীয় ব্যবসায়ীরা তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলেন, দোকানের প্রতি ক্রেতা সাধারণের এই অসাধারণ প্রেমগাঁথা দেখে। কিন্তু প্রেমে কি জোর খাটানো যায় কিংবা বাধ্য করানো যায়? এটা কি নৈতিক? তারা এই প্রশ্ন করার সুযোগই রাখে না। সাধারণত প্রেমে পড়লে মানুষ অন্ধ পরিস্থিতিতে থাকে। দেশপ্রেম নামক এই অন্ধত্বের সুযোগ নেয় বিশ্বব্যবসায়ী এবং তাদের সহযোগীরা।

ধরা যাক, কোনো এক বাজারে দুশো দোকান আছে। দুশো দোকানদারই পরস্পর একে অপরকে শত্রু জ্ঞান করে। শুধু তাই নয়, এই শত্রুতা এতোই তীব্র যে, এক দোকানের কাস্টমার অন্য দোকানের কাস্টমারকে দুচোখে দেখতে পারে না। এই শত্রুতা সৃষ্টি করে তৃতীয় পক্ষ, মুনাফালোভী মালিকপক্ষ। যারা পণ্যের ডিলারও। এভাবে একটি নির্দিষ্ট দোকানের গ্রাহক কেবলমাত্র সেই দোকানের পণ্য সম্পর্কেই জানতে পারছেন। আর বাকি ১৯৯ টি দোকানের পণ্যই তার অপরিচিত। এতে কার লাভ হয়? প্রথমত, লাভ হয় সেই পক্ষের, যারা দোকানে দোকানে পণ্য দিয়ে বেড়ায়, তারা বেশি দামে পণ্য বিক্রি করতে পারে। কারণ কাস্টমারদের বোঝার উপায় নেই। দ্বিতীয়ত, দোকানদার নিজেও ব্যাপক লাভের ভাগ পান। তিনি ক্রয়কৃত মূল্যের চেয়েও আরো অনেক বেশি দামে পণ্য বিক্রি করেন গ্রাহকের কাছে। অর্থাৎ সবমিলিয়ে পকেট কাটা যায় গ্রাহকের, আমাদের। অর্থাৎ, পৃথিবীর দেশপ্রেমিক মানুষগুলোকে কাস্টমার বানিয়ে খুব যত্ন করে পকেট কাটছে বিশ্বব্যবসায়ীরা। আমরা নির্দিষ্ট একটি দোকানের প্রেমে অর্থাৎ একটিমাত্র দেশের প্রেমে এতোই অন্ধ যে, এই দেশ ছাড়া অন্য কোনো দেশের প্রতি আমাদের নূন্যতম সম্পর্কও নেই, পৃথিবীর কোনো দেশকে আমরা ‘আমাদের’ বলতে পারি না, সেই রুচি আমাদের নেই। সবচেয়ে ভয়ংকর কথা, আমরা ধরেই নিয়েছি এর কোনো প্রয়োজনও নেই!

রাজনীতিকরা ‘দেশ’ নামের একটি দোকান ভাড়া নিয়েছেন, এর সাথে যোগ করেছেন ‘প্রেম’ শব্দটি। দুইয়ে মিলিয়ে তারা প্রচার করেছেন ‘দেশপ্রেম’ নামের অদ্ভুত এক ‘প্রেমের গল্প’। অর্থাৎ তারা বলতে চাইছেন, একমাত্র আমার দোকানকে ভালবাসো। আমার দোকানেই তোমরা আজীবন লেনদেন করো। তারা এমনভাবে বোঝান যে, একমাত্র তার দোকানটিই বিশ্বজগতের শ্রেষ্ঠতম এবং একমাত্র নিরাপদ দোকান। ক্রেতা সাধারণ এই ঘোষণা শুনে চমকিত হয়, বিস্মিত হয়, আপ্লুত হয়। সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, দোকানদারের এমন আবেগাপ্লুত বক্তব্য শুনে কেউ কেউ গর্বিতও হয়। গৌরব বোধ করে সেই দোকানের একজন আজীবন কাস্টমার হিসেবে নিজেকে তালিকাবদ্ধ করতে পারায়! চিন্তার কি দৈন্যতা!

দেশপ্রেম মানব সভ্যতার হুমকি, এতে কোনো সন্দেহ নেই। মূলত দেশপ্রেমিক দাবি করা প্রত্যেকটি মানুষই হয় চরম বোকা, না হয় বিরাট প্রতারক। চিন্তার ব্যাপার হলো, দেশপ্রেমের এই উন্মাদনার মাত্রাকে কমিয়ে আনা আসলে কতটুকু সম্ভব? মানুষ জন্মসূত্রে দেশপ্রেমের যে ‘কুশিক্ষা’ পায়, তার মাতাপিতা, শিক্ষক, স্কুলের বই, ও অন্যান্য মাধ্যমে যে জাতীয়তাবাদের প্রচারণা চলে নিরন্তর, তা থেকে মানুষের মুক্তি অর্জন করা আদৌ সম্ভব কি না। তারউপর লোভী বিশ্বব্যবসায়ীরা সেই উন্মাদনার আগুনে ঘি ঢেলে দিয়ে জাতীয়তাবাদকে আরো উস্কে দেন। এতে দেশের বিরুদ্ধে দেশ, শিশুর বিরুদ্ধে শিশু, কিশোরের বিরুদ্ধে কিশোর, কিশোরীর বিরুদ্ধে কিশোরীকে, সর্বোপরি মানুষের বিরুদ্ধে মানুষকে মুখোমুখি দাড় করিয়ে দেওয়া হয়। ইসরাইলি শিশুকে দেওয়া হয়েছে দেশপ্রেমের শিক্ষা, ফিলিস্তিনী শিশুকেও গেলানো হচ্ছে দেশপ্রেমের অমৃত। ফিলিস্তিনী শিশুকে বলা হচ্ছে, তোমার ভূখন্ড ফিরে পেতে যা কিছু করবে, সমস্তই দেশপ্রেমের অংশ। ইসরাইলি শিশুকে বোঝানো হচ্ছে তোমার অস্তিত্বের প্রয়োজনে ইসরাইলের স্বার্থে তুমি যেকোন কিছু করতে পারো, সেটা যদি হত্যাও হয়, তবুও তা অনৈতিক নয়। এতে কি সংঘাত অনিবার্য নয়?

কারা এ সংঘাতকে অনিবার্য করে তুলেছে? আর কারাইবা শিখাচ্ছে দেশপ্রেম? মুনাফালোভী বিশ্ব ব্যবসায়ীরাই শিখাচ্ছে এই দেশপ্রেম, সাথে সহযোগী ভূমিকা পালন করছে পৃথিবীর রাজনীতিবিদরা। মূলত বিশ্ব ব্যবসায়ীগণ হচ্ছেন আধুনিক জমিদার। তারাই নির্ধারণ করেন দেশের সীমানা, জনসংখ্যা, ধর্ম, কর্ম, যুদ্ধ ও অন্যান্য সব। রাজনীতিবিদরা তাদের কাছ থেকে দেশকে ভাড়া নেন। কাস্টমার হিসেবে পান অগণিত দেশপ্রেমিককে। এতে খুব সুবিধা হয় ব্যবসার। ইজারাদার রাজনীতিক তার লাভের কিছু অংশ জমিদার বিশ্ব ব্যবসায়ীকে দিয়ে দেন। তবে সব রাজনীতিকরাই দেশকে ইজারা নেন না, কেউ কেউ নেয়। যারা বুদ্ধিমান, তারা। এই দুষ্ট চক্র চলে আসছে বহুযুগ ধরে, চলবে। যদি না আমরা দেশপ্রেম বর্জন করে মানবপ্রেমকে বুকে ধারণ করি। ইসরাইলীদের তীব্র দেশপ্রেমই উৎসাহ দেয় তাদের রাজনীতিকদের, সীমান্তের বাইরে ফিলিস্তিনী একটি শিশুকে হত্যা করতে। দেশপ্রেম পরিষ্কার অর্থেই শুধুমাত্র সীমান্ত প্রেম, ভূখন্ড প্রেম, সার্বিক অর্থে মানবপ্রেম নয়। যারা বলেন, দেশকে ভালবেসেও বিশ্বকে ভালবাাসা যায়, তারা মিথ্যাবাদী। তা হলে পৃথিবীর দেশপ্রেমিকেরা শত্রুরাষ্ট্রের মানব সন্তান হত্যায় আনন্দিত হতো না, অথচ তারা আনন্দিত হয়। এটাই সত্য।

ক্যাটাগরি: প্রধান কলাম

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply