নির্বাচনের সময় দেশের বাইরে থাকতে চান সরকারের অন্তত দুই শতাধিক কর্মকর্তা। এ সময়টায় ছুটি চেয়ে ইতিমধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন এসব কর্মকর্তা। যদি তাদের ছুটির মঞ্জুর করেন, তাহলে সরকার নির্বাচন করবে কাদের দিয়ে?
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবশেষে হচ্ছে না। দেশের উদ্ভূত বাস্তবতাও তাই বলছে। নির্বাচনী বিশ্লেষকগণও দৃঢ়ভাবে তাই মনে করছেন। সমস্ত যুক্তিপ্রমাণও এটাই প্রতিষ্ঠিত করছে। নির্বাচনের আর মাত্র তিন মাস বাকি। অথচ এর মধ্যে কোনোকিছুই হয়নি। সুতরাং নির্দিষ্ট সময়ে একটা গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আর কোনো সম্ভাবনা নেই। শুধু তাই নয়, যে কোনো মুহূর্তে পরিস্থিতি ভিন্ন দিকেও মোড় নিতে পারে বলে মানুষ আশঙ্কা করছে।
এদিকে নির্বাচনের কবে তফসিল, কবে ভোট- এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে অনেক আগেই। ইদানিং সেটা আরো জোরালো হয়েছে। যদিও লেখক চিন্তাশীলগণ, বিশেষ করে গণমাধ্যম কর্মীগণ এসব আগে থেকেই অনেকটা জানেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, তফসিল এখনো ঠিক হয়নি। এতে জনমনে প্রশ্ন আরো বেড়েছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যে ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে। আর বাকি ২০ ভাগ কাজ তফসিল ঘোষণার পরে করা হবে। কিন্তু কবে নাগাদ তফসিল ঘোষণা করা হবে, এর সুনিদির্ষ্ট তারিখের কথা বলতে পারেননি।
নির্বাচন সচিবের এহেন আচরণে নির্বাচন নিয়ে জনমনে সন্দেহ আরো বেড়েছে। এছাড়াও আগামী নির্বাচনের সময় দেশের বাইরে থাকতে চান সরকারের অন্তত দুই শতাধিক কর্মকর্তা। এ সময়টায় ছুটি চেয়ে ইতিমধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন এসব কর্মকর্তা। যদি তাদের ছুটির মঞ্জুর করেন, তাহলে সরকার নির্বাচন করবে কাদের দিয়ে? এছাড়া নির্বাচন করার লক্ষ্যে এখনো পর্যন্ত ‘নির্বাচনকালীন সরকার’ গঠিত হয়নি।
যদিও রাজনৈতিক দলগুলো এরই মধ্যে শুরু করেছে নির্বাচনী দৌড়ঝাঁপ। এক্ষেত্রে একঢিলে দুই পাখি মারছেন সংসদ সদস্যরা। নিজের নির্বাচনী এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি চালাচ্ছেন গণসংযোগ ও প্রচারণা। এদিকে সম্ভাবনা না থাকা সত্ত্বেও বিরোধী দলগুলো খুব একটা হাত-পা গুটিয়ে বসে নেই। তাদেরও এলাকায় আসা-যাওয়া আগের তুলনায় বেড়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে এরই মধ্যে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো ‘নির্বাচনী জোট’ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। কাজেই বসে থাকার সময় নেই কারোর। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে যথারীতি গণসংযোগকেও সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। কিন্তু ২০ দলীয় জোট, নাগরিক ঐক্য, গণফোরাম, বামঐক্য, সম্প্রতি গঠিত যুক্তফ্রন্ট প্রভৃতি দলগুলো আর্দশগত ও ভিতরগত কোন্দল ও মামলা-হুলিয়ার কারণে আশানুরূপভাবে এলাকায় গণসংযোগ করে প্রার্থী বাছাই করতে পারছে না। সরকারও চাচ্ছে, বিরোধী দলগুলো যেন এভাবেই সময় অতিবাহিত করে। যাতে কোনোমতে একটি নির্বাচন সম্পন করতে পারে।
ক্যাটাগরি: প্রধান খবর
[sharethis-inline-buttons]