শেখ মহিউদ্দিন (জীবন) মাস্টারের দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা : ১৫ এপ্রিল, ২০১৬
তার জনপ্রিয় ইসলামি গজলের প্রথম কয়েকটি চরণ– এক. “আসবে আবার সোনালীর খেলাফত/ এই বাংলার জ্বিহাদের জনপথ/ মুক্তির একই পথ/ ইসলামি বিপ্লব/ শান্তির একই পথ/ খতমে নবুওয়ত/”; দুই. “নবীজির কথা ভুলো না ভুলো না/ দুনিয়ার মায়া শুধু ছলনা ছলনা/”
এক সময়ের আলোচিত ব্যক্তিত্ব, ব্যতিক্রমী ধারার কবি ও ইসলামি গজলশিল্পী শেখ মহিউদ্দিন ওরফে জীবন মাস্টার। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বিভিন্ন ইসলামি অনুষ্ঠানে ও ওয়াজ-মাহফিলে ছিল তার নিয়মিত যাতায়াত। রমজান মাসে এবং ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোতে মসজিদের মাইকে শোনা যেত যার সুমধুর কণ্ঠস্বর- “আসবে আবার সোনালীর খেলাফত/এই বাংলার জ্বিহাদের জনপথ/ মুক্তির একই পথ/ ইসলামি বিপ্লব/ শান্তির একই পথ/ খতমে নবুওয়ত/; নবীজির কথা ভুলো না ভুলো না/ দুনিয়ার মায়া শুধু ছলনা ছলনা/”- এমন বহু গজল।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের শিমরাইলকান্দি গ্রামের শেখ বাড়ি গোষ্ঠীর শেখ লাল মিয়া মাস্টারের ছেলে শেখ মহিউদ্দিন ওরফে জীবন মাস্টার দীর্ঘ তিন বছর ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় বিছানায় পড়ে আছেন। তার বয়স সম্ভবত আশির উর্ধ্বে, পরিবার ছাড়া দেখার কেউ নেই। এক সময় যারা তার গজলে মুগ্ধ হতেন, অনুপ্রাণিত হতেন, উৎসাহ উদ্দীপনা দিতেন, তারাও হয়তো আজ তার সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। তার পরিবারে যোগাযোগ করে তার লিখিত পুরনো কোনো কবিতা ও গজলের কপি বা রেকর্ড চাইলে সেগুলো হারিয়ে গেছে বলে জানান।
এর কারণ সম্পর্কে তারা বলেন, কখনো প্রয়োজন হতে পারে বলে তারা ধারণা করেননি। মহিউদ্দিন (জীবন) মাস্টার পেশাগত জীবনে বিভিন্ন প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ‘চণ্ডারখিল প্রাথমিক বিদ্যালয়’- উলচাপাড়া; বিজেশ্বর এবং মুকুন্দপুর, মৈন্দ-বাড়িউড়া এবং মেড্ডা সি.ও.র অফিসের পাশের একটি স্কুলেও শিক্ষকতা করেছেন।
গ্রামেও অসংখ্য ছেলে-মেয়ে তার বাড়িতে গিয়ে প্রাইভেট পড়েছে। শিক্ষকতার বাইরে একজন ব্যতিক্রমী ধারার কবি ও গজলশিল্পী হিসেবে স্বীকৃতি পাবার একটা আকাঙ্ক্ষা সম্ভবত তার মনে কাজ করত। সেই প্রতিভাও তার মধ্যে ছিল এবং তিনি এর প্রমাণও রেখেছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত এমন কোনো স্বীকৃতি তার মেলেনি। এর আশাও ছেড়ে দিয়েছেন অনেক আগেই। এখন তিনি বাকরুদ্ধ, অর্ধমৃত। তবে স্মৃতি তার এখনও কাজ করছে। পরিচিত কেউ গেলে চিনতে পারেন। আমরা (দেশ দর্শন পরিবার) তার সুস্থতা ও সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি।
(উল্লখ্য, এ প্রতিবেদনটি ১৫ এপ্রিল ২০১৬ এর। দেশ দর্শনের এ প্রতিবেদনের কয়েক মাস পরই তিনি ইন্তেকাল করেন। কিন্তু দেশ দর্শনের প্রিন্ট তখন বন্ধ থাকায় সে নিউজ আমরা করতে পারিনি। এমনকি আজও তাকে নিয়ে আমরা দ্বিতীয় কোনো নিউজ করতে পারিনি। তবে আশা করছি, শীঘ্রই দেশ দর্শন টিম তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে এবং তাকে নিয়ে আরেকটি প্রতিবেদন করবে। ইন্তেকালের সময় তিনি তার গুণধর স্ত্রী এবং দুই মেয়ে রেখে যান।) -বিভাগীয় সম্পাদক
ক্যাটাগরি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া, শীর্ষ তিন
[sharethis-inline-buttons]