রবিবার সকাল ১০:৩৯, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং

শিমরাইলকান্দি ‘কুমার ঘাট’ এখন ডাস্টবিন, তিতাসের পাড় ময়লার স্তুপ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পূর্বপাশে তিতাসের পাড় ঘেষে অবস্থিত শিমরাইলকান্দির প্রধান দুটি ‘ঘাটলা’র একটি হচ্ছে মসজিদ ঘাট, অন্যটি কুমার ঘাট। যুগ যুগ ধরে এ দুটো ঘাট ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মানুষদের নদীপথে যোগাযোগ, বিভিন্ন মালপত্র আনা-নেওয়া, কৃষিকাজ ও অন্যান্য জরুরি কাজে ব্যবহার হয়ে আসছে। কিন্তু গত প্রায় দু’বছর ধরে কুমার ঘাটটি ব্যবহৃত হচ্ছে ডাস্টবিন হিসাবে। আশেপাশে কোনো ডাস্টবিন না থাকায় সবাই এই ঘাটেই ময়লা আবর্জনা ফেলছে অবাধে। আর সেসব সরাসরি গিয়ে পড়ছে নদীতে। ফলে নদীও দূষিত হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে, প্রতিনিয়ত।

শিমরাইলকান্দির মূল রাস্তার মাত্র ত্রিশ গজ দূরে এ ঘাটটিতে পৌরসভার গাড়ি যাওয়ার প্রশস্ত রাস্তা থাকলেও পৌরসভার নির্ধারিত গাড়ি সেখান থেকে কখনো ময়লা আবর্জনা সরায় না। বছরদুয়েক আগে মূল রাস্তার সাথে পৌরসভা কর্তৃক নির্মিত একটা ডাস্টবিন ছিল। কিন্তু বাসাবাড়িতে দুর্গন্ধ ছড়ানোয় এটি তুলে দেয়া হয়। কিন্তু পৌরকর্তৃপক্ষ বিকল্প কোনো ডাস্টবিন করেনি। ফলে দলে দলে এখন ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে কুমার ঘাটে। এ ময়লা আবর্জনা আবার পৌরসভা নিয়মিত পরিষ্কার করারও কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। অথচ এর জন্য পৌরভার বেতনধারী প্রচুর লোক আছে, অনেকগুলো গাড়ি আছে এবং গ্রামবাসী পৌরসভাকে আগেরচেয়ে চারগুণ-ছয়গুণ বেশি ট্যাক্স দিচ্ছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের অনেকটা ঐতিহ্য এখনো ধরে রেখেছে শহরের পূর্বপাশে তিতাসের পাড় ঘেষে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী ও মনোমুগ্ধকর এ শিমরাইলকান্দি গ্রামটি। এ গ্রামে তিাসের পাড়ে মানুষের গোসল, নদীপথে যাতায়াত, মালপত্র আনা-নেওয়া, কৃষিকাজ এবং পানি ও নদীর সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য কাজের জন্য যে কয়টি ‘ঘাটলা অবস্থিত, এর প্রত্যেকটিরই আলাদা আলাদা নাম আছে। যেমন রাজঘাট, কুমার ঘাট, মসজিদ ঘাট, কবিরাজ ঘাট শ্মশান ঘাট ইত্যাদি।

এখন এসব ঘাটলার অনেকগুলোই সরকারি যত্ন ও উদ্যোগের অভাবে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অথচ নদীপাড়ের সৌন্দর্য বর্ধন, শহর পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি কাজে প্রায় প্রতিবছরই প্রচুর টাকা খরচ করে সরকার, পৌরসভার মাধ্যমে। কিন্তু এসব টাকা এখন এলাকার মোড়ল এবং রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের পেটে চলে যায়। ফলে নদী, নদীর পাড় এবং নদীর সাথে সংযোগকৃত খাল ও এর আশেপাশের প্রচুর সরকারি খাসজমি সরকারের বেদখল হচ্ছে। এসব উদ্ধারেরও কোনো নামগন্ধ নেই।

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের সাথে তিতাস-পূর্বাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগে শিমরাইলকান্দির এ ঘাটগুলো বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছিল। মনিপুর, ইসলামপুর, দত্তখলা, চম্পকনগরসহ পুরো বিজয়নগরের মানুষদের প্রচুর সমস্যা হচ্ছে শিমরাইলকান্দির এ ঘাটগুলোর সংস্কার এবং সংরক্ষণের অভাবে।

ক্যাটাগরি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া,  শীর্ষ তিন

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply