সমাজে এমন কোনো ব্যবস্থা থাকা উচিত নয়, যার কারণে ব্যক্তি তার শক্তি-সামর্থ্য কাজে লাগাতে পারে না। আবার এমন ব্যবস্থা থাকাও ঠিক হবে না, যে ব্যবস্থায় কোনো শ্রেণি বা সম্প্রদায়ের আর্থিক ও সামাজিক মর্যাদা সংকুচিত হয়ে পড়ে।
তৃতীয়ত, এমন ব্যবস্থাও রাষ্ট্রের জন্য ভয়ঙ্কর, যে ব্যবস্থায় বিশেষ কোনো শ্রেণি রাষ্ট্রের সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে বিশাল অর্থবিত্তের মালিক হয়ে যায়। উপরোক্ত সকল ব্যবস্থাই সমাজকে অস্থিতিশীল করে তুলে। নিপীড়িত জনগোষ্ঠী রাষ্ট্রশক্তিকে প্রতিদ্বন্দী ভাবতে শুরু করে। এই বৈষম্য থেকে বাঁচার জন্য তারা যে প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে তা আবার আরেক শ্রেণির স্বার্থকে সংকুচিত করে ফেলে।
তাই সাম্য ও মৈত্রীর সমাজ গড়ার জন্য রাষ্ট্রকে সার্বজনীন কল্যাণকর সমাজব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা প্রদান এবং সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকার জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা করা জনকল্যাণমুখী সরকারের নৈতিক দায়িত্ব।
এমন ব্যবস্থা থাকা উচিত, যেখানে কেউ অবৈধ উপায়ে বিত্ত বৈভবের অধিকারী হওয়ার কল্পনাও করতে না পারে। সঠিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ব্যক্তিকে যেমন উপার্জনক্ষম করে গড়ে তুলতে পারে, তেমনি সম্পদ উপার্জনের পাশাপাশি মানবতার বিকাশও ঘটাতে পারে। যে ব্যবস্থাপনায় মুষ্টিমেয় কতিপয় পুঁজিপতিদের হাতে রাষ্ট্রের সমস্ত সম্পদ ও সুযোগ সুবিধা কুক্ষিগত হয়, সেই ব্যবস্থাপনা শতভাগ ত্রুটিপূর্ণ।
অর্থ ও সম্পদের সুষম বণ্টন ও উৎপাদন নীতিমালা আদর্শ রাষ্ট্রের পূর্বশর্ত। এজন্যই প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নিজস্ব অর্থনৈতিক মতবাদ থাকে। সেই মতবাদে উৎসাহিত হয়েই মানুষ তাদের নির্বাচিত করে থাকে।
মনির আবু মাহাথির: শিক্ষক, কলামিস্ট
Some text
ক্যাটাগরি: সমকালীন ভাবনা
[sharethis-inline-buttons]