শুক্রবার বিকাল ৫:০৪, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং

মধ্যবিত্তের শৃঙ্খল ভেঙ্গে লেখালেখি হোক দরিদ্রবান্ধব

৫৮৯ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

আমাদের সমৃদ্ধ-সাহিত্য যেমন মধ্যবিত্তের জীবন কাহিনীতে আবদ্ধ, অনলাইনও তেমনিভাবে মধ্যবিত্তকেন্দ্রিক। কারণটা একই মধ্যবিত্তরাই লিখছে বাংলা সাহিত্য, মধ্যবিত্তরাই প্রধানত লিখছে অনলাইনের শাখা প্রশাখায়। উভয় ক্ষেত্রেই লেখকেরা তাদের নিজেদের জানাশোনা পরিচিতি জীবনটা নিয়েই লিখছে। যাদের অন্ন বস্ত্র বাসস্থানের নিশ্চয়তা আছে এবং জীবিকা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় শ্রম দানের পর যাদের হাতে অবসর সময় আছে তারাইতো মূলত শিল্প সাহিত্য সৃজন করেছে।

কৃষিক্ষেত্রে কাজ করা দিনমজুর, রিকশাচালক, নির্মাণশ্রমিক, শিল্প কারখানার শ্রমিক, বাসের কন্ডাক্টর, হেলপার এদের অবসর সময় নেই। কারো কারো যাদের একটু অবসর আছে কিন্তু তাদের সেই পরিমাণ শিক্ষা নেই, যা দ্বারা তারা তাদের সামাজিক বা শ্রেণীগত সমস্যার কথাগুলো লিখবে। আয়েশি মধ্যবিত্তরা ফেসবুকে নারীবাদী, পরিবেশবাদী, নাস্তিক, দেশপ্রেমিক, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তি বা বিপক্ষ শক্তি এরকম অসংখ্য পরিচয়ে বা দলে-উপদলে বিভক্ত হয়ে লেখালেখি করে।

আমাদের আদর্শবান লেখকেরা এখনো শ্রেণীচরিত্র দ্বারা অভ্যস্ত হওয়ায় শ্রেণীর বাইরে গিয়ে তারা লিখতে পারছে না। শ্রেণীর প্রাচীর ভাঙতে না পারলে তাদেরকে প্রগতিশীল বলা যায় কিনা সেটা একটা প্রশ্ন। অনলাইন লেখকদের সকল সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে লেখালেখি দরিদ্রবান্ধব হোক।

অনেকের প্রচুর ফ্যান ফলোয়ার, ফলে তারা প্রভাবশালী লেখক। এই লেখকেরা যদি অনলাইনে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনের দৈনন্দিন সমস্যার কথাগুলো বড় করে তুলে ধরতো, তাহলে এসবের প্রতিকার পাবার একটা সম্ভাবনা হয়তো তৈরী হতো। গরীব, নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনের কথাগুলো যদি মধ্যবিত্তরা লিখতো তাহলে গরীব জনগোষ্ঠী মনে সাহস পেত এই ভেবে যে তারা গরীব হলেও রাষ্ট্রে তারা একা নয়, তাদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের হয়ে কথা বলা মতো লোক আছে। ফলে গরীবের ভাষা ও জীবন আয়ত্ত করে লেখকেরা সৃষ্টি করতে পারতো সাহিত্য। আর বাস্তবে যেটা ঘটতো তা হলো, একটা কল্পিত ভাবের জগতে বিচরণকারী মধ্যবিত্ত লেখক, মাটির কাছে এসে বাস্তব জীবনের স্বাদ গ্রহণের সুযোগ পেত। ফলে জীবনের সাথে যোগাযোগ ঘটতো, আর ঘটতো দরিদ্রদের সাথে মধ্যবিত্তের জীবনের সংযোগ।

আমাদের আদর্শবান লেখকেরা এখনো শ্রেণীচরিত্র দ্বারা অভ্যস্ত হওয়ায় শ্রেণীর বাইরে গিয়ে তারা লিখতে পারছে না। শ্রেণীর প্রাচীর ভাঙতে না পারলে তাদেরকে প্রগতিশীল বলা যায় কিনা সেটা একটা প্রশ্ন। অনলাইন লেখকদের সকল সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে লেখালেখি দরিদ্রবান্ধব হোক। দরিদ্রদের জীবনের সংকটগুলো তুলে ধরে রাষ্ট্রের দৃষ্টি সেই সংকটের দিকে আকর্ষিত করে সংকটমোচনের ব্যবস্থা করা হোক, সেটাই প্রত্যাশা।

Some text

ক্যাটাগরি: মতামত

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি