দিল্লীতে রক্ত ঝড়িয়ে মোদী অমিত শাহ যে খেলা খেলতে চেয়েছিলেন, তাঁর অর্ধেকটা গুড়েবালি হয়ে গেল বাংলাদেশ আর পাকিস্তান এর জনগনের সংযম আচরনে এবং ভারতের মানুষের একতাবদ্ধ হয়ে দাঙ্গা রুখে দেওয়ার কারনে।
গুজরাটের দাঙ্গার পর যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছিল সেই সময় এই দুই দেশে তার কোনটাই এবার ঘটেনি বরং দুই দেশের সাধারণ জনগন ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে একতাবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ করেছে মানবতার জায়গায় দাঁড়িয়ে। মোদী অমিত এর চিন্তা এবং খেলা একরকম, তাই এরা ভুলে গিয়েছিল পৃথিবীটা এখন কতটা এগিয়েছে। আজকের যুগে কান চিলে নিয়েছে বললেই সব মানুষ চিলের পিছে ছোটে না আর ৪৭ এর দেশ ভাগ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত এই অঞ্চলের মানুষ ধর্মান্ধতার এতো খারাপ নজির দেখেছে যে এখন তারা অনেকটাই সচেতন।
গুজরাটের খেলা যখন মোদী অমিত খেলেছিল তখন যে সময়টা ছিল আজকের সময়টা যে সেই সময়ে আটকে নেই এটাই ভুলে গিয়েছিল তাঁরা। তাঁরা এমন একটা সময় আবার ধর্মান্ধতার নোংরা খেলা খেলতে গেল, যখন পাকিস্তান নিজের ধমান্ধতার খেসারত দিচ্ছে, বাংলাদেশ নিজেকে সেক্যুলার রাষ্ট্র ঘোষনা করেছে এবং বিশ্বদরবারে এগিয়ে যাচ্ছে গৌরবের সাথে আর সারা পৃথিবী ধমান্ধতার অন্ধকার থেকে বেরোতে চাইছে।
১৯ শ শতকের ধর্মান্ধতার শতাব্দীতে ধর্মের নামে জাতীয়তা বোধের পথে হেঁটে মানুষ যতটা একে অন্যের থেকে দূরে সরে গিয়েছে আর তার ফলাফল যে ভয়ঙ্কর পরিনতি ডেকে এনেছে পৃথিবীতে তাঁর থেকে মানুষ কিভাবে পরিত্রাণ পাবে সেটাই ভাবাচ্ছে পৃথিবীর মানবতাবাদী মানুষদের, ভাবাচ্ছে এই উপমহাদেশকেও আর সেই সময় মোদী অমিত এর মতো মাথামোটারা এখন পরে আছে ১৯ শ শতকের অন্ধকার কিছু সময়ের লেজ ধরে আর সেটা বেশি স্পষ্ট হয়েছে আজকের ভারতের অর্থনীতির দুরবস্থা।
পুরোনো চাল হয়তো ভাতে বাড়ে কিন্তু পুরোনো খেলা নয় তাই হয়তো দাঙ্গায় উস্কানিরদাতা বিজেপি নেতা কাপিল মিশ্র্যাকে খোদ রাজ্যসভায় ধোলাই খেতে হলো এপের বিধায়কদের কাছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা দিলেন প্রয়োজনে আবার স্বাধীনতার ডাক দেবেন, খোদ ভারতের মানুষ ঘৃণা উগরে দিচ্ছে বিজিপিকে। হিন্দু তাঁর ঘরে আগলে রাখছে মুসলিম কে, শিখ তাঁর ধর্মালয় খুলে দিয়েছে, দালিত লাঠি হাতে পাহাড়ায় বসেছে মুসলিমদের ঘিরে, ভারতের মানুষ আজ রাজপথে।
আজ স্লোগান উঠেছে ভারতে ধর্ম নয় কর্ম চাই, জাত নয় ভাত চাই। মোদী অমিত অবশ্য এখন পর্যন্ত উপেক্ষা করেই চলছেন কিন্তু কতক্ষন? ধর্ম বেঁচে খাওয়ার যুগ শেষ হতে চলেছে। মানবতা আর ন্যায়বিচারহীন ধর্মবোধ আজকের যুগ কে দেওয়া যাবে কি পুরোটা? না কারন আজকের মানুষ জানে ধর্মের মূল কথাই হচ্ছে বিশ্বজনীন মানবতার আর ন্যায়বিচার তাই এদুটোকে বাদ দিলে যা থাকে তা যে প্রকৃতপক্ষে কোন ধর্ম নয় মানুষ তা জানে। ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এনে যেটুকু মেকাপ দেওয়ার চেষ্টা হলো তাও ব্যর্থ উল্টো হাসি আর বিরক্তির খোরাকে পরিনত হলো। তাই মোদী অমিতরা পরবর্তী কোন জোয়ারে নাউ ভাসানো চেষ্টা করবেন সেটাই ভাবার বিষয়, সেই অবাস্তব খেলাই খেলবেন না নিজেদের ভুলের দায় নিয়ে শুধরাবেন। যদিও কথায় আছে, কয়লা ধুলেও ময়লা সাফ হয়না।
তাই এদের কাছে ভালো কিছু আশা করে যে আদও কোন লাভ হবেনা তা ভারতবাসী ভালই বুঝেছে। তাই হয়তো যে ঢাকঢোল পিটিয়ে আবার ক্ষমতায় এলো বিজিপি সরকার। ঠিক তেমনি করেই হারের পর্ব শুরু হয়েছে।
মুসলিম হীন ভারত খোদ ভারতবাসী মানবে না কারন মোদী অমিত আরএসএসের চোখে পট্টি বেঁধে রাখলেও ভারতের মানুষ জানে এই ভারতের স্বাধীনতায ১০০ ভাগের ৭০ ভাগ মুসলমানের রক্তে কেনা। ব্রিটিশ এর চালে পা দিয়ে যে ভুল ৪৭ এ হয়েছে তা আজকের প্রজন্মের কাছে স্পষ্ট তাই ভারত শেষ হয়েছে আমি মানিনা বরং অন্ধকার ফেরে আলো আশার অপেক্ষায়। রক্তে রঞ্জিত বিভেদ হয়তো আরো কিছু রক্ত নেবে কিন্তু আলোটা আসবেই অন্ধকার কে দুরে সরিয়ে।
Some text
ক্যাটাগরি: মতামত
[sharethis-inline-buttons]
সুন্দর লিখুনী