শনিবার রাত ১১:০৯, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

স্বপ্নে মাছ মনে করে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে কোপান হিফজুর

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বপ্নে দেখেছিলেন ঘরে অনেক মাছ ঢুকেছে। আর বটি দা দিয়ে ওই মাছ টুকরো টুকরো করেন হিফজুর। কিন্তু স্বপ্নের সেই মাছ ছিল তার স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তান।

রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের গোয়াইনঘাট আমলগ্রহণকারী আদালতের বিচারক আলমগীর হোসেনের কাছে এমন জবানবন্দি দিয়েছেন হিফজুর রহমান।

হিফজুর গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা।
গত ১৬ জুন তার ঘর থেকে স্ত্রী আলেমা বেগম, ১০ বছরের ছেলে মিজানুর রহমান ও ৩ বছরের মেয়ে আনিশার লাশ উদ্ধার করা হয়। তাদের শরীরে দায়ের কোপ ছিল। গলায়ও ছিল দায়ের আঘাত। ওইদিন সকালে আহতাবস্থায় হিফজুরকেও উদ্ধার করে পুলিশ। তার শরীরেও ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল।

আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হিফজুর বলেন, ১৫ জুন মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঘুমানোর পর স্বপ্নে দেখেন ঘরের ভেতর অনেক মাছ ঢুকেছে। পরে তিনি স্বপ্নের মধ্যে সেই মাছ কেটে টুকরো টুকরো করেন।

পরে হিতাহিত জ্ঞান ফেরার পর তিনি বুঝতে পারেন তিনি স্বপ্ন দেখে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে দা দিয়ে কেটে খুন করে ফেলেছেন। তার নিজের শরীরেও দা দিয়ে আঘাত করেন হিফজুর।
আদালতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার দায় স্বীকারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোয়াইনঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দিলীপ কান্তি নাথ। জবানবন্দি রেকর্ডের পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুন সকালে গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাড়ি থেকে হিফজুরের স্ত্রী আলিমা বেগম (৩০), ছেলে মিজান (১০) ও তিন বছরের মেয়ে তানিশার লাশ উদ্ধার করা হয়।

১৫ জুন রাতে কোনো এক সময় ঘুমন্ত অবস্থায় ঘরের বটি দিয়ে তাদের কুপিয়ে খুন করা হয় বলে পুলিশের ধারণা। সে সময় হিফজুরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হলেও শুরু থেকে তাকে সন্দেহ করে পুলিশ। এই ঘটনায় আলিমার বাবা আইয়ুব আলী অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেন। তবে হত্যাকাণ্ডের আলামত ও হিফজুরের উল্টাপাল্টা বক্তব্যের জন্য তাকে নজরদারিতে রাখে পুলিশ।

গত ১৯ জুন সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হিফজুরকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন ২০ জুন তাকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক দিলীপ কান্তি নাথ।

এই আবেদনের শুনানি শেষে গোয়াইনঘাটের আমলি আদালতের বিচারক অঞ্জন কান্তি দাস পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। শুক্রবার রিমান্ড শেষের এক দিন আগে হিফজুর এই স্বীকারোক্তি দেন।

ক্যাটাগরি: অপরাধ-দুর্নীতি,  শীর্ষ তিন

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply