বৃহস্পতিবার রাত ১:৩০, ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

শিমরাইলকান্দির একমাত্র রাস্তাটিই ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সবচেয়ে খারাপ রাস্তা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

এ গ্রামের অনেকেই স্বয়ং পৌরসভায় চাকরি করে। সরকারি দলের অনেক সুবিধাভোগী নেতাও আছে এ গ্রামে। আছে বিএনপিরও গুরুত্বপূর্ণ ও হাই ভোল্টেজ কয়েকজন নেতা। আছে ডিসি-এসপি অফিসে কর্মরত অনেকেই। কিন্তু এদের সহযোগিতায় এই শিমরাইলকান্দিকে যুগের পর যুগ কেবল শোষণ করেই আসছে শহরের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।

সাবেক পাওয়ার হাউজ, বিএডিসি, খাদ্য গুদাম, কৃষি ভবন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, গ্যাসক্ষেত্র, তিতাস নদীর বিশাল অংশ, শহরের সবচেয়ে বড় গোরস্থান ও শ্মশানসহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং প্রাকৃতিক সম্পদ একমামাত্র শিমরাইলকান্দি গ্রামে অবস্থিত; যা শহরের অন্য কোনো গ্রামে নেই। শিমরাইলকান্দির পূর্বভাগ তিতাস নদীতে ঘেরা, এরও পূবে বিশাল ধানী জমি ও বিল। পশ্চিম দিকটি রেললাইন দিয়ে ঘেরা, দুটো গুরুত্বপূর্ণ রেলসেতু। দক্ষিণ দিকটি ঘিরে রেখেছে বিখ্যাত কুরুলিয়া খাল। আর পশ্চিম-উত্তর কোণ দিয়ে মূল শহরের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ। অথচ এই একমাত্র রাস্তাটিই দীর্ঘ আঠার বছর ধরে এলইজিডি, পৌরসভা কিংবা সংসদ সদস্যের নজরে আসছে না। যদিও এ গ্রাম থেকে মাত্র এক কিলোমিটারের মধ্যেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা, সদর থানা, প্রধান ডাকঘর, কয়েকটি বড় বড় মাদরাসা ও স্কুল, সরকারি কলেজ, মহিলা কলেজ ইত্যাদি। দুই কিলো মিটারের মধ্যে ডিসি অফিস, এসপি অফিসসহ সমস্ত প্রশাসনিক ভবন।

এ গ্রামের অনেকেই পৌরসভায় চাকরি করে। সরকারি দলের অনেক সুবিধাভোগী নেতাও আছে এ গ্রামে। আছে বিএনপিরও গুরুত্বপূর্ণ ও হাই ভোল্টেজ কয়েকজন নেতা। আছে ডিসি-এসপি অফিসে কর্মরত অনেকেই। কিন্তু এদের সহযোগিতায় এই শিমরাইলকান্দিকে যুগের পর যুগ কেবল শোষণ করেই আসছে শহরের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।

শহরের কালীবাড়ি মোড়ের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট, রাস্তা ভাঙ্গা, বড় বড় গর্ত, মোড়টি আবার দু-পাশের দোকানদারদের দখলে

যে কারণে দীর্ঘ আঠারো বছর ধরে মাত্র তিন কিলোমিটারের একটি রাস্তা সংস্কার হয় না। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ এ পথে যাতায়াত করে। তিতাস পূর্বাঞ্চলের মনিপুর, ইসলামপুর, দত্তখলায়ও এ পথেই যাতায়াত। প্রতিদিন কয়েকশত রোগীর আসা-যাওয়া এ পথেই। যদিও সুস্থ মানুষ এ পথে দুবার আসা-যাওয়া করলে কোমর ভেঙ্গে যায়। অন্যদিকে শিমরাইলকান্দি হাজী বাড়ির রাস্তাটি স্বৈরশাসক এরশাদের আমলের, যেটি করা হয়েছিল প্রায় ৩৫ বছর আগে। গ্রামবাসীর একটাই প্রশ্ন, কেন ভোটের সময়ই কেবল তাদের কাছে সবাই যায়, অন্য সময় কোনো খবর থাকে না!

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভাধীন শিমরাইলকান্দির একমাত্র এ সড়কটি বর্তমানে চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপেযোগী। শহরের প্রাণকেন্দ্র কালীবাড়ির মোড় থেকে সংযুক্ত শিমরাইলকান্দি সড়কটি দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে সংস্কার না করায় ভেঙ্গেচুরে খানাখন্দ ও ছোট-বড় গর্ত থাকায় এই সড়কটি প্রায় চলচলের অনুপযোগী হয়ে আছে গত পাঁচ বছর ধরেই।

কালীবাড়ি মোড়ের একটু পূর্বেই একপাশে সুন্দরবন কুরিয়ারের ছোট-বড় গাড়ি, অন্যপাশে পাওয়ার হাউজ রোড জামে মসজিদের রাস্তা ও ময়লার স্তূপ

এরইমধ্যে চলছে প্রতিদিন কয়েক হাজার যাত্রীর আসা-যাওয়া। স্থানীয় পথচারী, অটোবাইক ও রিক্সা চালকদের সাথে কথা বলে জানা যায় , ৪/৫ বছরে এই সড়কের মেরামত না করায় এই সড়কে চলাচল করা এখন খুবই কষ্টকর। কিন্তু এ ছাড়া শিমরাইলকান্দিতে আসা-যাওয়া করার বিকল্প কোনো পথ নেই।

জানা যায়, সড়কটি কয়েক বছর ধরেই এমন সঙ্কটাপন্ন থাকায় দুর্ঘটনাও ঘটছে। প্রায় রিক্সা ও অটোবাইক উল্টে যাত্রীসাধারন মারাত্বকভাবে আহত হচ্ছেন। নির্মাণকাজে কংক্রিট ম্যাকাডম আর সঠিকভাবে রোলার ব্যবহার না করা ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় সড়কের কার্পেটিং উঠে পুরো সড়কজুড়েই কয়েক হাজার গর্ত ও খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে।

পুরনো পাওয়ার হাউজ ও মালেক মাস্টার স্কুল সংলগ্ন এবং বিএনপি নেতা মনির খানের বাসার সামনের চিত্র

স্থানীয় অনেক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত পাঁচ বছর ধরেই কাজ হবে হবে বলা হচ্ছে। বছর দুয়েক আগে টেন্ডারও হয়েছে। কিন্তু কাজের এখনো কোনো খবর নেই। স্থানীয় সংসদ সদস্য র.আ.ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরীর কাছে গত ছয়মাস আগে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিতাস-পূর্বাঞ্চলের জন্য নদীর উপর দিয়ে যে ব্রিজটি হবে, সেটির হয়ে গেলেই রাস্তার কাজও করা হবে।

ক্যাটাগরি: প্রধান খবর,  ব্রাহ্মণবাড়িয়া,  শীর্ষ তিন

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply