উত্তর দিয়েই প্রশ্নসহ কাগজটা উনি গার্বেজে ফেলে দিচ্ছেন কি দারুণ ভাবে। যেখানে প্রয়োজন ছিলো অতি সযত্নে ফাইলিং করার। অসম্ভব কিউট আপনি মাহি ভাই … আপনার সরলতা আমাকে মুগ্ধ করে সবসময় … বাংলাদেশের ইতিহাসে আপনিই হইতো সবচেয়ে অস্থির এবং বোকা পলিটিশিয়ান!
মাহি ভাই একজন দারুণ বক্তা। অসম্ভব সুন্দর করে কথা বলেন। ড্যাম স্মার্ট। উনার সিগারেট খাওয়ার স্টাইলটাও দুর্দান্ত। আপাদমস্তক ভদ্রলোক মাহি ভাই …
মাহি ভাইয়ের চরিত্রের সবচেয়ে আকর্ষনীয় দিক হচ্ছে, উনার অস্থিরতা আর হুট করে সামারাইজ করে ফেলার প্রবনতা। ২০০১ এর নির্বাচনে মিডিয়া দিয়ে উনার দারুণ আবির্ভাব হয়েছিলো, কিন্তু অতি অস্থিরতার জন্য ২/৩ বছরের মাঝেই উনি একদম বিচ্ছিন্ন হয়ে যান ক্ষমতা থেকে। আমরা এপ্রিসিয়েট করেছিলাম এই পদক্ষেপ।
এর পরে হুট করে মাহি ভাই গঠন করলেন ‘Blue Band Call’ – দারুণ ইমোশনাল মাহি বি চৌধুরী একদম মিশে গেছিলেন এই গ্রুপে। প্রয়োজন হলে বিকল্প ধারা ত্যাগ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। এক ঝাক তরুন তরুনী উনার এই আবেগে দারুণ উদ্বেলিত হয়েছিলো সেদিন …
কিন্তু সেই যে মাহি ভাইয়ের অস্থিরতা ! কিছুটা টিআরপির পরেই একদম উদাসীন হয়ে গেলেন গ্রুপ নিয়ে। অন্যকিছু নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে গেলেন। এর মাঝে কাদের মোল্লার ফাসির দাবীতে শাহবাগে ঐতিহাসিক প্রতিবাদ শুরু হলো। মাহী ভাইয়ের মনে হলো আবার ব্ল-ব্যান্ডকলকে দাড় করানোর। কিন্তু একদিনের মাঝেই ফেসবুক গ্রুপটা হ্যাক হয়ে গেলো। মাহি ভাই অস্থির হয়ে গেলেন …
২০১৩ এর শাহবাগ আন্দোলনের শুরুর দিকে আমি দেশের বাইরে ছিলাম। মাহী ভাই আমার বিদেশী নাম্বারে ফোন দিলেন। এক মুহুর্তেই সামারাইজ করার অসম্ভব ক্ষমতার বলে উনি ভেবে বসলেন গ্রুপটা আমিই হ্যাক করেছি। ফোন করে সেই আক্ষেপও করেছিলেন।
অসম্ভব কিউট মাহি বি চৌধুরী ২০১৮ এর নির্বাচনে বিএনপির এলায়েন্সে যুক্ত হওয়ার দারুণ চ্যালেঞ্জিং পদক্ষেপ নিলেন। সকালে বিএনপিকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যের মিটিং করেই আবার সন্ধ্যায় বিএনপি-আওয়ামেলিগের পেশাভিত্তিক রাজনৈতিক কর্মী নিয়ে বিস্ফোরক ফেসবুক ভিডিও রিলিজ করলেন। সকালের সাথে বিকালের আকাশ পাতাল পার্থক্যই মাহি ভাইকে একদম আলাদা করে পরিচিতি এনে দিয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে …
আবার ক্ষমতাসীনদের সাথে পার্টনারশিপ করতে আগ্রহ দেখালেন মাহী ভাই। সত্যিই সেলুকাস ! এতো অস্থির চিত্তের ভাই আমার ! ফেসবুকে লাইভে প্রতিনিয়তই ফিরছেন তরুনদের শক্তিকে একত্রিত করতে। উনার যুদ্ধ প্রধান দুই দলের সাথে। উনার যুদ্ধ মনোপলির বিরুদ্ধে। কিন্তু এই যুদ্ধের রেজাল্ট উনি আশা করেন এদেরই কারো সাথে এলায়েন্স করে। সত্যিই অসম্ভব কিউট আপনি ভাই।
সেদিন উনার ফেসবুক লাইভ দেখছিলাম। অসংখ্য প্রশ্ন আসছিলো। একঝাক ছেলেমেয়ে সেই প্রশ্নগুলোকে কাগজে সর্টিং করে মাহি ভাইকে দিচ্ছিলো আর উনি দারুণ গতিতে উত্তর দিয়ে চললেন। আমি জোরে জোরে হাততালি দিচ্ছিলাম, বউ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, এই রাতদুপুরে কার বাদ্যে বাড়ী দিচ্ছো তুমি ?
আমি তালি দিচ্ছিলাম উত্তর শুনে না। উনি যে দারুণ কথা বলেন এইটা খুব কাছে থেকেই দেখেছি। অতি ইমোশনে মাতাল হয়ে যাওয়ার অভ্যাসটা একদম বদলে যায়নি মাহি ভাইয়ের।
উত্তর দিয়েই প্রশ্নসহ কাগজটা উনি গার্বেজে ফেলে দিচ্ছেন কি দারুণ ভাবে। যেখানে প্রয়োজন ছিলো অতি সযত্নে ফাইলিং করার। অসম্ভব কিউট আপনি মাহি ভাই … আপনার সরলতা আমাকে মুগ্ধ করে সবসময় … বাংলাদেশের ইতিহাসে আপনিই হইতো সবচেয়ে অস্থির এবং বোকা পলিটিশিয়ান!
ক্যাটাগরি: পাঠকের মত, মিনি কলাম
[sharethis-inline-buttons]