শুক্রবার বিকাল ৪:৪৪, ১৩ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসে দুর্নীতি-নৈরাজ্য সীমাহীন

খায়রুল আকরাম খান

নকলনবিশদের যোগসাজশে রেকর্ডকিপাররা বালাম-ইনডেক্স-স্লিপ থেকে অনেক মূল্যবান দলীল-দস্তাবেজ গায়েব করে ফেলার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গত সোমবার (০৩ সেপ্টেম্বর) প্রধান অতিথির বক্তব্যের এক পর্যায়ে বলেন, “আমার মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ পাই- কেউ ৫ বছর, কেউ এক যুগেরও বেশি সময় যাওয়ার পরও জমির রেজিস্ট্রেশন পান না। এর কারণ জানতে চাইলে আমাকে বলা হলো, বালাম নেই, ইনডেক্স নেই, স্লিপ নেই, এজন্যই দেরি হয়। মন্ত্রী হয়ে তখন আমাকে এ নিয়ে খোঁজ নিতে হলো। মন্ত্রী হওয়ার এক-দুই মাসের মধ্যে এসব সমস্যা দূর করতে আমরা টেন্ডার দিয়ে সমস্যার সমাধান করি। এসব কাজ করতে গিয়ে একটি বিষয় উপলব্ধি করলাম যে নকলনবিশরা কাজ করবেন আজকে, আর পারিশ্রমিক পাবেন দীর্ঘসময় পরে। তা বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে হতে পারে না।”

আইনমন্ত্রী তার বক্তব্যে জমি রেজিস্ট্রেশন সমস্যার অর্ন্তনিহিত কারণ বিশ্লেষণ করেননি। তার কথায় বোঝা যায়, শুধু মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাই দোষী, নকলনবিশরা একরকম নির্দোষ। অথচ তারা নিয়ম-বহির্ভূতভাবে টাকা খেয়ে কাজ দ্রুত করে এবং করতে পারে। তাহলে সমস্যাটা আসলে কোথায়? তাছাড়া নকলনবিশদের যোগসাজশে রেকর্ডকিপাররা বালাম-ইনডেক্স-স্লিপ থেকে অনেক মূল্যবান দলীল-দস্তাবেজ গায়েব করে ফেলার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে।

বর্তমানে প্রচলিত সরকারি নিয়ম অনুযায়ী স্থানভেদে নাল জমি বিক্রির ফিস ভিটিবাড়ি/দোকানভিটির ফিসের চেয়ে বেশী হয়। অথচ হওয়ার কথা ছিল এর উল্টো। এমতাবস্থায় বাধ্য হয়ে বিক্রেতা দলিল লেখককে মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে খতিয়ান থেকে ঘষা-মাজা করে ভূমির ধরন পরিবর্তন করে জমি বিক্রি করে থাকে। আবার কখনো ভূমি অফিসের ক্লার্ককে ঘুষ দিয়ে একাধিক অংশীদারের নাম বাদ দিয়ে শুধু নিজের নামে জমা-খারিজ করে নেয় এবং নিজে মালিক সেজে তা  তাড়াতাড়ি বিক্রি করে দেয় ।

দেশে জমি রেজিস্ট্রি সংক্রান্ত সমস্যা চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। মন্ত্রণালয়ের প্রায় প্রতিটা কর্মকর্তা-কর্মচারী, নকলনবিশ এবং এর সঙ্গে যুক্ত অন্যরা এক্ষেত্রে প্রচুর ধান্ধাবাজি করে। এর লাগাম টেনে ধরতে গেলে এক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের বিকল্প নেই বলে বিশ্লেষকগণ মনে করছেন।

 

ক্যাটাগরি: সারাদেশ

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply