শনিবার রাত ১১:১০, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাসপাতালে স্ত্রীর লাশ রেখে পালিয়েছে স্বামী

আদিত্ব্য কামাল

ব্রাহ্মণবাড়িয়া আশুগঞ্জ উপজেলার রুবিনা আক্তার (৩৫) নামের এক গৃহবধূ পোকা মারার ট্যাবলেট খেয়ে মৃত্যুর পর হাসপাতালে লাশ রেখে পালিয়েছে তার স্বামী। বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রুবিনা উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের খোলাপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলামের মেয়ে। নিহতের আত্মীয়-স্বজনরা দাবি করেছেন, রুবিনাকে তার স্বামী মুর্শিদ মিয়া হত্যা করেছেন।

হাসপাতাল ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ বছর আগে উপজেলার আড়াইসিধা ইউনিয়নের আড়াইসিধা গ্রামের ব্যাপারি বাড়ির মৃত রহিম মিয়ার ছেলে মুর্শিদ মিয়ার সাথে একই উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের খোলাপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলামের মেয়ে রুবিনার বিয়ে হয়। দুই লাখ টাকার কাবিননামায় পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ে হয়েছিল। তাদের একটি ১২ বছরের ও একটি ১০ বছরের ছেলে আছে। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে শোবার ঘর নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া হতো। কারন রুবিনা ২ ছেলে নিয়ে শোবার ঘরে থাকাটা খুব অসুবিধা ছিল। এসব বিষয় নিয়ে প্রায়ই তার বড়ভাইয়ের বউ সাহেরা ও আরেক ভাইয়ের বউ সিমার সাথে কথা-কাটাকাটি হতো। ধারণা করা হচ্ছে এরই জেরে অভিমান করে রুবিনা কেরি পোকা মারার ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে রুবিনা যখন মারা যান তখন তার স্বামী মুর্শিদ মিয়াসহ পরিবারের অন্যরা হাসপাতালে রুবিনার লাশ রেখে পালিয়ে যান।

রুবিনাকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করেন তার মা হেলেনা। তিনি বলেন, ছেলেমেয়েকে প্রাইভেট পড়া নিয়ে আজকে সকালে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। তার নাতি মাইনুদ্দিন দুপুরে খোলাপাড়া নানুবাড়িতে গিয়ে রুবিনাকে মারধর করার কথা জানান। তারপর তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে যাওয়ার পর দেখে তার মেয়ে রুবিনা মারা গেছে। পরে রুবিনা মারা যাওয়ার পর হাসপাতালে রেখে মুর্শিদসহ পরিবারের সবাই পালিয়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, ১০ বছর পর মুর্শিদ দেশে আসে। এসেই ছোটখাটো বিষয় নিয়ে রুবিনাকে অত্যাচার করতো। মৃত্যুর পর এখন পর্যন্ত কেউ তাদের খোঁজ নেয়নি।। মুর্শিদের ব্যাপারে এত কিছু জেনেও মেয়েকে সংসার করিয়েছেন। তিনি মেয়ে হত্যার বিচার দাবি করেন।

আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে বলেন, হাসপাতাল সূত্রে জানতে পারি এক গৃহবধূর লাশ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে গেছে তার স্বামী। পরে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়। ঘটনার তদন্তে কাজ চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।

ক্যাটাগরি: অপরাধ-দুর্নীতি,  ব্রাহ্মণবাড়িয়া,  শীর্ষ তিন

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply