দশ বছরের এ শিশুর পায়ে সামান্য ব্যথার জন্য পরপর দুটো অপারেশন, এরপর দ্রুত অবনতি- এটা ডাক্তার শ্যামল চন্দন সাহা কোনোভাবেই স্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন না।
পায়ে সামান্য ব্যথা নিয়ে গত ২৭ ডিসেম্বর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে (অর্থোপেডিক বিভাগ, নীচতলা, সিট নং-১৪) চিকিৎসাধীন ছিল মেহেদী হাসান (১০) নামে এক শিশু। ডাঃ ফখরুল ইসলাম আশেক (সিনিয়র কনসাল্টেন্ট, অর্থোপেডিক) এর তত্ত্বাবধানে তার পায়ে পরপর দুটি অপারেশন করা হয়। কিন্তু এরপর থেকেই তার অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। পায়ে ইনফেকশন হয়ে যায়। এরপর ডাক্তার বারবার ঢাকা রেফার করলেও রোগীর পরিবারের আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় এতদিন যেতে চাচ্ছিল না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যেতে বাধ্য করা হল। এদিকে রেফারের কাগজপত্র দেখালেও ভর্তি করছে না ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পঙ্গু হাসপাতাল। জরুরি বিভাগে বারবার যোগাযোগ এবং অনুরোধ করেও দায়িত্বরত কারো মন গলাতে পারেননি রোগীর মা রীনা বেগম এবং পিতা শরীফুল ইসলাম।
রোগীর বড় বোন সুখী, মা রীনা বেগম এবং পিতা শরীফুল ইসলাম জানান, তারা বর্তমানে পঙ্গু হাসপাতালের বারান্দায় আছেন। বহির্বিভাগে যোগাযোগ করা হলে তারা রোগীকে বাড়ি নিয়ে যেতে বললেন। তারা বলছেন চব্বিশঘণ্টার জরুরি কোনো রোগী ছাড়া ভর্তি করেন না। আর এ রোগীকে তারা চিকিৎসাও করতে পারবেন না, অবস্থা খুব খারাপ। এরপর গতকাল ২৮ এবং আজ ২৯ জানুয়ারি সকালে বহির্বিভাগে টিকেট কেটে দেখানো হয়। গতকালও পঙ্গু হাসপাতালের কোনো ডাক্তার এ রোগীকে রাখেননি, আজও না। পঙ্গু হাসপাতালের শ্যামল চন্দন সাহা রোগীর পরিবারকে বলছেন, এ রোগীর কোনো চিকিৎসা করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আর রোগীর এ পরিণতির জন্য তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডাক্তারকেই দায়ি করছেন। কেননা, দশ বছরের এ শিশুর পায়ে সামান্য ব্যথার জন্য পরপর দুটো অপারেশন, এরপর দ্রুত অবনতি- এটা ডাক্তার শ্যামল চন্দন সাহা কোনোভাবেই স্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন না।
(এ সম্পর্কে আগের নিউজটি দেখুন – ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন শিশুরোগীর করুণ আর্তনাদ, পায়ে ইনফেকশন
এদিকে সরকারি স্বাস্থবিষয়ক যে কোনো সেবাদান ও অভিযোগ গ্রহণের হট লাইন ১৬২৬৩ এ যোগাযোগ করে বিস্তারিত অবস্থা জানালে অপর প্রান্ত থেকে রাসেল মজুমদার নামে একজন জানান, এখানে এ ধরনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট রোগীকে নির্দিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি বা অন্যকোনো হাসপাতালে ভর্তি করতে কোনো সহযোগিতা করা হয় না। কেবল অভিযোগ নেয়া হয় এবং পরামর্শ দেয়া হয়। সুতরাং এক্ষেত্রে তাদের কিছু করার নেই। বড়জোর তারা একটা অভিযোগ রেখে তা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে পারে।
ক্যাটাগরি: প্রধান খবর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
[sharethis-inline-buttons]